ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

রেকর্ড জার্মানির বিপক্ষে

সাঈদ শিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২০ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৪
রেকর্ড জার্মানির বিপক্ষে

ঢাকা: রেকর্ড বলছে, জার্মানি যে ম্যাচে বড় ব্যবধানে জেতে পরের ম্যাচে ফলাফল তার উল্টো হয়। হয় হারে না হয় ড্র করে।

তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে এবার তীর্থ থেকে কাপ যাবে ফুটবল ঈশ্বরের দেশে! তবে ফলাফলের বাস্তব চিত্র পাওয়া যাবে ১৩ জুলায়ের ফাইনাল খেলা শেষে।
 
আপাতত আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা জার্মানির রেকর্ড দেখে আত্মতুষ্টিতে ভুগতেই পারেন। আর স্বপ্ন দেখতে পারেন, দেশটির ফুটবল ঈশ্বর ম্যারাডোনার পর তাদের আবার শিরোপা জয়ের উৎসবের সুযোগ করে দেবেন খুদে ফুটবল জাদুকর  মেসি।
 
আসুন দেখে নেয়া যাক কেন রেকর্ড জার্মানির বিপক্ষে। মনে করুন ২০১০ বিশ্বকাপের কথা। প্রথম রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-০ গোলে এক প্রকার উড়িয়ে দেয় জার্মানি। এর পরের ম্যাচেই দুর্বল সার্বিয়ার কাছে তারা হেরে বসে ১ গোলে।
 
একই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আবারও গোল উৎসব করে জার্মানি। আর্জেন্টিনাকে ৪-০ ব্যবধানের বড় হার উপহার দিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দেয় মেসি ও ম্যারাডোনাকে।   পরের ম্যাচে সেমিতে যা হওয়ার তাই হলো। বড় ব্যবধানে জিতলে পরের ম্যাচে হারতে হবে এটাকেই সত্য প্রমাণ করে স্পেনের কাছে জার্মানি হেরে বসে ১ গোলে।
 
এবারের বিশ্বকাপেও দেখা গেছে রেকর্ডের পুনরাবৃত্তি। প্রথম ম্যাচে পর্তুগালকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে পরের ম্যাচে তুলনামূলক দূর্বল ঘানার সঙ্গে ড্র (২-২) নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় জার্মানিকে।
 
পাঠক এখানেই শেষ না, আরো আছে। ২০০২-এ সৌদি আরবকে ৮ গোলে উড়িয়ে দেয়ার পরের ম্যাচেই আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র। ১৯৯০-এ আরব আমিরাতকে ৫-১ গোলে হারানোর পরের ম্যাচেই ড্র কলম্বিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে।
 
১৯৭৮ সালে মেক্সিকোকে ৬-০ গোলে হারানোর পরের দু’ ম্যাচে তিউনিশিয়া ও ইতালির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র।   একইভাবে ১৯৫৪তে তুরস্ককে ৪ গোল দেয়ার পরের ম্যাচেই হাঙ্গেরির কাছে ৮ গোল খেয়েছিলো জার্মানি। ২০১২ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে গ্রিসকে ৪ গোল দেয়ার পর সেমিতে ইতালির কাছে হার।
 
সুতরাং ব্রাজিলকে ৭ গোল দেয়ার পর ইতিহাসের এই ধারা ঠিক থাকবে- এ আশাটা করতেই পারেন আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা। মানে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপের খরা মেটাবে আর্জেন্টিনা।
 
আর যদি এটি সত্যি হয় তবে কি হবে দেশটির ফুটবল ঈশ্বরের(ডিয়াগো ম্যারাডোনা)। মেসি মেসি করতে করতে কি দেশটির ফুটবল ভক্ত সমর্থকেরা ভুলে যাবেন ফুটবল ঈশ্বরকে।
 
সময়টা ১৯৮৬ সাল। ছোট খাটো গড়নের টগবগে যৌবনের ২৬ বছরের এক তরুণ। বিশ্ব আসরে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলেন। একক দক্ষতায় দেশকে এনে দিলেন বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কার বিশ্বকাপ ট্রফি। গড়ে দিলেন আধুনিক ফুটবলে নান্দনিকতার স্থায়ী ভিত্তি। এভাবেই নিজ দেশে ফুটবল ঈশ্বর বনে গেলেন ম্যারাডোনা।

এরপর একে একে পার হয়েছে ২৮ বছর। বিশ্ব দেখেছে আরও ৬টি বিশ্বকাপ। ফুটবল ঈশ্বরের দেশে জন্ম নিয়েছে অনেক সুপার স্টার। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে দেশটির আর নেওয়া হয়নি বিশ্বকাপ ট্রফির স্বাদ। প্রতিবারই বিশ্ব আসরে আর্জেন্টিনা এসেছে ফেবারিট হিসেবে। নিজেরা খেলেছে, অন্যদের খেলিয়েছে। কিন্তু বিদায় নিতে হয়েছে তারকাদের চোখের জলে খালি হাতে। ফলে ১৯৮৬ তে দেশটির মানুষের হৃদয় জয় করা ম্যারাডোনা স্থায়ী আসন দখল করে নিয়েছেন তাদের হৃদয় মাঝে।
 
বিভিন্ন দেশ ঘুরে এবার (২০১৪) ফুটবল ফিরেছে ফুটবলের দেশ ব্রাজিলে। যাকে (ব্রাজিল) বলা হয় ফুটবলের তীর্থ ভূমি। তীর্থভূমিতে ইতিমধ্যে ফাইনাল ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী বাদে সব খেলা হয়ে গেছে। একে একে বিদায় নিয়েছে সব রথী মহারথীর দেশ।
 
বারবার ব্যর্থ তারপরও বিশ্ব আসরে হট ফেবারিট আর্জেন্টিনা। তাই ঘটন অঘটনের যত জটিল সমীকরণই থাকুক এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। শিরোপার অন্যতম দাবিদার হিসেবেই বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ করে আর্জেন্টিনা। একে একে সব বাধা পেরিয়ে পৌঁছে গেছে ফাইনালে।
 
এখন দেখার পালা ক্লাব ফুটবলে সব মুকুট জয় করা মেসি বসতে পারেন কি না তার দেশের ফুটবল ঈশ্বরের পাশে। এ জন্য ভক্ত সমর্থকদের অপেক্ষা করতে হবে ১৩ জুলাই পর্যন্ত।
 
বাংলাদেশ সময়: ০২০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।