ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

সোনিয়ার হস্তক্ষেপে তৃণমূল-কংগ্রেস আসন রফা

রক্তিম দাশ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১১

কলকাতা: আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূল আসন সমঝোতা। ২২৯-৬৫ ফর্মুলায় হয়েছে এ রফা।



সোমবার দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা শাকিল আহমেদ।

নয়াদিল্লির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ভারতে ফেরার পর থেকেই পরিবর্তিত হতে থাকে আসন রফার চিত্রটি। এরপরই প্রণব মুখার্জি এবং শাকিল আহমেদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন সোনিয়া।

এ বৈঠকের পর সোনিয়া ফোন করেন তৃণমূল প্রধান মমতাকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

এ সময় সোনিয়ার অনুরোধে কিছু রদবদল করতে মমতা রাজি হন বলে সূত্র জানায়।

কংগ্রেসের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ক্যানিং পূর্ব আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেন মমতা।

একই সঙ্গে বর্ধমান জেলার জামুড়িয়া আসনটি বদল করে কংগ্রেসকে দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া আসনটি ছেড়ে দেন মমতা।

ক্যানিং পূর্বের প্রস্তাবিত তৃণমূল প্রার্থী ঈদ্রিশ আলী এখন লড়বেন মুশির্দাবাদের জলঙ্গি কেন্দ্র থেকে।

কলকাতার রাজনৈতিক মহলের মতে, এ আসন সমঝোতায় কংগ্রেসের তেমন লাভ না হলেও জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী।

ভারতের লোকসভায় বিভিন্ন প্রশ্নে এখন প্রতিদিনই যেভাবে বিরোধীদের কাছে হেনস্থা হচ্ছে কংগ্রেস, সেখানে যে কোনও মূল্যে ইউপিএ-২ সরকারকে টিকিয়ে রাখাই এখন সোনিয়ার প্রধান চিন্তা বলে বিশ্লেষকদের মত।

এদিকে, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে দলের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ।

গতকালই কলকাতার এন্টালি বিধানসভার প্রার্থী তারক বন্দোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি প্রার্থী হচ্ছেন না এই কেন্দ্রে। তাকে জোড়াসাঁকো বা শ্যামপুকুর কেন্দ্রে প্রার্থী করতে হবে। কারণ পরিবর্তনের ঝড়েও এই আসনটি তার পক্ষে নিরাপদ নয়।

আজ তাই বাধ্য হয়েই ওই আসনে স্বর্ণকমল সাহার নাম ঘোষণা করেন মমতা। এদিন তিনি সংবাদ সম্মেলন করে ভোটের ইস্তাহারও প্রকাশ করেন তিনি।

গতকাল ও আজ মমতার কালিঘাটের বাড়ির সামনে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় দলীয় কর্মীরা। তারা তমলুক, বারাসাত, মন্তেশ্বর ও বর্ধমান দক্ষিণের ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে, জোটের এই আসন সমঝোতায় রাজ্য কংগ্রেসের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী আজ জানিয়েছেন, তার জেলায় কোনও জোট হচ্ছে না। এখানে সব কটি আসনেই কংগ্রেস লড়বে।

তৃণমূলের জোট সঙ্গী বামদল এসইউসি মাত্র ২টি আসন পেয়ে সন্তুষ্ট নয়।

সোমবার এসইউসি রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসু বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ২টি জেতা বিধানসভা কেন্দ্র আছে। গতমাসে আমরা তৃণমূল নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়ের সঙ্গে তিনবার আলোচনায় বসি। প্রথমে ১৭টি আসন চাইলেও পরে আমরা ১২টি আসন দাবি করি। কিন্তু মমতা আমাদের কিছু না জানিয়েই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা আর জোটে নেই। এককভাবে লড়ব। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সব আসনেই প্রার্থী দেব।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।