ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

সালথায় বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র চুরি করে বিক্রির অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
সালথায় বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র চুরি করে বিক্রির অভিযোগ 

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথা উপজেলার পুরুরা সাধুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত একটি ঘরের লোহার বেঞ্চ ও জানালার গ্রিল আসবাবপত্রসহ মূল্যবান মালামাল বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুল কমিটির সভাপতি ইদ্রিস মোল্যা ও পিকুল হোসেন নামে স্কুলটির এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে সালথা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নিয়ামত হোসেন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পিকুল হোসেন নামে ওই শিক্ষককে শোকজ করেছে। এ নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টির পুরাতন ঘরের ২৬ জোড়া বেঞ্চ, ২৫টি টিন, দু’টি দোলনা, বেশ কিছু লোহার অ্যাঙ্গেল (যার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা) কোনো টেন্ডার কিংবা কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে গত ১৯ জুলাই স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দেন। পরে এ ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে শনিবার (২৩ জুলাই) স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, স্কুলটির শিক্ষকরা এবং স্থানীয় লোকজন ডেকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সরকারি সম্পত্তি এভাবে বিক্রির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় তীব্র সমালোচনা দেখা দিয়েছে।  

এ ব্যাপারে অভিযোগ ওঠা স্কুলটির সহকারী শিক্ষক পিকুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এটা আমি একা বিক্রি করিনি। স্কুল কমিটির সভাপতিসহ ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যরা বসে রেজুলেশন করে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিক্রি করা হয়েছে।  

স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমি ওইদিন একটা জরুরি মিটিংয়ে স্কুলের বাইরে থাকায় ব্যাপারটি জানি না। তিনি দাবি করেন- তাকে না জানিয়েই আসবাবপত্রগুলো বিক্রি করা হয়েছে।  

বিষয়টি নিয়ে স্কুল কমিটির সভাপতি মো. ইদ্রিস মোল্যা বাংলানিউজকে বলেন, স্কুলে সবাইকে নিয়ে বসে রেজুলেশন করে আসবাবপত্রগুলো বিক্রি করা হয়েছে। সরকারি জিনিসপত্র টেন্ডার ছাড়া বিক্রি করা যায় কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই।  

তিনি আরও বলেন, আমরা ম্যানেজিং কমিটি, স্কুলটির সব শিক্ষক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সালথা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার বজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, স্কুলের পুরাতন একটি ঘরের কিছু আসবাবপত্র বিক্রি করেছে বলে জানতে পেরেছি। পরে বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্যারকে জানালে স্যার এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।  

সালথা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নিয়ামত হোসেন বলেন, আমাকে জানানো হলে তাকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া স্কুলটির আসবাবপত্র বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে।  

সরকারি জিনিসপত্র টেন্ডার ছাড়া বিক্রি করা যায় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে এ শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, এগুলো অল্প কিছু আসবাবপত্র ছিল, অন্যদিকে বড় ধরনের জিনিসপত্র না হলে এটা বিক্রি করলে সমস্যা কিসের?

এসব ব্যাপারে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. তাসলিমা আকতার বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনা আমার জানা ছিল না, আপনার মাধ্যমে জানলাম। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।