ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

তাজিকিস্তানে ধরাশায়ী ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন নেপাল

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৮
তাজিকিস্তানে ধরাশায়ী ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন নেপাল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: ফেভারিট তাজিকিস্তানের কাছে ধরাশায়ী হলো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের গত আসরের চ্যাম্পিয়ান নেপাল। হিমালয়ের পাদদেশের শক্তিধর দেশটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে প্রথম ধাপ এগিয়ে গেল তাজিকিস্তান।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা তাজিকিস্তান খেলার শুরু থেকেই নেপালকে চাপে রাখে। র‌্যাঙ্কিংয়ে ১২০ তম অবস্থানে থাকা তাজিকিস্তানের থেকে ৪০ ধাপ পিছিয়ে থাকা নেপালের র‌্যাঙ্কিং ১৬০তম।

আর সেই র‌্যাকিংয়ের মানও রেখেছে তারা।

এবারই তাজিকিস্তান প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে অংশ নেয়। আর গতবার বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ান নেপাল এবার অংশ নেওয়া নতুন এই দলটির সঙ্গে শক্তিমত্তায় পেরে ওঠেনি।

তাজিক অধিনায়ক ফাতখুল্লয়েভ ফাতখুল্ল ও বদলি হিসেবে নামা তুরনভ কমরন’র গোলে পরাজয় মেনে মাঠ ছাড়তে হয় গোপাল মহারজনের শিষ্যদের।

প্রথমার্ধে ২৫ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করেন অধিনায়ক ফাতখুল্ল। আর দ্বিতীয়ার্ধে ২৬ মিনিটের সময় অধিনায়কের পাস থেকে গোল করেন তুরনভ কমরন। খেলা শেষে ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কারটাও নিজের দখলে নেন তাজিক অধিনায়ক ফাতখুল্লয়েভ ফাতখুল্ল।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মাঠে গড়ায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় এই ম্যাচটি। আসরের গতবারের চ্যাম্পিয়ন নেপাল শুরুতেই হোঁচট খায়।

ম্যাচের শুরুর কয়েক মিনিট তাজিক ডিফেন্সকে ব্যতিব্যস্ত রাখলেও পরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি নেপাল। তারা ফুটবল খেলেছেন এলোমেলো। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মাঝমাঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় তাজিকিস্তান। পর্যায়ক্রমে মাঠের ডান-বাম প্রান্ত থেকে একের পর এক আক্রমণ শানিত করে নেপালের ডিফেন্সকে ভেঙে দেয় তাজিকরা।

ম্যাচের ২ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্ত থেকে আসা বল ধরে বক্সে থাকা মোহাম্মদ রহিমভ জোরালো শট নিয়েছিলেন। ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই শট ঠেকিয়ে দেন নেপালের গোলরক্ষক বিকেশ খুথু।

১১ মিনিটের মাথায় মাঝমাঠ থেকে নিরাজনের বাড়ানো বল ধরে তাজিকদের বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন সুজাল শ্রেষ্ঠ। রহিমভ কর্ণারের বিনিময়ে এ যাত্রায় রক্ষা করেন দলকে।

প্রথমার্ধের ২০ মিনিটের মাথায় ডিবক্সের ঠিক বাইরে থেকে নাজারভ আখতামের শট ঠেকাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন নেপাল গোলরক্ষক বিকেশ। দুই মিনিট পর বক্সে ফাতখুল্লুয়েভের সামনে একা ছিলেন নেপাল গোলরক্ষক। তবে শট নিতে ব্যর্থ হন তাজিকিস্তানের অধিনায়ক।

২৬ মিনিটে বাড়ানো বল ধরে নেপালের বক্সে ঢুকে পড়েন ইরগাশেভ জাহঙ্গীর। হাত দিয়ে ধাক্কা মেরে তাকে ফেলে দেন নেপাল ডিফেন্ডার অনন্ত তামাং। রেফারির পেনাল্টির বাঁশি বেজে উঠতেই স্পট কিক থেকে সহজেই গোল করে দলকে এগিয়ে নেন তাজিক অধিনায়ক ফাতখুল্লয়েভ ফাতখুল্ল।

ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ডান উইং থেকে নাজারভের শটে বক্সে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড নেন আব্দুগফ্ফরভ। মিনিট দুয়েক পরে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন নেপালের আদিত্য চৌধুরী।

৫০ মিনিটে তাজিকিস্তানের বক্সে ডান প্রান্ত দিয়ে বল পেয়েছিলেন নিরাজন খাদকা। কিন্তু শট নিতে ব্যর্থ হন এই মিডফিল্ডার। দুই মিনিট পর দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল তাজিকিস্তান। তবে কাজে লাগাতে পারেনি।

৫৫ মিনিটে নেপালের ডিফেন্ডার দিনেশ রাজবনশির ক্রসে বক্সে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড নেন বিশাল। ৬৩ মিনিটে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ইরগাশেভ।

৭২ মিনিটে সুজাল শ্রেষ্ঠর বুলেট গতির শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েন ঠেকিয়ে দেন তাজিকিস্তানের গোলরক্ষক রিজোয়েভ রুস্তম। দুই মিনিট পর কড়া ট্যাকল করতে গিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন তাজিক অধিনায়ক।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা গতিময় ফুটবলের চেষ্টা করে নেপাল। কিন্তু পাল্টা আক্রমণ থেকে ৬৯ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় এবারই প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে খেলতে আসা তাজিকিস্তান। নেপালের বক্সের ডান প্রান্ত থেকে তাজিক অধিনায়ক ফাতখুল্লয়েভের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান তুরনভ কমরন।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ডিফেন্ডিং দল নেপালী কোচ গোপাল মহারজন বলেন, তার টিমের ৩ জন ডিফেন্ডারেই ইনজুরি নিয়ে খেলেছে। গত বারের চ্যাম্পিয়ান হিসেবে এবারো তাদের আশা ছিল শুরুটা ভাল করবেন। তবে প্রতিপক্ষ তাজাকিস্তানও শক্তিশালী দল। তারা খেলেছেও ভাল। পরবর্তী ম্যাচে তার দল খেলায় ফিরে আসবে আশাবাদি তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তাজাকিস্তানের কোচ তোফতায়েব আলিশের বলেন, তার দল প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ খেলতে এসেছে। তবে দলের পুরো শক্তি তারা প্রয়োগ করেননি। আজকের খেলা একটা এসিড টেস্ট হিসেবে নিয়েছেন। দলও জয় পেয়েছে।

তাজিকিস্তান একাদশ: রিজোয়েভ রুস্তম (গোলকিপার), আশররভ সিয়োভুশ, জুরাবুয়েভ আমিরবেক, মোহাম্মদ রহিমভ, এরগাশেভ জাহঙ্গীর, বেকনাজরভ খুরশেদ, ফাতখুল্লুয়েভ ফাতখুল্ল (অধিনায়ক), নাজারভ আখতাম, আব্দুগফফারভ মুখসিন্দজ, কালান্দারভ বখতিয়র ও আখমেদভ মানুছেখর।

নেপাল একাদশ: বিকেশ কুথু (গোলকিপার), বিরাজ মহার্জন (অধিনায়ক), অনন্ত তামাং, আদিত্য চৌধুরী, নিরাজন খাদকা, বিশাল রায়, সুনীল বাল, বিমল ঘারতি, তেজ তামাং, সুজাল শ্রেষ্ঠা ও দিনেশ রাজবনশী।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘন্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৮
এনইউ/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।