ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শিবগঞ্জের বানাইল মহাশ্মশানের জায়গায় মার্কেট নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৬
শিবগঞ্জের বানাইল মহাশ্মশানের জায়গায় মার্কেট নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা: বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভার বানাইল মহাশ্মশানের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (৩১ জুলাই) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।


 
একইসঙ্গে মহাশ্মশানের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং শ্মশানের জায়গা সংরক্ষণ করার কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
 
চার সপ্তাহের মধ্যে ধর্ম সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বগুড়ার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, শিবগঞ্জের পৌরসভার মেয়র, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিবগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং  উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
 
২৬ জুন ‘শতবর্ষী শ্মশান দখলে আওয়ামী লীগ নেতা’ শীর্ষক প্রতিবেদন একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন যুক্ত একটি মানবাধিকার সংগঠন হাইকোর্টে রিট করে। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
 
তিনি বলেন, পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বগুড়ার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হকের বিরুদ্ধে শতবর্ষী শ্মশানের জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে শ্মশানের একাংশে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। সেখানে মার্কেট নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে।
 
বানাইল বারোয়ারি কেন্দ্রীয় শিবমন্দির ও শ্মশান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক দুলাল চন্দ্র সরকার জানান, ২৭ শতক জমিতে তাদের মহাশ্মশান। দীর্ঘদিন ধরে এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মৃতদেহ সত্কার করা হচ্ছে। শ্মশান-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র তাদের আছে। জেলা প্রশাসনেরও কাগজপত্র রয়েছে। ওই স্থানে থাকা একটি প্রাচীন বটগাছ ঝড়ে পড়ে গেলে সেটি আজিজুল নিয়ে যান।
 
শিবগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রাম নারায়ণ কানু জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মৃতদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে অথবা মাটিতে গর্ত করে সমাধি করার শাস্ত্রীয় বিধান রয়েছে। এখানে উভয় পন্থায় সত্কার করা হয়। এটি জমিদারপত্নী নগেন্দ্র বালার নামে সিএস ৮৭ দাগের সম্পত্তি। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ওই সম্পত্তি হিন্দু জনসাধারণের ব্যবহার্য হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে। সর্বশেষ মাঠ জরিপও তারই সাক্ষ্য বহন করছে।
 
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক বলেন, ‘ওইটা খাস জায়গা। ওসমান মোল্লার লিজ নেওয়া। আমি তার কাছে থেকে জায়গা কিনে নিয়েছি। এরপর সেখানে মাটি ফেলেছি। যারা আন্দোলন করছেন, তাদের বলেছি, কাগজপত্র নিয়ে বসতে। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে রাজি আছি’।
 
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া জায়গাটি দখল না করতে আওয়ামী লীগের সভাপতিকে অনুরোধ করেছি। এখন এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩১,২০১৬
ইএস/জেডএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।