পেঁচার দ্বীপ (মারমেইড বিচ রিসোর্ট থেকে): কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্ট সুগন্ধা ও কলাতলী তিনটি বিচেই দিনে-রাতে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

 শনিবার (০৯ এপ্রিল) বিকেলে সমুদ্র তীরের মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা মারমেইড বিচ রিসোর্টে বাংলানিউজের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে পর্যটন’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী কমিশনার রায়হান কাজেমী এমনটাই জানিয়েছেন।

পর্যটন নগরীর অপার সম্ভাবনা ও বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সপ্তাহব্যাপী বাংলানিউজ কর্মীদের তৈরি বিভিন্ন প্রতিবেদনের ওপর এ আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, আমার দায়িত্বে কক্সবাজার ইনানী, মহেশখালী। পুরো এলাকা জুড়ে ১৩৯ জন ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে। স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে পুরো বিচের নিরাপত্তা কাজ করতে আমাদের কষ্ট হয়। তবুও আমরা কাজ করছি।
 
তিনি আরও বলেন, বিচে সমস্যা সৃষ্টি করে হকার, ঘোড়া ও ফটোগ্রাফারদের নিয়ে। তাদের ধরে জেল জরিমানা করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, এরা সবাই শিশু, ১৪ বছরের নিয়ে সবার বয়স। তাদের লকারেও রাখা যায় না, আবার মারাও যায় না। তবে তাদের কি করবো? উপায় না দেখে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। এতে তো কোনো সমাধান হচ্ছে না।
 
বেশ কিছু দিন আগে বিচের ফটোগ্রাফারদের নিয়ে একটি ট্রেনিং করানো হয়েছে যে, তারা পর্যটকদের সঙ্গে কিভাবে কথা বলবে, কেমন আচরণ হবে? তাদের পোশাক কেমন হবে? এইসব ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।
 
‘আমরা মায়ের মুখে হাসিও ফিরিয়ে দিয়ে থাকি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচে অনেক সময় ছোট্ট বাচ্চা হারিয়ে যায়। ট্যুরিস্ট পুলিশ তাদের উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়। এই পর্যন্ত বিচে প্রায় এক থেকে দেড়শত বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে।
 
তিনি আরও বলেন, বিচে কোনো ময়লা করা যাবেনা, আমি এমনভাবে নির্দেশ দিয়েছি যে কোনো দোকানের সামনে বা কোনো কিটকটের সামনে যদি ময়লা থাকে তবে তার দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর থেকে সবাই বিচে কিটকট পেছনে ময়লা ফেলার ঝুঁড়ি রাখা শুরু করছে।
 
তিনি বলেন, কোনো ট্যুরিস্ট পুলিশ হয়রানি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই পর্যন্ত দুর্নীতি ও অনিয়েমের জন্য ৫ জন ট্যুরিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৩৯ জন পুলিশকে এখান থেকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এখনও ৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
 
ভাল কাজ করতে গিয়ে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে এ ট্যুরিস্ট কর্মকর্তা বলেন, একদিন দেখি বিচে এক মা তার ছেলেকে দাঁড় করিয়ে ছবি তুলছে। তখন সমুদ্রে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত চলছিল। তখন আমি তাদের সেখান থেকে নিরাপদে চলে যেতে বলি। তখনই ওই মা বলে, একটা সেলফি তুলে নিই। এসময় তাকে বিপদ সংকেতের কথা বলতেই তিনি বলেন, আমি মরলে আপনার কী! এমন কথা শুনে তাকে প্রতিউত্তরে বলি, আপনি মরলে আমার কোনো সমস্যা নেই, তবে এখানে না, বাসায় গিয়ে যা করার করতে পারেন।
 
শনিবার (০৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় কক্সবাজারের সাগরপাড়ের খোলা হাওয়ায় শুরু হয়েছে বাংলানিউজ পর্যটন বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠান।

বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে রয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, একই জেলার ৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এবং ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এতে আরও অতিথি হিসেবে রয়েছেন কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, দৈনিক আজকের কক্সবাজার পত্রিকার সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়াম্যান, বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা চৌধুরী প্রমুখ।

‘পর্যটন বছর ২০১৬’ এর শুরু থেকে বাংলানিউজের ‘বছরজুড়ে দেশ ঘুরে’ শিরোনামে যে কর্মসূচি চলছে তারই ধারাবাহিকতায় এবারের আয়োজন ‘কক্সবাজারের পর্যটন’।

বাংলানিউজের এই উদ্যোগের সঙ্গী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, মারমেইড বিচ রিসোর্ট, জেবি গ্রুপ, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও সিটি ব্যাংক লিমিটেড।

আলোচনায় উপস্থিত আছেন বাংলানিউজের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন খান, সিনিয়র আউটপুট এডিটর জাকারিয়া মন্ডল, চিফ অব করেসপন্ডেন্টস সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, চট্টগ্রাম ব্যুরো এডিটর তপন চক্রবর্তী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট আদিত্য আরাফাত, ওয়েব ইন চার্জ অমিয় দত্ত ভৌমিক, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর আসিফ আজিজ, ডেপুটি চিফ অব ফটো করেসপন্ডেন্টস দেলোয়ার হোসেন বাদল, কান্ট্রি এডিটর শিমুল সুলতানা, লাইফস্টাইল বিভাগের এডিটর শারমীনা ইসলাম, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট সোহেল সারোয়ার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট শাহজাহান মোল্লা, ইসলাম বিভাগের এডিটর মুফতি এনায়েতুল্লাহ, নিউজরুম এডিটর (ফিচার এডিটর) শুভ্রনীল সাগর,  স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সাব্বির আহমেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও নিউজরুম এডিটর ইসমেত আরা।
 


বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৬
এসজেএ/এসএইচ

** ‘পর্যটনবান্ধব শহর গড়তে সবার সহযোগিতা দরকার’
** নগর পরিকল্পনাবিদদের রোডম্যাপে সাজাতে হবে কক্সবাজার
** কক্সবাজার নিয়ে শতবার্ষিক মহাপরিকল্পনা করতে হবে
** ‘প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে পর্যটন সম্ভাবনা তুলে এনেছি’
** সাগর পাড়ে শুরু বাংলানিউজের ‘কক্সবাজারের পর্যটন’
** বাংলানিউজে কক্সবাজারের পর্যটন চিত্র
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ