নাহিদ রানার গতিতে শুরু দিনের, তার কীর্তিতে অল্পে শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশও লিড নিয়ে খেলতে নামে দ্বিতীয় ইনিংস।
কিংসটনে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ক্যারিবীয়রা করে ১৪৬ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিনশেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান করেছে বাংলাদেশ। তাদের লিড ২১১ রানের।
আগের দিন বাংলাদেশের জন্য কেটেছিল পুরোপুরি হতাশায়। ব্যাটারদের ব্যর্থতার পর বোলাররাও উইকেট এনে দিতে পারেননি একটির বেশি। যদিও বোলিংয়ে তারা করছিলেন দারুণ।
তার প্রভাব দেখা যায় তৃতীয় দিনে, মেলে সাফল্যও। একের পর এক উইকেট নিতে থাকেন নাহিদ রানা-তাসকিন আহমেদরা। শুরুটা কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে ফিরিয়ে করেন নাহিদ। গতিময় সব বলে ব্র্যাথওয়েটকে বিপাকে ফেলছিলেন তিনি।
তার বাউন্সার সামলাতে গিয়ে ব্র্যাথওয়েটের ব্যাটে লেগে বল যায় গালিতে। জাকির ক্যাচ ধরলে ১১৭ বলে ৬০ রানের জুটি ভেঙে যায়। ১২৯ বল খেলে ৩৯ রান করেন ব্র্যাথওয়েট। তার বিদায়ের পর থেকেই শুরু হয় ধস।
কাভেম হজ উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন ১২ বলে ৩ রান করে। দুই উইকেট তুলে ক্যারিবীয়ানদের চাপে ফেলেন নাহিদ। ৯ বলে দুই রান করা অ্যালিক অ্যাথানেজকে বোল্ড করেন তাসকিন আহমেদ।
এরপর তাইজুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদও উইকেট এনে দেন। ৯ বলে ২ রান করা গ্রেভসকে বোল্ড করেন তাইজুল। ৯ বলে ৫ রান করে জশুয়া দা সিলভা এলবিডব্লিউ হন হাসানের ওভারে।
উইকেট হারানোর ভিড়ে একপ্রান্ত আগলে থাকছিলেন কেসি কার্টি। ১১৫ বলে এক চারে ৪০ রান করা এই ব্যাটারকে এলবিডব্লিউ করেন হাসান মাহমুদ। পরে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই নিজের চতুর্থ উইকেট পেয়ে যান নাহিদ রানা। ১০ বলে ৭ রান করে আলজারি জোসেফ তার বলে ক্যাচ দেন মিড অফে দাঁড়ানো অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে। এটি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের অষ্টম উইকেট।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই স্বাগতিকদের অবশ্য অলআউট করতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু বিরতি থেকে ফেরার পর লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ১৫ বলে ৬ রান করা শামার জোসেফকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ।
পরের ওভার করতে এসে হাতছানি দিয়ে ডাকা ফাইফারটা পেয়ে যান নাহিদ রানা। গতি, বাউন্স আর স্লোয়ারে দুর্দান্ত বল তিনি করেন ইনিংসজুড়ে। ক্যারিবীয়ানদের শেষ ব্যাটার হিসেবে কেমার রোচকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন তিনি।
ষষ্ঠ টেস্টে এসে প্রথমবার পাঁচ উইকেটের দেখা পেয়েছেন নাহিদ রানা। ১৮ ওভার বল করে ৬১ রান দেন তিনি। ১১ ওভারে ১৯ রান দিয়ে দুই উইকেট পান হাসান মাহমুদ। বাংলাদেশও প্রথম ইনিংসে ১৮ রানের লিড পায়।
এই রানকে বাড়াতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে বেছে নেয় আক্রমণের পথ। যদিও শুরুটা ভালো হয়নি। ৫ বলে শূন্য রানে আউট হওয়া মাহমুদুল হাসান জয় স্লিপে ক্যাচ দেন সিলসের বলে। এরপরই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করে বাংলাদেশ।
এতে করে আরও একটি উইকেট হারাতে হয় সফরকারীদের। ২৬ বলে ২৮ রান করে আলজারি জোসেফের বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শাহাদাৎ হোসেন দীপু। তাতেও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে আক্রমণের ধার কমেনি।
সাদমান ইসলামের সঙ্গে জুটিতে স্রেফ ২৯ বলে ৫০ রান তুলে ফেলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। চা বিরতি অবধিও থাকেন তারা। যদিও বিরতি থেকে ফেরার পর সাদমানকে হারাতে হয়। ৮২ বলে ৪৬ রান করে আউট হন এই বাঁহাতি ওপেনার।
মিরাজও নিজের হাফ সেঞ্চুরির আগেই সাজঘরে ফেরেন। ৩৯ বলে ৪২ রান করে শামার জোসেফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর ৩৪ বলে ২৫ রান করে গ্রেভসের বলে বোল্ড হন লিটন দাস। তবে বাংলাদেশের আশা শেষ হয়ে যায়নি এখনও।
জাকের আলি লড়ছেন তাইজুল ইসলামকে নিয়ে। ৪৯ বলে ২৯ রান করেছেন জাকের, ২২ বলে ৯ রান করেন তাইজুল। এখনও উইকেটে আসার বাকি মুমিনুল হকের।
বাংলাদেশ সময় :
এমএইচবি