ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

দুই বার্সেলোনা তারকার মুখোমুখি লড়াই

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৪
দুই বার্সেলোনা তারকার মুখোমুখি লড়াই

ময়মনসিংহ: সারা বছর দু'জনই একই দলের সদস্য। একই জার্সিতে কাতালান ক্লাব বার্সেলোনায় ভাগাভাগি করেছেন সাজ ঘর।

যথেষ্ট ভালো বন্ধুও বটে।

শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় মাঠের লড়াইয়ে এবার দুই বন্ধু ফরোয়ার্ড নিজেদেরই প্রতিপক্ষ। একজন আধুনিক ফুটবলের জনক নেইমার আর অন্যজন প্রতিভাবান মেধাবী ফুটবল খেলোয়াড় সানচেজ।

দু'জনেই নিজেদের দলের সেরা অস্ত্র ও ম্যাচ জয়ের নায়ক। এবার দেশের হয়ে দুই সতীর্থর বন্ধুত্ব ছাড়িয়ে খেলা দেখার পালা।

এ দিন ব্রাজিল ও চিলির এ দুই তারকাই মাঠের লড়াইয়ে স্পটলাইটে থাকবেন।

নক-আউট পর্বের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবার আগে কৌতূহলী ফুটবল ভক্তরাই তাদের ব্যবচ্ছেদ করছেন। যদিও ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে বার্সার এ দুই তারকার দ্বৈরথে সাফল্য ও ধারবাহিকতায় এগিয়ে থাকবেন ‘গোল মেশিন’ নেইমারই।

নেইমার ও সানচেজ দু’জনই নামি খেলোয়াড়। ফুটবল বিশ্বে সুনাম দু’জনেরই কম নয়। তবে দামে রেকর্ড গড়েছেন আধুনিক ফুটবল যাদুকর নেইমার। দলবদলের বাজারে হৈচৈ ফেলে বার্সাতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

ব্রাজিলের ক্লাব সান্তোষ ছেড়ে ৫৭ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বার্সার জার্সি গায়ে জড়ান নেইমার।

আর ইতালির সিরিএ'র দল উদেনেসি থেকে সানচেজকে ৪৩ মিলিয়ন ডলারে এ ক্লাবে আনা হয়।

দু’জনই চলতি বিশ্বকাপে নিজ নিজ দলের মূল নায়ক। নেইমার বিশ্বকাপের ৩ ম্যাচে ৪ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে নিজের নাম লিখিয়েছেন।

তবে এক্ষেত্রে কম করে হলেও ৩ গোল পিছিয়ে আছেন সানচেজ। চিলির হয়ে সমান সংখ্যক ম্যাচে তিনি গোল করেছেন মাত্র ১টি। তাও আবার দুর্বল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।



এদিক থেকেও বার্সা সতীর্থর বিপক্ষে বেশ ফুরফুরে মেজাজে থাকবেন নতুন ফুটবল নক্ষত্র নেইমার। তবে জ্বলে উঠে ব্রাজিল বিদায়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন সানচেজ। এখন দেখার পালা প্রকৃত পক্ষে কি হয়।

অন্যদিকে আন্তজার্তিক ক্যারিয়ারে নেইমারের ঝুলিতে রয়েছে ৫৩ ম্যাচে ৩৭ গোল। ইতোমধ্যে তিনি দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় ছয় নম্বর স্থান দখল করেছেন। বিপরীতে এর চেয়ে বেশি সংখ্যক ম্যাচ খেলে, ৭০ ম্যাচে মাত্র ২৩ গোল করেছেন সানচেজ। এদিক দিয়েও পিছিয়ে তিনি।

বার্সেলোনার জার্সিতে এক মৌসুম খেলেছেন নেইমার ও সানচেজ। ২০১৩-১৪ মৌসুমে দলটির হয়ে মাত্র ১৩ গোল করেন নেইমার। আর গোল গোল করিয়েছেন ১১টি। কিন্তু চিলির তারকা সানচেজের কাছ থেকে ওই মৌসুমে পাক্কা ১৯টি গোল পায় বার্সেলোনা। সুতারাং এ দিক দিয়ে আবার এগিয়ে সানচেজই।

২০১৩ সালের কনফেডারেশন কাপে ব্রাজিলকে জিতিয়েছেন নেইমার। পেয়েছিলেন গোল্ডেন বল। সেই সঙ্গে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই দক্ষিণ আমেরিকার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এমন সাফল্যের ধারের কাছেও নেই সানচেজ। তবুও তার প্রতিভাই বড় ভরসা চিলির।

৬৪ বছর পর নিজ দেশে ফেরা বিশ্বকাপ জিতে ষষ্ঠ বারের মতো ফুটবল বিশ্বে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরতে চান নেইমার বাহিনী। আর ১৯৬২ সালে ঘরের মাটিতে তৃতীয় স্থান লাভ করার পরে এ প্রথমবারের মতো বিশাল লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছে সানচেজের চিলি। তাদেরও লক্ষ্য এবার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতা।

প্রথমবারের মতো নিজের দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলছেন নেইমার। প্রথম রাউন্ডেই সাম্বার ছন্দে দলকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশের হয়ে নিজের সেরাটাই উপহার দিচ্ছেন।

পক্ষান্তরে, দ্বিতীয় বারের মতো চিলির হয়ে বিশ্বকাপ খেলছেন সানচেজ। প্রথম বিশ্বকাপে সানচেজ ব্যর্থ হলেও বলিভিয়ার বিপক্ষে একটি ম্যাচে ২ গোল করেছিলেন।

২০১০ সালের বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি করতে চাইবেন নেইমার। সেইবার দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিলের কাছে চিলি ৩-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়। তবে ওই ব্রাজিল দলে অবশ্য ছিলেন না নেইমার।

শনিবার রাত ১০টার ম্যাচে সেই হারের প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টাই করবেন সানচেজ। কেন না সে দলে সানচেজ নিজেই ছিলেন। এখন দেখার পালা শনিবারের শনি কার গায়ে লাগে, কেন না দুই কাতালান বার্সেলোনা তারকার মুখোমুখি লড়াই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।