ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

এতো ‘ভয়ংকর’ শিলাবৃষ্টি আগে দেখেনি সিলেটের মানুষ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২৪
এতো ‘ভয়ংকর’ শিলাবৃষ্টি আগে দেখেনি সিলেটের মানুষ

সিলেট: সিলেটের ওপর দিয়ে হয়ে গেলো ভয়ংকর শিলা বৃষ্টি। মাত্র ৫ মিনিটের শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে ভয় ধরিয়েছে মানুষের মনে।

ভাবিয়ে তুলেছে অনেককে। শিলার আঘাতে মাথা ফেঁটেছে অনেকের। ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়েছে,  ভেঙেছে সিএনজি অটোরিকশার কাচ। বাধাগ্রস্ত হয়েছে যান চলাচল।

রোববার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঝড়ো হাওয়ায় শীতল হয়ে আসে প্রকৃতি। এরপর ঝড়ো বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। এক একটি শিলা যেন বড় বড় পাথর। শিলাবৃষ্টিতে চলাচল করা অসংখ্য যানবাহনের গ্লাস ভেঙে পড়েছে। ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।  কারও কারও বাসার টিনের চালা ফুটো ও জানালার কাচে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন খোলা জায়গায় ও রাস্তায় অবস্থান করা কেউ কেউ।

সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রচণ্ড শব্দে মনে হয়েছিল ঘরের টিন ছিদ্র হয়ে যাচ্ছে। এ রকম বড় শিলাবৃষ্টি আগে কখনো দেখেননি তারা।

এমন শিলা বৃষ্টি আগে কখনো দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন নগরের মীরাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, জন্মের পর থেকে এতো বড় বড় শিলা বৃষ্টি পড়তে দেখিনি। শীলার আঘাতে বেশ কয়েকটি যানবাহনের গ্লাস ভেঙে যেতে দেখেছেন তিনি। একেকটি শিলার ওজন ২০০ গ্রাম ছাড়িয়ে।

একই এলাকার পান-দোকানি বাদল মিয়া বলেন, ‘আমার বয়স ৫০ পেরিয়ে, কখনো এরকম বড় আকৃতির শিলা বৃষ্টি হয়েছে, জানা নেই। ’

সংবাদকর্মী শফিউল আলম বলেন, আমার দেখা মতে, এ ধরনের বড় বড় শিলা বৃষ্টি আগে কখনো হয়নি। এ রকম শিলা বৃষ্টি গ্রামাঞ্চলে হলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

এদিকে, মাত্র ৫ মিনিট শিলা বৃষ্টির পর সিলেট মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এতে প্রভাব পড়েছে ঈদ বাজারে। ক্রেতারারা ঈদের কেনাকাটা করতে স্বাভাবিক যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হয়েছেন, পড়েছেন ভোগান্তিতে।

নগর ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় ভয়াবহ শিল বৃষ্টি হওয়ার খার পাওয়া গেছে।

সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্থানেও শিলা বৃষ্টিতে অসংখ্য যানবাহনের কাচ ভেঙেছে। নগরের সুবহানীঘাটে শিলার আঘাতে গাড়ির কাচ ভেঙে এক নারী আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। একইভাবে বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শিলা পড়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙেছে। এসময় পথচারীদের অনেকে আহত হয়েছেন। কারও কারও মাথা ফেটেছে।  

এছাড়া শিলা বৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ।  রাত সাড়ে ১০ টার পর থেকে বিদ্যুৎহীন রয়েছে পুরো নগরী। গভীর রাত পৌনে ৩ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝড় ও শিলা বৃষ্টির কারণে নগরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ লাইনে ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে মেরামত কাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল না।

এর আগে আবহাওয়া অধিদফতর সিলেট বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল।  

বাংলাদেশ সময় : ০৭২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২৪
এনইউ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।