ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

স্টাফ ছাড়া মসজিদে তারাবি নামাজ নয়

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২০
স্টাফ ছাড়া মসজিদে তারাবি নামাজ নয়

ঢাকা: মুসলিম ধর্মাবলম্বিদের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মাস ‘রমজান’ দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। আর নভেল করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মসজিদে তারাবি নামাজ আদায় করা যাবে কিনা, তা নিয়ে ছিল প্রশ্ন। 

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বলছে, স্টাফ ছাড়া অর্থাৎ খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেমরা ছাড়া কেউ মসজিদে তারাবি নামাজ আদায় করতে পারবেন না। ঘরেই নামাজ আদায় করতে হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব নূরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, স্টাফ ছাড়া মসজিদে কাউকে অ্যালাউ করা হয়নি। তবে কেউ যদি ঢুকে পড়েন নামাজের জন্য, তাকে তো আর বের করে দেওয়া যাবে না।

করোনায় সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে সরকারের যে নির্দেশনা আছে-ঘরেই সব নামাজ আদায় করার, সেটাই মানতে হবে। এটা কাউকে মসজিদে যাওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য নয়, বরং নিরাপদে থাকার জন্যই নির্দেশনাটি দেওয়া হয়েছে।

গত ৬ এপ্রিল এ নির্দেশনাটি জারি ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে পাঁচটি দফা দেওয়া হয়। এগুলো হলো- করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে মসজিদের ক্ষেত্রে খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেম ব্যতীত অন্য সব মুসল্লিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিজ নিজ বাসস্থানে নামাজ আদায় এবং জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।

মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে সম্মানিত খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেম মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে অনধিক পাঁচজন ও জুমার নামাজে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে বাইরের মুসল্লি মসজিদের ভেতরে  জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

অন্য ধর্মাবলম্বিদেরও ধর্মীয় উপসনালয়ের পরিবর্তে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করতে হবে।

সারাদেশের কোথাও ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলিগি তালিম বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাই ব্যক্তিগতভাবে তিলাওয়াত, জিকির ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির জন্য প্রার্থনা করবেন।

অন্য ধর্মাবলম্বিরাও এসময় কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে সমবেত হতে পারবেন না।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব জানান, আপাতত এই নির্দেশনাটিই বলবৎ আছে। তারাবি নামাজের জন্য একই নির্দেশনা মানতে হবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন আসছে না।

সূত্র জানায়, রমজান নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে দু’এক দিনের মধ্যে। এক্ষেত্রে সে বৈঠকে তারাবি নামাজ নিয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে সেটা কী সিদ্ধান্ত হতে পারে, তার ধারণা পাওয়া যায়নি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নূরুল ইসলাম জানান, আগামী শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক আছে। সেখানে হয়তো বিস্তারিত আলোচনা হবে।

২৫ এপ্রিল দিনগত রাত থেকে সেহরির সময়সূচি দিয়ে ইতোমধ্যে অনেক ক্যালেন্ডার প্রণীত হয়েছে। তবে কবে থেকে রমজান মাস পালন করা হবে, তা চাঁদ দেখা যাওয়া সাপেক্ষে নির্ধারণ করবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি।

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়তে পারবো না বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ঈদের জামাত নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আলাদা করে এখনো নেওয়া হয়নি। এখনো সময় আছে, সেটা পরবর্তীসময়ে হয়তো ভাবা হবে।

মসজিদের পরিবর্তে তারাবি নামাজ ঘরে পড়ার জন্য এমপিদের অনেকে নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে ঢাকা-৯ আসনে সংসদ সদস্য সারেব হোসেন চোধুরী তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি মসজিদ থেকে ক্যাবল অপারেটরের মাধ্যমে সরাসরি তারাবি নামাজ সম্প্রচারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। এতে অনেকেই ঘরে বসেই ইমামকে ফলো করতে পারবেন বলে মনে করছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২০
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।