নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রামে মোছা. আঁখি খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্বজনদের দাবি মৃত্যুর আগে তাকে ঘরে খাটের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল।
খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই শোবার ঘর থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে স্বামী ইসমাইল হোসেন (২৫) পলাতক রয়েছেন।
সোমবার (০২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার রয়না ভরট উত্তরপাড়া গ্রামে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি, প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আঁখি খাতুন উপজেলার রয়না ভরট উত্তরপাড়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের মেয়ে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, প্রায় বছর দুয়েক আগে পারিবারিকভাবে নাটোর সদর উপজেলার হাজরাপাড়া এলাকার মো. তাইজুল মিস্ত্রির ছেলে ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে আঁখির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী তাকে নির্যাতন শুরু করেন।
নির্যাতন থেকে বাঁচতে আঁখি স্বামীকে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এর মধ্যেও বিভিন্ন সময় আঁখিকে নির্যাতন করা হতো।
সোমবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে পারিবারিক কলহের জেরে ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে আঁখির কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে বিকেলে আঁখিকে খাটের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে ঘরে তালা দিয়ে চলে যান ইসমাইল। তবে সেসময় আঁখির বাবা-মা কেউ বাড়িতে ছিলেন না।
পরে সন্ধ্যার দিকে আঁখির বাবা-মা বাড়িতে এসে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। এসময় ডাকাডাকি করলে বাড়িতে কোনো সাড়া না পেয়ে তালা ভেঙে দরজা খুলেই মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে ঘটনার সত্যতা পেয়ে থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আঁখির মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে রাতেই মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূ আঁখির স্বামী তাকে মারধরসহ শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বামী পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি।
এ ব্যাপারে গৃহবধূ আঁখির বাবা আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে নিজ বাড়িতে এনে রেখেছিলাম। এখানেও আমার মেয়েকে মাঝে মধ্যে নির্যাতন করা হতো। শেষ পর্যন্ত খাটের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে আমার বাড়িতেই মেয়েকে মেরে ফেলল। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। অবিলম্বে ঘাতক জামাইকে গ্রেপ্তার দেখতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৪
আরএ