ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শিশু সুরক্ষা নীতিমালা মানছে না ‌উদ্দীপন !

শাহেদ ইরশাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৬
শিশু সুরক্ষা নীতিমালা মানছে না ‌উদ্দীপন !

ঢাকা: শিশুদের নিয়ে কাজ করতে শিশু সুরক্ষা নীতিমালা মানছে না ‌উদ্দীপন নামের একটি এনজিও’র শাখাগুলো। দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত কার্যক্রম পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষের কাছে এমন তথ্য উপস্থাপন করেছেন ওই এনজিও’রই কয়েকজন কর্মকর্তা।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদেশি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এর অনুদানে টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং প্রকল্পের আওতায় সমাজের অসহায় শিশুদের মোবাইল ফোন সার্ভিসিং, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স, বেসিক কম্পিউটার  অ্যাপ্লিকেশন, টেইলারিং, প্যাকেজিং পোল্ট্রি অ্যান্প লাইভস্টক রিয়ারিং, নার্সারি, মোমবাতি তৈরি, ও স্কিন প্রিন্টিং’ এর কাজ শেখানো হচ্ছে।

চট্টগ্রামে উদ্দীপনের এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুইশ’ ছেলেমেয়ে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে রয়েছে।

এদের অনেকের বয়স ১৪ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। আবাসিকভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী এসব শিশুদের কার্যক্রম পরির্দশন করে এনজিওটির কয়েকজন কর্মী হতাশা প্রকাশ করেছেন।

বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রতিবেদন আকারে তুলে ধরেছেন। এতে বলা হয়েছে, এক বছর আগে চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হলেও মেয়ে শিশুদের জন্য কেন্দ্রটিতে কোনো মহিলা কর্মকর্তা নেই। এখানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মেয়ে শিক্ষার্থী আছেন। যাঁদের অনেকের বয়স ১৮ বছরের নীচে। আর জেন্ডারের আলোকে ১৮ বছরের ওপরের শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও একজন মহিলা স্টাফ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। মেয়ে শিক্ষার্থীগণ ওড়না ব্যবহার করেন না।

পিরোজপুর ও কুমিল্লায় সংস্থাটির একই ধরণের প্রকল্প রয়েছে। সেখানে পথশিশুদরে পুর্নবাসন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ দুটি প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করেও বলা হয়েছে, প্রকল্পের কর্মকর্তাদের মধ্যে শিশু অধিকার সর্ম্পকে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাব রয়েছে। শাখাগুলো শিশু অধিকার সনদের আলোকে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। এ কারণে শিশুরা শিশু অধিকারের আলোকে আচরণ করতে পারে না। শিশু অধিকার বিষয়ে শিশুরা অবগত নয়।
 
এদিকে শিশু সুরক্ষা নীতিমালায় বলা হয়েছে,  যে সকল শিশু সংস্থার সংস্পর্শে আসে তাদের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে তারা ইচ্ছাকৃত বা অসাবধানতাবশত সংঘটিত শিশু নির্যাতন, যৌন শোষণ, দৈহিক আঘাত বা অন্য কোনো ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।

যারা শিশুদের সঙ্গে কাজ করার উপযুক্ত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে তাদেরকেই এসব প্রকল্পে নিয়োগ দিতে হবে। সংস্থার কর্মীরা শিশু নির্যাতন ও যৌন শোষণের ঘটনাতে সঠিক ভাবে সাড়া দেবেন। সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিটি ব্যক্তি শিশুদের প্রতি ভালো আচরণ করবেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিশুদের জন্য ক্ষতিকর কোনো কাজে লিপ্ত হবেন না।

যেসব শিশু সংস্থার সংস্পর্শে আসে তাদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী প্রত্যেকে অবশ্যই সক্রিয় থাকেবেন। জরুরি মানবিক সহায়তা কার্যক্রমসহ সব ধরণের কর্মসূচিতে অবশ্যই শিশুদের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরূপণ করতে এবং ঝুঁকি হ্রাস-দূর কতে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে।

পরিদর্শন কর্মকর্তাগণ উদ্দীপনের সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের দশটি শাখা পরিদর্শন করেছেন। এসব শাখার মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলাস্থ শাখায় কর্মরত এক নারী কর্মীর ঘরের (বাসস্থান) ভিতর দিয়ে পুরুষ কর্মীরা ডাইনিং-এ আসা-যাওয়া করে। বিষয়টি অবহিত করলেও ম্যানেজার অজুহাত দেখাতে থাকেন। বিষয়টি সুনামগঞ্জের আরএম অবহিত আছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উদ্দীপনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যেভাবে ভালো মনে করি সেভাবেই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আরও কিছু জানার থাকলে আমাদের অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।