ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নিবন্ধন বাতিলের ঝুঁকিতে বিএনপি-জাপা

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২১ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৯
নিবন্ধন বাতিলের ঝুঁকিতে বিএনপি-জাপা বিএনপি ও জাপা

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ায় রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিলের ঝুঁকিতে পড়েছে তিনবারের ক্ষমতাভোগকারী দল বিএনপি। কেবল বিএনপিই নয়, সংসদের বিরোধী জাতীয় পার্টিসহ (জাপা) আরও ৩৭টি দল রয়েছে এই ঝুঁকিতে। 

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে দলগুলোকে ব্যয়ের হিসাব দিতে হয়। কিন্তু ব্যয়ের হিসাব দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে গত ২১ এপ্রিল।

কিন্তু এ ব্যয় বিবরণী জমা দেওয়া তো দূরে থাক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিল না করার বিষয়ে ইসির কাছে এখনও কোনো সময়ও চায়নি বিএনপিসহ অন্যান্য দল।  

তাই খুব শিগগিরই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে এসব রাজনৈতিক দলকে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৪৪ সিসিসি (৫) দফা অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সতর্ক করে ৩০ দিন সময় দেবে, এই ৩০ দিনের মধ্যে কোনো দল হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে কমিশন চাইলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে আরও ১৫ দিন সময় দিতে পারে। এই ১৫দিনের মধ্যেও হিসাব জমা না দিলে কমিশন সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিল করে দেবে।

 
নিবন্ধন বাতিল হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট দল পরবর্তীতে কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। কেননা, বর্তমানে সব নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানান, বিএনপিসহ ৩৭টি দল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি। কেবল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গত ২১ এপ্রিল নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলই নির্বাচনে অংশ নেয়। আরপিও অনুযায়ী, যে দল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, সে দল সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারে। সর্বোচ্চ ১০০ প্রার্থীর জন্য দেড় কোটি টাকা করা যায়।  

সর্বোচ্চ ২০০ প্রার্থীর জন্য তিন কোটি টাকা এবং ২শ’র বেশি প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দল সর্বোচ্চ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারে।

এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় সীমা ছিল। কেননা, এই তিনটি দলের প্রার্থী রয়েছে দুইশ’র বেশি। আর জাতীয় পার্টির ব্যয়সীমা ছিল তিন কোটি টাকা। এরশাদের নেতৃত্বাধীন দলটির প্রার্থী ছিলেন ১শ’র বেশি।

সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ২৫৮জন, বিএনপির ২৪২জন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ২৯৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেয় ১৭৪ আসনে।  

জানা যায়, দলগুলো চাঁদা ও অনুদানসহ অন্যান্য খাত থেকে আয় করতে পারে। নির্বাচনে ব্যয়ও করতে হয় নির্ধারিত খাতে। এক্ষেত্রে পার্টি প্রধানের ভ্রমণ, পোস্টার ও প্রচারকাজের জন্য ব্যয় করার প্রথা রয়েছে।  

 
এদিকে আরপিও অনুযায়ী, ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হয়। ইতিমধ্যে সে সময় অতিবাহিত হয়েছে। যারা হিসাব দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন।
 

এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সময় মতো ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ায় মামলা করেছিল নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিএনপিসহ অন্য দলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবো। এরপরও তারা ব্যয়ের হিসাব না দিলে আরপিও অনুযায়ী, নিবন্ধন বাতিল করা হবে।
 
‘আমরা ইতোমধ্যে কমিশনের কাছে এ বিষয়ে ফাইল তুলেছি। তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি,’ বলেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৯
ইইউডি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।