ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

এপ্রিলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮১ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৪
এপ্রিলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮১ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে

ঢাকা: ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম মাস পার করলো দেশবাসী। পুরো এপ্রিলজুড়ে তাপপ্রবাহে বৃষ্টিও হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ কম।



আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি বছরের গেল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮১ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে।

ঢাকায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ১৪৮ মিলিমিটার ধরা হলেও এপ্রিলে বৃষ্টি হয়েছে ১৪ মিলিমিটার, যা ৯১ শতাংশ কম; ময়মনসিংহে ১৬৪ মিলিমিটার ধরা হলেও বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৯ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮৮ শতাংশ কম; চট্টগ্রামে ১৪৩ মিলিমিটার ধরা হলে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২২ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮৪ শতাংশ কম; সিলেটে ২৯৬ মিলিমিটার ধরা হলেও ২৯৩ মিলিমিটার হয়েছে, স্বাভাবিকের চেয়ে ১ শতাংশ কম। এছাড়া রাজশাহীতে ৯৩ মিলিমিটার ধরা হলেও পুরো মাসে শূন্য মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়েছে ১শ শতাংশই কম, রংপুরে ১২৯ মিলিমিটার ধরা হলেও বৃষ্টি হয়েছে শূন্য মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১শ শতাংশ কম, খুলনায় ৭৯ শতাংশ ধরা হলেও বৃষ্টি হয়েছে ৯ শতাংশ, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮৯ শতাংশ কম, বরিশালে ১৩৩ মিলিমিটার ধরা হলেও বৃষ্টি হয়েছে ১৯ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮৬ শতাংশ কম, এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, এপ্রিলে দেশে গড় স্বাভাবিক বৃষ্টির পরিমাণ থাকার কথা ১৩৪ মিলিমিটার। সেখানে বৃষ্টি হয়েছে ২৬ মিলিমিটার, যা স্বভাবিকের চেয়ে ৮১ শতাংশ কম।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, মাসে সারা দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম ৮১ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় তাপীয় লঘুচাপ অবস্থান করায় দেশের অনেক স্থানের ওপর দিয়ে ১-১৯ এপ্রিল মাঝারি থেকে তীব্র এবং ২০-৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এছাড়া পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বায়ুপ্রবাহের সংযোগ ঘটায় ১ থেকে ৭, ১৩ থেকে ১৮, ২১, ২৩, ২৬ থেকে ২৮ এবং ৩০ এপ্রিল দেশে বিচ্ছিন্নভাবে বজ্রপাত ও অস্থায়ী দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে। এ মাসের ২৭ এপ্রিল সিলেটে এবং ২৮ এপ্রিল শ্রীমঙ্গলে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়।

এপ্রিলে মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় যশোরে, যা গত পাঁচ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এর আগে ১৯৯৫ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল আগের নয় বছরের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ঈশ্বদীতে, ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ২০১৪ সালের মে মাসে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৭২ সালের ১৮ মে, ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এপ্রিলে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিলে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তার আগের ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকায় ১৯৬৫ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছর টানা ৩৩ দিন ধরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা ৭৬ বছরের মধ্যে রেকর্ড।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৪
ইইউডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।