ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঠাকুরগাঁওয়ে ছয় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

শরিফুল ইসলাম, ডিস্টিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
ঠাকুরগাঁওয়ে ছয় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

ঠাকুরগাঁও: বাংলা ভাষার মর্যাদা আদায়ে ভাষা আন্দোলনের স্বীকৃতি আজ বিশ্বব্যাপী। পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিল, যা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও স্বীকৃত।

কিন্তু ভাষা আন্দোলনের দীর্ঘ ৭২ বছর পরও ঠাকুরগাঁওয়ের ৬৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার। জেলায় ৩৭৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২২১টিতে এবং ৯৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪২৫টিতে শহীদ মিনার নেই।

একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেতে হয় দূর-দূরান্তে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে কোনো কর্মসূচিও পালিত হয় না।

ঠাকুরগাঁও শহরের ইসলাম নগর উচ্চ বিদ্যালয়, মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুল, মথুরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কোকিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ঘুরে দেখা যায়, এগুলোতে নেই শহীদ মিনার।

যে সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই তাদের অন্যান্য বছরগুলোর মতো ফুল নিয়ে যেতে হবে নিকটবর্তী অন্য প্রতিষ্ঠানে। তাই নিজ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, ভাষা শহীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সকল সাংস্কৃতিক কর্মসূচি যেন শহীদ মিনার কেন্দ্রীক হয়, সে ব্যাপারে নজর দিতে হবে।

শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলে, শহীদ মিনার না থাকায় অনেকে ২১ ফেব্রুয়ারি স্কুলে আসে না। বাইরের শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে সেদিকেই ঘুরে বেড়ায়। আর স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব আমাদের কাছে কমে যাচ্ছে। তাই আমাদের স্কুলে একটি শহীদ মিনার জরুরি।

ইসলাম নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলে, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, কলেজের শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিতে হয়। আমরা সরকারের কাছে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানাই।

ইসলাম নগর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় দুই কিলোমিটার দূরে সরকারি কলেজে গিয়ে ফুল দিতে হয়। নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলে আরও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালন করতে পারতাম।

মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর বলেন, জীবন দিয়ে যারা মাতৃভাষার অধিকার রক্ষা করেছেন, সেই সব শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারগুলো যথাযোগ্য মর্যাদা রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। সেই সাথে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন জরুরি।

ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আকতার বলেন, জেলায় যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নেই তাদের চিঠির মাধ্যমে নিজ উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। একই সাথে একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের স্মরণে দিবসটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করতে বলা হয়েছে। বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানগুলোকে শহীদ মিনার কেন্দ্রিক করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে আগামী প্রজন্মের কাছে ভাষা শহীদদের গুরুত্ব তুলে ধরা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।