ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

তায়কোয়ান্দোতে হিজাবি কুবরা দাগলির বিশ্বজয়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
তায়কোয়ান্দোতে হিজাবি কুবরা দাগলির বিশ্বজয়

কুবরা দাগলি (Kubra Dagli) ২০ বছর বয়সী এক নারী। তিনি তুরস্কের তায়কোয়ান্দো (Taekwondo) চ্যাম্পিয়ন। আরও মজার বিষয় হলো- এ খেলায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন হিজাব পরে। অর্থাৎ খেলার সময় তার মাথায় হিজাব ছিল।

কুবরা দাগলি (Kubra Dagli) ২০ বছর বয়সী এক নারী। তিনি তুরস্কের তায়কোয়ান্দো (Taekwondo) চ্যাম্পিয়ন।

আরও মজার বিষয় হলো- এ খেলায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন হিজাব পরে। অর্থাৎ খেলার সময় তার মাথায় হিজাব ছিল। সম্প্রতি তা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে তুরস্কে।  

গত অক্টোবরে দশম বিশ্ব তায়কোয়ান্দো শিরোপা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় পেরুর রাজধানী লিমায়। সেখানে দাগলি স্বর্ণপদক জিতেছেন পোমসা দল ক্যাটাগরিতে। কুবরা দাগলির এই অর্জনে উৎসবে মেতেছে তুর্কির গণমাধ্যম।

স্বর্ণপদক জয়ের পাশাপাশি কুবরাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তার হিজাব পরা অবস্থায় তায়কোয়ান্দো খেলে শিরোপা অর্জন নিয়ে। কারণ কুবরা দাগলি তুরস্কের পুরনো ও সেকেলে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে আঘাত করেছেন তার হিজাব, ইসলামি আদর্শ ও চেতনা দ্বারা। ওই শ্রেণির মানুষের অহমিকাকে নিজের অজান্তেই চ্যালেঞ্জ করেছেন কুবরা। আর এটাই আলোচনার মূল বিষয়।  

আলোচনাকে আরও জমজমাট করেছে দাগলির বক্তব্য। তিনি বলেছেন, ‘খেলায় জেতা বড় কথা নয় আমার কাছে। আমি বেশি গুরুত্ব দিয়েছি খেলাধুলায় মেয়েদের হিজাব পরাকে। আর অন্যান্য সময় তো পরতেই হবে। ’

অনেকে বলেছেন, ধর্ম পালন ও ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাগলির এমন দৃঢ় অবস্থান তুর্কির সেকুলারিজমে বিশ্বাসীদের ভাবিয়ে তুলছে। তারপরও আলোচনাটাকে দাগলি স্বাভাবিকই মনে করছেন। তার মতে, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন করেছি দেশ ও দলকে। ব্যাপক আলোচনায় আসা আমাদের সফলতা। ’ 

দাগলি তার দাবী ও কাজের পক্ষে মিডিয়ার ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে দাগলি বলেছেন, ‘এক শ্রেণীর মানুষ আমার হিজাব পরাকে নানা সমালোচনা করছেন। আমি এসবে গুরুত্ব দিই না। আমি আমার স্বপ্নপূরণ করেছি। প্রতি সকালে উঠে আমি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। আমি খুশি সেটা পূরণ করেত পেরে। ’ 

গণমাধ্যমে বেশ খোলাখুলিই বলা হচ্ছে, সাধারণ মানুষ দাগলিকে সমর্থন দেন বলে তারা গর্বিত। অনেকে দাগলির সমর্থনে হিজাব পরার গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য রীতিমতো অনুষ্ঠান পালন করছেন।  

হিজাব পরে বিশ্বসেরা খেতাব পাওয়ার পর দাগলি তার রুচিবোধ, ধর্মীয় বিশ্বাসকে তুলে ধরার জন্য দৃঢ়তার সঙ্গে লড়াই করেছেন। এক্ষেত্রে দাগলি রক্ষণশীল ও সরকার সমর্থিত গণমাধ্যমের সমর্থনও পেয়েছেন।  

দাগলির সমর্থনে তুরস্কের জনপ্রিয় কলাম লেখক মেভলুট টেজেল লিখেছেন, ‘আমরা বড় মাপের ধন্যবাদ জানাই কুবরাকে। কারণ তিনি প্রমাণ করেছেন, বিশ্বসেরা অর্জনে মাথায় স্কার্প পরা কোনো বাধা নয়। আমি বিশ্বাস করি, তার কীর্তি অপরাপর হিজাবি বোনেরা যারা নাকি ক্রীড়াজগতে হিজাব পরতে চান না, তাদেরও দৃঢ়ভাবে উৎসাহিত করবে। ’

তাকভিম নামক ট্যাবলয়েড পত্রিকায় এই নারী খেলোয়াড়কে স্বর্ণের কুবরা অভিহিত করা হয়।  

একইভাবে রক্ষণশীল অ্যানি আকিতও দাগলির প্রশংসা করেন। এ সংক্রান্ত এক ভিডিওচিত্রের নিচে মন্তব্য করেন, স্কার্ফ পরা সত্ত্বেও দাগলি চ্যাম্পিয়ন হন।

দাগলির প্রশংসায় অনেকে এভাবে বলেছেন, বিশ্বাস ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞা থাকলে বিজয় নিশ্চিত।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।