ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইরানে তিন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
ইরানে তিন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা  ফাইল ফটো: সংগৃহীত

ইরান সম্প্রতি আরও তিন বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো দেশটির প্রতি তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে।

দেশটির বিচার বিভাগীয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম মিজান নিউজ শুক্রবার (১৯ মে) জানায়, মজিদ কাজেমি, সালেহ মীরহাশেমী ও সাঈদ ইয়াকুবী নামে তিন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে ইরানের জনবহুল নগরী ইসফাহানে। ওই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সময় তিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ইরানকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের এমন বিচার প্রক্রিয়াকে প্রসহনমূলক বলেও অভিহিত করেছে।

আর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগে বলেছে, ওই ব্যক্তিদের যথাযথ পর্যবেক্ষণ ছাড়াই দ্রুত তাদের দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

ইরানের মানবাধিকার ভিত্তিক একটি বেসরকারি সংস্থার পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম এক টুইটে বলেন, এ মৃত্যুদণ্ড ইসলামী প্রজাতন্ত্রের শাসনকে দীর্ঘায়িত করার কৌশল। একটি রাজনৈতিক বিপ্লবের মাধ্যমে এসব মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে শত শত বিক্ষোভকারীকে তাদের কিলিং মেশিনে জীবন দিতে হবে।

ইরানের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যানুসারে, বিক্ষোভকারীর মনে ভয় ও আতঙ্ক তৈরি করতে গত বছর ইরান কমপক্ষে ৫৮২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৭৮ শতাংশ বেড়েছে।

গত মাসে নরওয়ে ভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এবং ফ্রান্স ভিত্তিক টুগেদার এগেইনস্ট দ্য ডেথ পেনাল্টি (ইসিপিএম) গ্রুপ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যাতে বলা হয়েছে ২০১৫ সালে ইরানে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।  

সম্প্রতি কার্যকর হওয়া কাজেমী, মীরহাশেমী ও ইয়াকুবীর মৃত্যুদণ্ডে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সহকারী মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে ওই তিন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় ইরানে মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার বলতে কিছু নেই।

প্যাটেল আরও বলেন, এটি স্পষ্ট যে ইরানের শাসক গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনির মৃত্যু দিয়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ থেকে কিছুই শিখেনি।

ইরানে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি হেনগাও সংস্থা টুইটে বলেছে, ওই তিন ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যুনতম অধিকার ছিল না। সংস্থাটি ইরানের এমন বিচার ব্যবস্থার নিন্দা জানিয়ে মৃত্যুদণ্ডের ঢেউ বলে অভিহিত করেছে।  

পুলিশ হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যু ও নারীদের প্রতি সরকারের কয়েক দশকের তিক্ত আচরণ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে গত শরতে বিক্ষোভে কেঁপে ওঠে ইরান। যার রেশ চলে কয়েক মাস ধরে। এ আন্দোলনে প্রচণ্ড হুমকির মধ্যে পড়ে ইরানের শাসকগোষ্ঠী।

সূত্র: সিএনএন

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।