ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

পর্যটকদের হাতছানি দেয় ভোলা

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১৯
পর্যটকদের হাতছানি দেয় ভোলা

ভোলা: জেলা শহরজুড়ে নান্দনিক স্থাপনা, পাশাপাশি গোটা ভোলাই যেন পর্যটনের বাঁধাই করা ফ্রেম। এই ফ্রেম যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে আশপাশ এমনকি গোটা দেশের পর্যটকদের।

ঈদ ঘিরে ভোলা জেলা পরিষদ চত্বর আর সরকারি স্কুলমাঠ এখন হয়ে উঠেছে আড্ডাবাজদের প্রিয় জায়গা। এখানে অবসর সময় কাটানোর জন্য তাই তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি সব বয়সী মানুষ ভিড় করেন।

আধুনিক সাজে সজ্জিত ইলিশ ও বক ফোয়ারা দেখলে মন জুড়িয়ে যায় যে কারও।

পৌরসভা ও জেলা পরিষদ চত্বরের মাঝামাঝি পুকুর পাড়েও পর্যটকদের আকর্ষণ। লাল, নীল আর সবুজ বাতিতে এক নান্দনিক পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি স্কুল মাঠের আদলে টাউন স্কুল মাঠেও সাজানো হয়েছে। শিশুদের জন্য রয়েছে নানা রাইডস।

মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য জানতে উপ-শহর বাংলাবাজারে নির্মাণ করা হয়েছে স্বাধীনতা জাদুঘর। এখানেও প্রতিদিন হাজারো মানুষ ছুটে আসেন।

তিনতলা বিশিষ্ট আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এ জাদুঘরে নিচ তলায় লাইব্রেরি, অডিটোরিয়াম এবং প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের আলোকে সাজানো হয়েছে। এতে ইতিহাস-ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ৪৭-এ দেশভাগ ও ভাষা আন্দোলনের দুর্লভ ছবি ও তথ্য রয়েছে। অপর পাশে রয়েছে লাইব্রেরি ও গবেষণাগার।

এছাড়া একই তলায় রয়েছে মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে হলরুম। যেখানে প্রদর্শিত হয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নির্মিত বিভিন্ন প্রামাণ্য চিত্র ও চলচ্চিত্র। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত ইতিহাসের মুহূর্তগুলোর চিত্রকল্প। তৃতীয় তলায় রয়েছে ৫৮ ও ৬৬-এর আন্দোলন এছাড়া ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ৭ মার্চের ভাষণসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের আত্মত্যাগের দুর্লভ সব আলোকচিত্র।

জাদুঘরটির একটি অংশে বাঙালির লোকজ ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। এখনে দর্শনার্থীরা ডিজিটাল টাচ স্ক্রিন ব্যবহার করে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ও তথ্য জানতে পারছেন।

বাংলাবাজার থেকে একটু দূরে রয়েছে দ্বীপজেলার সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু বাঘমারা ব্রিজ। অবসর সময় কাটানোর জন্য এ সেতু অন্যতম প্রিয় গন্তব্য বিনোদনপ্রেমীদের।

প্রকৃতির আরেক সৌন্দর্যের লীলাভূমি তুলাতলী পর্যটন কেন্দ্র। নির্মল বাতাস আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে এখানে ছুটে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। এছাড়া খেয়াঘাট ব্রিজ, ভেলুমিয়া ও শান্তিরহাট ব্রিজসহ দর্শনীয় স্থানও ডেকে চলে পর্যটকদের।

এই ডাকে দূর-দূরান্ত থেকে প্রিয় পর্যটন স্পটগুলোতে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ। ঈদের ছুটিতে এই ছুটে আসা মানুষের স্রোত আরও বেড়েছে। পর্যটকরা বলছেন, পুরো ভোলা যেন একটি পর্যটনের নগরী। একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, তেমনি অবসর-আড্ডার দারুণ সময় কাটানোর জন্য মনোরম পরিবেশ মোহিত করবে যে কাউকে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৭ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৯
জিপি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।