ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

আহা, লাল-সাদা-গোলাপি-বেগুনি গ্লাডিওলাস!

এরশাদুল আলম প্রিন্স, ল’ এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৭
আহা, লাল-সাদা-গোলাপি-বেগুনি গ্লাডিওলাস! অপরূপ গ্লাডিওলাসের ক্ষেত

যশোর থেকে বেনাপোল। শহরের ধূসরতা ক্ষীণ হয়ে ক্রমেই দৃষ্টির পুরোটাই দখল করে নেয় সবুজ। মাঝে মাঝে দেখা দেয় হলুদ, লাল, নীল, গোলাপি, বেগুনি আরও কত রঙ। পথের পাশে অযত্নে বেড়ে ওঠা বুনো ফুলগুলো আজ আর তেমন দেখা যায় না। ফসলের পাশাপাশি যা আছে, তার প্রায় পুরোটাই কৃষকের বাণিজ্যিক প্রয়াসে বেড়ে ওঠা গোলাপ অথবা অন্যকোনো ফুল। ফুলের সৌন্দর্য শাশ্বত, হোক সে বাণিজ্যিক বা অবাণিজ্যিক। যদিও শহরে ফুলের বাণিজ্য বিতানে সব ফুলের গন্ধই অভিন্ন।

সূর্য তখনও দিগন্তে হারিয়ে যায়নি। দিগন্তের খেজুর গাছের মাথা ছুঁই ছুঁই করছে।

তড়িঘড়ি করে মো. আবু হানিফ তখন ক্ষেতের আইল একটু ভেঙে পানি যাওয়ার পথ করে দিলেন। ক্ষেতের পাঁচ ভাগে পানি দেওয়া শেষ। আর দুই ভাগে পানি দিলেই পুরো ক্ষেতে পানি দেওয়া হবে। পানি দেওয়া শেষ হলে ছাগল তিনটি ঘরে তুলতে হবে। পাশের ফুলকপি ক্ষেতটাও একটা চক্কর মারতে হবে তাকে। ক্ষেতের পাশে মহাসড়ক। তার ওপারে কয়েকটি বাড়ি দেখা যায়-সেখানেই বাবা-মা আর দুই বোন নিয়ে থাকেন হানিফ।

আমাদের হাতেও সময় নেই। ঠিক সন্ধ্যায়ই শহরে ফিরতে হবে। তাই কথা না বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ফুল ফুটতে কয়দিন লাগে? ‘তা প্রায় তিন মাস লেগে যায়। মাঝে মাঝে আগেও হয়ে যায়। ঠিকমতো যত্ন-আত্মি করা লাগে’। কারা ফুল কেনে? ‘শহর থেকে লোক আইসা নিয়া যায়। আগেই ঠিক করা আছে। শহরে নিয়া ব্যাচে’। আপনারা কত পান? ‘বেশি ‍না। শ’য়ে হাজার। খরচও কম না। চারা কেনা, ওষুধ দেওয়া, সপ্তায় কমে একবার পানি দেওয়া। মাঝে মাঝে বেশিও লাগতে পারে। খাটনির কথা বাদই দিলাম’। বিভিন্ন রঙের গ্লাডিওলাস হয়ে থাকে, যেমন-লাল, সাদা, বেগুনি, গোলাপি।
গ্লাডিওলাস ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন চাষি
‍বাকি তিনমাস ক্ষেতে কী চাষ করেন? ঠিক নাই, একেক সময় একেকটা।

কৃষকের খাটনির কথা, শ্রমের কথা বাদই থাকে। ফুলের সুগন্ধের কাছে ঘামের গন্ধ সহজেই মিলিয়ে যায় আরকি! সেকথা থাক।

ফুলটির নাম গ্লাডিওলাস। যশোর-বেনাপোল সড়কের পাশে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে চোখে পড়বে এই ফুল। তবে চারা রোপণ করতে হয় অক্টোবরের দিকে। নির্দিষ্ট দূরত্বে সারিবদ্ধভাবে চারা রোপণ করতে হয়।

আবু হানিফ বছরের এই সময়টাতে বাবার জমিতে কম সময়ে নগদ ও বেশি লাভের আশায় গ্লাডিওলাস চাষ করেন। মাঝে মাঝে রজনীগন্ধা, গোলাপ ফুলও চাষ করেন তিনি।

শহরের বিয়ে, জন্মদিন, প্রেম-ভালোবাসা, রোগী দেখতে যাওয়া, ঘরের শোভা বর্ধন, অভ্যর্থনা জানানোসহ আরও নানা উপলক্ষে গ্লাডিওলাস লাগবেই।

যশোরে বিশেষ করে ঝিকরগাছায় এরকম আরও অনেকেই গ্লাডিওলাস চাষ করেন। এই অঞ্চলের ফুলের চাহিদা পূরণ করে ঢাকায়ও সরবরাহ করা হয় গ্লাডিওলাস। ফুলের চাহিদা পূরণে আবু হানিফও একজন অংশীদার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৬
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ