ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

ভারতে রুপির আরও দরপতন, মোদী জামানায় নয়া রেকর্ড

ভাস্কর সরদার,সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২২
ভারতে রুপির আরও দরপতন, মোদী জামানায় নয়া রেকর্ড

কলকাতা: রুপির পতন অব্যাহত ছিল। পড়তে পড়তে নতুন রেকর্ড গড়েছে রুপির দাম।

মোদী জামানায় রেকর্ড গড়ে ডলারের তুলনায় আরও সাত পয়সা কমেছে রুপির দাম। ডলার প্রতি রুপির দাম ৮০ রুপি ছাড়িয়েছে। যা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে ভারতের অর্থনীতিবিদদের। দিনদিন শক্তিশালী হচ্ছে মার্কিন ডলার, আর রুপি হচ্ছে আরও দুর্বল। আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় মুদ্রার এমন পতন মোদীর জামানাতেই হল।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রুপির মূল্যর ফের অবনমন ঘটেছে। এক ডলারের দাম হয়েছে ৮০ রুপির বেশি। এখন ১ ডলার বিক্রি করলে পাওয়া যাবে ৮০ রুপি ৬০ পয়সা। সোমবারই (১৮ জুলাই) ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার দাম ৮০ রুপির ছুঁয়েছিল। অবশ্য সোমবার দিনের শেষে ১৬ পয়সা কমে ডলারের দাম দাঁড়ায় ৭৯ দশমিক ৯৮ রুপি। তবে মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই রুপির বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে থাকে।

সম্প্রতি রুপির ক্রমাগত পতনের জেরে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়ছে মোদী সরকার। সোমবার (১৮ জুলাই) সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানিয়েছেন, অপরিশোধিত জ্বালানির ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দা, বিদেশি বিনিয়োগের অভাব ইত্যাদি কারণেই রুপির পতন হচ্ছে।

সোমবার সংসদে বর্ষাকালীন অধিবেশনের শুরুতেই লিখিত বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, ২০১৪ সালে এক ডলার প্রতি রুপির দাম যা ছিল, সেই দাম ২০২২ সালে বেড়েছে ১৬ রুপি ৮ পয়সা।

তবে কেন ডলারের বিপরীতে রুপি ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে? এক, চলমান পরিস্থিতিতে ভারতীয়রা যা রফতানি করছেন, তার তুলনায় আমদানি করছেন বেশি। যাকে অর্থনীতির ভাষায় বলা হচ্ছে, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট। যখন কোনো দেশে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিটে থাকে তখন বুঝায় যত বৈদেশিক মুদ্রা সেই দেশে আসছে, তার চেয়ে বেশি বের হয়ে যাচ্ছে।

চলতি বছর ইউক্রেনে রুশ হামলার কারণে অপরিশোধিত তেল এবং পণ্যের দাম বিশ্বজুড়েই বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারতের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিটও। কারণ, মার্কিন ডলার খরচ করেই ভারতকে অপরিশোধিত তেলসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে।

কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিটের দ্বিতীয় কারণ হল, ভারতীয় অর্থনীতিতে বিনিয়োগ কমে যাওয়া। তবে এ বিষয়ে শুধুমাত্র ভারত নয়, বেশিরভাগ দেশেই কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট দেখা যাচ্ছে। যদিও ভারতে বিদেশি বিনিয়োগকারীর উপস্থিতি সেই ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ করেছে। একে ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্ট উদ্বৃত্ত বলা হয়। এই উদ্বৃত্ত হওয়ার কারণে ডলারের তুলনায় রুপির চাহিদা কিছুটা হলেও শক্তিশালী রয়েছে।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভারতে ফের বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের দাম। একদিনে অন্তত আড়াই শতাংশ দাম বেড়েছে অশোধিত জ্বালানি তেলের। আরও একবার জ্বালানি তেলের প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার পার হয়ে ১০৪ ডলার স্পর্শ করেছে। সুতরাং আবার ভারতের সরকারি তেল সংস্থাগুলি জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে চাইছে। জানা গেছে,  বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে ভারতে ফের দাম বাড়ানোর আবেদন করতে পারে সংস্থাগুলি। আর মোদী সরকারের সবুজ সঙ্কেত পেলে ভারতে ফের বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের দাম। তাতে সাধারণের অবস্থা আরও শোচনীয় হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, ১৯ জুলাই, ২০২২
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।