চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মফিজুল হক ভূঁইয়া ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দীনের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ ও গণস্বাক্ষর করেছেন আইনজীবীরা।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় এই ঘটনা ঘটেছে।
আদালতে বিক্ষোভকারী আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে গত ২৬ নভেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার ৯ জন ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ৮ জন আসামিকে কারাগার থেকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়।
আইনজীবীদের অভিযোগ ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, একজন অতিরিক্ত পাবলিক প্রশিকিউটর হয়ে নেজাম উদ্দীন পুলিশের ওপর হামলা ও অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যার সঙ্গে জড়িত আসামিদের পক্ষে আদালতে ওকালতনামা দিয়েছেন। নেজাম উদ্দীন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়ার জুনিয়র। এ কারণে তারও পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ আইজীবীরা। বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ আইজীবীরা বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় মহানগর সরকারি কৌঁসুলি কার্যালয়ে সামনে বিক্ষোভ করে। তারা ওই সময় মহানগর পিপি ও অতিরিক্ত পিপি নেজাম উদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করেন। এক পর্যায়ে নেজাম উদ্দিন মহানগর পিপির কার্যালয়ে থাকাকালে তাকে সেখানে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে জ্যৈষ্ঠ আইনজীবীরা এসে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীদের থামান। শেষে নেজাম উদ্দিন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর পদ থেকে জৈষ্ঠ আইনজীবীদের সামনে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেন।
চট্টগ্রাম আদালত ভবনে মহানগর পিপির পদত্যাগের দাবিতে গণস্বাক্ষরতা কর্মসূচি পালন করা অ্যাডভোকেট নাসির আলী বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি কৌসুলি হয়ে আসামির জন্য ওকালত নামা দিয়েছেন মহানগর পিপির জুনিয়র। ওকালতনামা দেওয়া আইনজীবী একজন সরকারি কৌঁসুলি। একজন পদত্যাগ করল মহানগর পিপিকে পদত্যাগ করতে হবে অথবা তাকে বাদ দিতে হবে। আইনজীবীদের কাছ থেকে নেওয়া গণস্বাক্ষর মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
ওকালতনামার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মফিজুল হক ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমি কিছুর সঙ্গে জড়িত নয়। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমি জানি না, আমার এই আসামিদের জন্য ওকালতনামা নিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র।
ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যা ও পুলিশ ওপর হামলার মামলায় চট্টগ্রাম বারের কোনো আইনজীবীকে অংশ না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তারপরও দুই আসামির পক্ষে একজন আইনজীবী ওকালতনামা দেওয়ায় আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। পরে ওই ওকালতনামা প্রত্যাহার করে নেন আইনজীবী। একই সঙ্গে পদত্যাগ করে সরকারি কৌসুলির পদ থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি