ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

টিকিটের লাইনে এরা কারা?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৮
টিকিটের লাইনে এরা কারা? টিকিটের লাইনে বাসাবাড়ির কাজের বুয়ারা/ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ বড় জয় পাওয়ায় দর্শকদের প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে। আর তাইতো মধ্যরাত থেকে টিকিটের লাইনে ভিড় ক্রিকেট প্রেমীদের। তবে লাইনে আসল ক্রিকেটপ্রেমীদের থেকে দালালের প্রতিনিধির সংখ্যাই বেশি দেখা গেল। এর মধ্যে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করে এমন নারীদের সংখ্যা বেশি।

শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে মিরপুর সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে কর্নারে স্থাপিত অস্থায়ী টিকিট কাউন্টারে লম্বা লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছেন টিকিট প্রত্যাশীরা।

মিরপুর-৬ নম্বরের বাসিন্দা মাফিয়া বেগম।

বাসা বাড়িতে কাজ করেন তিনি। মাফিয়া বেগম, আলফাতুন্নেসা, আবুল কালামের মতো এ রকম আরো অনেকে টিকিট কেনার লাইনে দাঁড়িয়েছেন। যাদের টিকেট একটু পরে চলে যাবে টিকেট কালোবাজারীদের প্রতিনিধিদের হাতে!

সকালে মিরপুরের সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের টিকিট বিক্রির স্থান ঘুরে দেখা যায় ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা আজকের ম্যাচের টিকিট কেনার জন্য কয়েক হাজার ক্রিকেটপ্রেমী লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। তবে লাইনের শুরুর দিকে যারা আছেন তাদের বেশির ভাগই কালোবাজারিদের প্রতিনিধি। নারী ও পুরুষ উভয় লাইনের শুরুর দিকটা এসব ভুয়া টিকিট প্রত্যাশীদের দখলে। দুই লাইন মিলিয়ে শুরুর দিকে এদের সংখ্যা আনুমানিক শ’খানেক হবে। যাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি।

আশপাশের নিম্নআয়ের মানুষদের ব্যবহার করছে কালোবাজারিরা। এদের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করে পরে চড়া দামে বিক্রি করে তারা।  

টিকেট কালোবাজারিদের এসব প্রতিনিধিদের ছবি তুলতে গেলে অনেকে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে, অনেকে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।

ছবি তোলার সময় হঠাৎই ক্ষেপে ওঠে আবুল কালাম নামে একজন। তিনি চিৎকার করে বলছেন ছবি তুলছেন কেন? ছবি তুলবেন না।

বাক্য বিনিময়ের একপর্যায়ে আবুল কালাম ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, যারা পাইকারি হারে টিকেট কালোবাজারি করে, বড় বড় সিন্ডিকেট তাদের বিরুদ্ধে নিউজ করতে পারেন না। গরীব মানুষ কষ্ট করে কয়টা টাকা পাবে এটা নিয়ে আপনাদের মাথা ব্যথা।

মাফিয়া বেগমের নাম জানতে চাইলে তিনি জানান বলবেন না। নাম না বললে লাইনে থাকতে পারবেন না বলার পর উনি এই নাম বলেন।

খেলা দেখবেন কি জানতে চাইলে তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন। পরে বলেন, আমার মেয়ে আর মেয়ের জামাই খেলা দেখবে।  

লাইনে দাঁড়ানো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নারী বলেন, আসলে খেলা দেখবো না, টিকিট আমাদের পরিচিত বড় ভাই আছেন ওনাকে দিবো। তিনি আমাদের টাকার একটা অংশ দেবেন।

টিকিট কেনার পর বেশি দামে বিক্রি করতে গিয়ে বাংলানিউজের হাতে ধরা পড়েন ফাতেমা বেগম। তিনি দেড়শ’ টাকা করে টিকিট কিনে দেড় হাজার টাকা করে দু’টি বিক্রির জন্য দরদাম করছিলেন।

হাতেনাতে ধরা পড়ার পর তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পোলার জন্য টিকিট কিনেছি, ওনারা বলে বিক্রি করে দিতে।

রাত আড়াইটার সময় লাইনে দাঁড়ানো রাশিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ছেলেদের একটা দল এসে লাইনে দাঁড়ায়। আমরা সবার সামনে ছিলাম অথচ আমাদের ঠেলতে ঠেলতে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে।

হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে টিকিট পাবো কিনা জানি না। আর এসব ভুয়া লোকরা টিকিট কিনে কালোবাজারে বিক্রি করছে।

**রাত থেকে অপেক্ষা ‘সোনার হরিণ’ টিকিটের
বাংলাদেশ সময়: ১২২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৮
এমইউএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।