ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বাঘ নিধনে জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৬
বাঘ নিধনে জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট

ঢাকা: ইন্টারপোলের প্রতিবেদন অনুসারে সুন্দরবনের বাঘ হত্যা ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রোববার (৩১ জুলাই) এ আদেশ দেন।

আগামী ০১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি, কোস্টগার্ডের ডিজি, খুলনার ডিসি, খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

‘বাঘ হত্যা ও চোরাচালানে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন শুক্রবার (২৯ জুলাই) একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী খান রোববার এ প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনার পর হাইকোর্ট এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান।

ওই প্রতিবেদনে বলা  হয়, ‘সুন্দরবনের বাঘ হত্যায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয়। এই চক্র সুন্দরবনে বাঘ হত্যায় অস্ত্র সরবরাহ, হত্যা শেষে বাঘের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও চামড়া চোরাচালানের কাজ করে। সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার সরকারদলীয় একজন সংসদ সদস্য, ইউনিয়ন পরিষদের তিনজন চেয়ারম্যান এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বেশ কয়েকজন নেতা জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে’।

‘গত জানুয়ারি মাসে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল বাংলাদেশ সরকারের কাছে সুন্দরবনের বাঘ হত্যা এবং ক্ষুদ্র অস্ত্রের সরবরাহ নিয়ে দু’টি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে’।
‘ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সুন্দরবন থেকে বাঘ হত্যা করে এর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভারতে পাচার করা হয়’। এ পাচারের সঙ্গে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরাও জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘প্রতিবেদন দু’টি তৈরি করতে ইন্টারপোল ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে ২০১৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে। মূলত বাংলাদেশ ও ভারতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন এবং স্থানীয় পর্যায়ের তথ্য থেকে তৈরি করা হয়েছে এ প্রতিবেদন। বাংলাদেশ ও ভারতের ইন্টারপোল সমন্বয়কদের কাছে প্রতিবেদন দু’টি জমা দেওয়া হয়’।

‘২০০৪ সালের বাঘ শুমারি অনুযায়ী, বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বাঘ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা কমে ১০৬টিতে দাঁড়িয়েছে’।

‘ইন্টারপোলের প্রতিবেদনে বাঘ হত্যা এবং ডাকাত দলগুলোকে অস্ত্র সরবরাহকারী ৩২ ব্যক্তির নাম এবং বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ তালিকায় সাতক্ষীরা-৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দারের নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী আজম টিটু, একই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মাসুদুল আলম, রমজাননগর ইউপির চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আকবর আলী গাজীর নাম রয়েছে’।

‘সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ থেকে বাঘ চোরাচালান করে ভারতে পাচারের সঙ্গে গিরেন বিশ্বাস, গোলজার ও নিখিল নামের তিনজন ভারতীয় চোরাচালানকারীকে চিহ্নিত করেছে ইন্টারপোল’।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।