ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে হামলার ঘটনায় ৩ মামলা, আসামি ১৪৭৬

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে হামলার ঘটনায় ৩ মামলা, আসামি ১৪৭৬ ...

চট্টগ্রাম: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্যকাজে বাধাদান, সংঘাতের মাধ্যমে জনমনে ভীতিসঞ্চারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে তিনটি মামলা করা হয়েছে।  এ তিন মামলায় ১১৫০ জন থেকে ১৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনায় মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০০ থেকে ৭০০ জনকে, রঙ্গম সিনেমা হলের সামনের ঘটনায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাত এবং কোতোয়ালী মোড়ের ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করে অজ্ঞাত আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

পুলিশের উপর হামলা এবং গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত তিনটি মামলায় বুধবার (২৭ নভেম্বর) ২৭ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে আদালত চত্ত্বরে হামলার ঘটনায় ১১ জন এবং রঙ্গম সিনেমা হলের সামনে এবং কোতোয়ালী মোড়ের ঘটনায় ৮ জন করে আসামি। আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। এই আসামিদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যার সাথে জড়িত অভিযোগে ৭ আসামিও রয়েছে।  ২৭ জনের বাইরে গতরাতে ডিবি পুলিশ রাজীব ভট্টাচার্য প্রকাশ সুমন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তিনি ফটিকছড়ির উত্তর সর্তার আবদুল্লাহপুরের সুনীল ভট্টাচার্যের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হচ্ছে- জয় নাথ (১৯), রুমিত দাশ (৩২), নয়ন দাশ (২৮), গগন দাস (৩৪), সুমিত দাস (২০), আমান দাস (৩০), বিশাল দাস (২৬), সনু দাস মেথর (২৪), সুমন দাশ (২২), সাজু বৈদ্য (৩৯) ও অজয় সূত্রধর চৌধুরী (২৮), পার্থ চক্রবর্তী (৩৭), অপূর্ব শীল (২১), উজ্জল দাশ জনি (২৭), অপু চন্দ্র সাহা (৫৫), নিলয় দাশ (২৪), ধ্রুব দাশ (১৯), মো. দেলোয়ার হোসেন (২১), মোঃ নুরু (১৯), ইমন চক্রবর্তী (২৪), সুজন চন্দ্র দাশ (৩৪), সৌরভ দাশ (২৪), মো. রাকিব (২৩), সুমন দাস (৪০), রুপন দাশ (২৫), আহমদ হোসেন (২৫) ও মো. সাকিবুল আলম (১৯)।

গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করা হয়। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেন। তাঁরা এ সময় বিক্ষোভ শুরু করেন। তখন পুলিশ ও বিজিবি চেষ্টা করেও প্রিজন ভ্যান আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে কারাগারে নিতে পারেনি। পরে বেলা পৌনে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ এবং লাঠিপেটা শুরু করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। এরপর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলতে থাকে। পরে চিন্ময় কৃষ্ণকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে চিন্ময় অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে রঙ্গম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ফারেঙ্গা গ্রামের চতুর্থ দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।