ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মনোনয়ন জমা দিলেন মমতা, বহিরাগত বলে আক্রমণ শুভেন্দুর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
মনোনয়ন জমা দিলেন মমতা, বহিরাগত বলে আক্রমণ শুভেন্দুর ...

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ভোট যুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। রাজ্যের ২৯৪টি আসনে এবার আট দফায় নির্বাচন।

তবে গোটা ভারতের চোখ থাকবে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম আসনের দিকে। কারণ মমতা বন্দোপাধ্যায় কোনো কালেই কলকাতার বাইরে নির্বাচনে প্রার্থী হননি। তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবার অন্য জেলা থেকে প্রার্থী হলেন।

অপরদিকে একদা তারই শিষ্য সেখানকার ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী বিজেপির হয়ে মমতার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে এ লড়াই কার্যত দুই রাজনৈতিক দলের বাইরে দুই হেভিওয়েট ভিআইপির লড়াইতে পরিণত হয়েছে।

যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি নন্দীগ্রামবাসী। কেউ বলছেন, ‘এ লড়াই গুরু-শিষ্যের লড়াই। ’ কেউ বলছেন, ‘এ লড়াই ভূমিপুত্র আর বহিরাগতর লড়াই। ’ অনেকের মতে এ লড়াই ‘দলনেত্রী এবং দলত্যাগীর লড়াই’। ফলে নির্বাচনের নিরিখে সবার চোখ থাকবে এই কেন্দ্রের দিকে। আর তার আগে কার্যত একই এলাকায় বুধবার (১০ মার্চ) কর্মসূচিতে অংশ নিলেন মমতা-শুভেন্দু। সামনাসামনি না হলেও দুই প্রতিপক্ষই এদিন ছিল নন্দীগ্রামের মাটিতে।  

এদিন হলদিয়ায় মহকুমা শাসকের দফতরে মনোনয়ন পেশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে সকালে রেয়াপাড়ার শিব মন্দিরে পুজো দেন তৃণমূল নেত্রী। কারণ ১১ মার্চই শিবরাত্রি। নন্দীগ্রাম থেকে হেলিকপ্টারে করে মনোনয়ন জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে হলদিয়ায় যান তিনি। হেলিপ্যাডে নেমে রোড শো করে মমতা যান হলদিয়া মহকুমাশাসকের দপ্তরে। নন্দীগ্রাম আসনের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন তিনি।

অপরদিকে, এক সময়ের জমি আন্দোলনের মাটি, নন্দীগ্রামে আছেন শুভেন্দুও। বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে এক সময়ের তারই নেত্রীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুত ভূমিপুত্র। এদিন নন্দীগ্রামে নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধনে করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপর এক জনসভায় অংশ নিয়ে বলেন, ‘মাননীয়া (মমতা) এখানে আমার বিরেুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন। নন্দীগ্রামের দুটো অঞ্চলের নাম ঠিক করে বলে দেখান তিনি। রেয়াপাড়াকে, রিয়া পাড়া বলছেন। জমি আন্দোলন করেছিলেন সেই কৈখালি’র নামও অন্যের কাছ থেকে জানতে হচ্ছে। বাইরে এসে ভোট করছেন। ভাবছেন এলাকার মানুষ তাকে সমর্থন করবেন। দুশো পার্সেন্ট ভোটে হারাবো তাকে। তাই দড়ি ধরে মারো টান রানি হবে খান খান। ’

ভোট যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে ‘বহিরাগত’ তকমা তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই শব্দবাণ এখন তারই দিকে বুমেরাং হয়েছে। অবশ্য মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘আচ্ছা ওরা আমাকে বহিরাগত বলছে। বরিহাগত কি কখনও মুখ্যমন্ত্রী হন? আমি তো গোটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আমি কি করে বহিরাগত হলাম। ’ মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) বলেছিলে, ‘আমি এখানে এক বছরের জন্য বাড়ি ভাড়া করেছি। ভাববেন না ভোট মিটে গেলে আমি চলে যাবো। আমি প্রতি তিনমাস অন্তর আসবো। পরে একটা কুঁড়েঘর বানিয়ে থাকবো আপনাদের সঙ্গে। ’

অপরদিকে, বিজেপির হয়ে বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) থেকে এই নন্দীগ্রামে প্রচার শুরু করছেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। একে একে আসবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে বাম-কংগ্রেস-আব্বাসের সংযুক্ত মোর্চা নন্দীগ্রামে কে হবে প্রার্থী তা এখনো ঠিক করে উঠতে পারেনি।

তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা-শুভেন্দুর কাছে এ লড়াই এখন যে প্রেস্টিজ ফাইটে পরিণত হয়েছে, তা বুঝতে পারছে দুই দলই। তবে শেষ হাসি কে হাসবে তারজন্য অপেক্ষা করতে হবে ২ মে পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
ভিএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।