ঢাকা: বাংলাদেশে শব্দদূষণ রোধে ২০০৬ সালে প্রণীত ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা’ অনুযায়ী বিভিন্ন অঞ্চলে শব্দের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, আইন থাকলেও এর কার্যকর বাস্তবায়নের অভাবে শব্দদূষণ আজ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।
শব্দের সীমা আইন অনুযায়ী নির্ধারিত এলাকার শব্দ সীমা-
• শান্ত এলাকা: দিন ৫০ ডেসিবেল, রাত ৪০ ডেসিবেল।
• আবাসিক এলাকা: দিন ৫৫ ডেসিবেল, রাত ৪৫ ডেসিবেল।
• বাণিজ্যিক এলাকা: দিন ৭০ ডেসিবেল, রাত ৬০ ডেসিবেল।
• শিল্প এলাকা: দিন ৭৫ ডেসিবেল, রাত ৭০ ডেসিবেল।
দিনের সময়: সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা।
রাতের সময়: রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, নগর ও শিল্পাঞ্চলগুলোতে প্রতিদিন এই সীমা লঙ্ঘিত হচ্ছে।
শব্দদূষণের কারণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
শব্দদূষণের প্রধান উৎস হলো যানবাহনের হর্ন, নির্মাণকাজ, শিল্পাঞ্চলের মেশিন এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে মাইক্রোফোনের অপব্যবহার। অতিরিক্ত শব্দের ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, মানসিক চাপ, বধিরতা, এমনকি শিশুদের মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
আইন বাস্তবায়নে করণীয়
আইনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে জরুরি কিছু পদক্ষেপ-
• কঠোর নজরদারি ও জরিমানা: শব্দের সীমা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা।
• প্রযুক্তির ব্যবহার: হর্ন নিয়ন্ত্রণ ও শব্দ পর্যবেক্ষণ ডিভাইস স্থাপন।
• জনসচেতনতা বৃদ্ধি: গণমাধ্যম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব প্রচার।
• স্থানীয় উদ্যোগ: এলাকাভিত্তিক শব্দ নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন।
• পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি: নির্মাণকাজে কম শব্দ তৈরি হয় এমন যন্ত্রপাতি ব্যবহার।
একসঙ্গে কাজ করতে হবে
শব্দদূষণ রোধে আইন প্রয়োগ এবং জনগণের অংশগ্রহণ একসঙ্গে নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সচেতনতা, শক্তিশালী নীতি, এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করলে শব্দদূষণমুক্ত একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।
আমাদের স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মঙ্গলের জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
লেখক: এস এম মুহাইমিনুল ইসলাম, প্রকৌশলী ও গবেষক; সদস্য, ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪
এসআইএস