ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্য জটিলতায় বছরে মৃত্যু সাড়ে ৬ হাজার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৩
মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্য জটিলতায় বছরে মৃত্যু সাড়ে ৬ হাজার

ঢাকা: মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যগত নানা জটিলতায় প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় দুই লাখ মানুষ মারা যায় এবং বাংলাদেশে মারা যায় প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইসিডিডিআরবি)।

মঙ্গলবার (০২ মে) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর আইসিডিডিআরবির সেমিনার রুমে 'অ্যাডসার্চ ও আইসিডিডিআরবি বাংলাদেশে সেক্সুয়াল এবং জন্মধারণ স্বাস্থ্য অধিকার' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

আইসিডিডিআরবির শিশু এবং মাতৃত্ব স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী ডা. মোহাম্মদ এহসানুর রহমান বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম বড় একটি অংশ হচ্ছে মাতৃস্বাস্থ্য। মাতৃস্বাস্থ্যের বিভিন্ন জটিলতায় বিশ্বব্যাপী বছরে প্রায় এক লাখ ৯৬ হাজার ৪৭১ জন মারা যায়। আর বাংলাদেশে মারা যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। প্রজনন স্বাস্থ্যের বড় একটি সমস্যা হচ্ছে প্রজনন অঙ্গের সংক্রমণ। প্রজনন অঙ্গের সংক্রমণের কারণে সারাবিশ্বে মারা যায় ৪৩ হাজার নারী। আর বাংলাদেশে মারা যায় এক হাজারের মতো। বর্তমানে এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের এই সময়ে এসে এক হাজার মায়ের মৃত্যু হওয়াটা কাম্য নয়।

তিনি জানান, প্রজনন স্বাস্থ্যের বিশাল একটা সমস্যা হচ্ছে, মহিলাদের জরায়ু পথের ক্যান্সার। জরায়ু পথের ক্যান্সারে পৃথিবীব্যাপী দুই লাখ ৮০ হাজার ৫০০ জন মারা যান। বাংলাদেশে মার যান প্রায় তিন হাজার ৭৫০ জন। মহিলাদের আরও একটি বড় সমস্যা হলো- প্রজনন অঙ্গ যখন নিচের দিকে নেমে আসে। যার কারণে বিশ্বব্যাপী দুই হাজারের অধিক নারীর মৃত্যু হয়। যাতে আমাদের দেশে প্রায় দেড়শোর বেশি নারী মারা যান। নারীদের স্বাস্থ্যজনিত কারণে অনেক সময় গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ হয়ে থাকে। এই গর্ভপাত অনিরাপদ অবস্থায় হলে নারীর স্বাস্থ্যগত নানা জটিলতা বা মৃত্যু ঘটে। বিশ্বব্যাপী এই অনিরাপদ গর্ভপাতের ফলে প্রায় ২০ হাজার নারীর মৃত্যু হয়। যাতে বাংলাদেশে ১৫০ থেকে ২০০ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও অন্যান্য মাতৃত্বকালীন সমস্যায় ৩৫০ থেকে ৪০০ নারী মারা যান।

এদিন আইসিডিডিআরবির সাসাকাওয়া অডিটোরিয়াম সেমিনার কক্ষ ১ ও ২ এ অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী গবেষণা ও উদ্ভাবন উৎসব। এই উৎসবে তরুণ গবেষকেরা যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিয়ে তাদের ‘গবেষণা ধারণাপত্র' ও ‘উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা' তুলে ধরেছেন।

এর আগে অ্যাডসার্চ গবেষণা প্রস্তাবনা ও উদ্ভাবনী ধারণা আহ্বান করেছিল। সেখান থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে ১০০টি গবেষণা প্রস্তাবনা ও ৫৭টি উদ্ভাবনী ধারণাকে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়। সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে বিশেষজ্ঞদের নম্বরের ভিত্তিতে সেরা ২২টি গবেষণা প্রস্তাবনা ও ২১টি উদ্ভাবনী ধারণা উপস্থাপনের জন্য বাছাই করা হয়। সেখান থেকে দুটি বিভাগে সেরা তিনটিকে সম্মেলনের দিন বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বুধবার (৩ মে) ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপসী বাংলা গ্র্যান্ড বল রুমে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার ও উদ্ভাবন নিয়ে দুটি বৈজ্ঞানিক সেশনের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে বিশেষজ্ঞগণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের উপস্থাপনা তুলে ধরবেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিস্তারে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনজন বিশিষ্টজনকে ‘এসআরএইচআর এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৩' দেওয়া হবে।

এ বছর অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন ও বাংলাদেশের প্রজনন স্বাস্থ্য গবেষণা ও কর্মসূচির অগ্রদূত হালিদা আকতার হানুমকে এই সম্মাননায় ভূষিত করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৩
আরকেআর/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।