ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

বন্দরে বা‌ণি‌জ্যে ব্যস্ত, শান্ত অপ্সরী নিং‌বো সি‌টি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৮
বন্দরে বা‌ণি‌জ্যে ব্যস্ত, শান্ত অপ্সরী নিং‌বো সি‌টি নিংবো শহর কাছে টানবে যে কাউকেই

চী‌নের ‌নিং‌বো সি‌টি থে‌কে: চী‌নে এ‌সে যে শহ‌রের প্রে‌মে পড়‌তে হ‌লো তার নাম নিংবো। নিরব, প‌রিপা‌টি, প্রশস্ত পিচডালা বিস্তৃত পথ, আ‌লো ঝলমল শহর যেন অপ্সরী! ‌কিন্তু ভা‌লোবাসার ক্ষণটা বে‌শি হ‌লো না। তাতে শেষ হ‌য়েও শেষ হ‌লো না! 

আবার আস‌তে হ‌বো নিং‌বো সি‌টির টা‌নে...। সব‌চে‌য়ে বে‌শি পণ্য প‌রিবহনকারী বন্দর আর প্রযু‌ক্তিপণ্য প্র‌তিষ্ঠা‌নের অ‌ফি‌সে ভরা নিংবো ব্যস্ত হ‌লেও বেশ শান্ত।

মঙ্গলবার (০৯ জানুয়া‌রি) বিকেল। রোদ ঝলম‌লে দি‌নেও কাঁপুনি ধরা ঠাণ্ডা।  নিং‌বো শহর দা‌পি‌য়ে বেড়া‌চ্ছে শীতল হাওয়া। অপর‌দি‌কে রো‌দের আলোময় ঝি‌লিক শহরটজু‌ড়ে সুউচ্চ অট্টা‌লিকায় আলো ফে‌লে চল‌ছে। কিন্তু কোনো শব্দ নেই। লোকজনেরও তেমন আনাগোনা নেই। যতটা পথঘাট তার তুলনায় মানুষ আর গা‌ড়ির সংখ্যা কমই বলা যায়।

তবে সন্ধ্যার ঠিক আ‌গে আ‌গে গা‌ড়ির সংখ্যা বেড়েছে। ফ্লাইওভার আর বড় রাস্তার মো‌ড়ে যানজটও বেঁ‌ধে‌ছে।  

নিং‌বো সি‌টির ভেত‌রে যাওয়ার প‌থে দেখা গে‌লো খা‌লি প‌ড়ে আ‌ছে যাত্রী ছাউনি। তারপা‌শে শত শত বাইসাই‌কেল। মা‌ঝে মধ্যে চল‌ছে যানবাহন। বে‌শিরভাগই  প্রাই‌ভেটকার। তবে নেই কোনো হর্ন।  

নিংবো শহরে সূর্য ডোবা মুর্হূতে মায়াবী রূপএসব দে‌খেই শহরটার প্রে‌মে প‌ড়ে গে‌ছি, তা কিন্তু নয়। শহর‌টির চারপাশ ঘু‌রে বয়ে গে‌ছে নদী, খাল। তী‌রে লাগা‌নো আছে অসংখ্য বনসাই। রাস্তার ধা‌রে ধারে পার্ক। শুধু যেন নেই প্রে‌মিক-প্রে‌মিকা! 

এসব কার‌ণে এ শহর‌কে প্রে‌মিকা ভে‌বে থে‌কে যে‌তে মন চাই‌বে। কিন্তু তা হ‌চ্ছে না। মাত্র ৩ ঘণ্টা শে‌ষে ট্রেন ধ‌রে চল‌ছি চী‌নের দ‌ক্ষিণ দি‌কে।  

এ‌তো সভ্য এ শহ‌রের টান ম‌নে গেঁ‌থে থাক‌বে। চীন এ‌লে নিং‌বো আস‌তে চাই‌বে মন।  

সন্ধ্যার আ‌লো জ্ব‌লে ওঠার স‌ঙ্গেই নিং‌বো ছে‌ড়ে গে‌ছি। দি‌নের আ‌লোয় আর সন্ধ্যার ঝি‌কি‌মি‌কি‌তে সাংহাই‌য়ের ম‌তো অ‌দেখা থাক‌লো নিং‌বোর এ‌পিট-ও‌পিট।  

ত‌বে সামনে পড়া নিং‌বো শহর ও সৌন্দর্য্য, গোছা‌নো পার্ক, ফুটপাত যে আকর্ষণ ক‌রে‌ছে তা অ‌নেক‌দিন ম‌নে রাখার ম‌তো।  

স্মার্ট‌ফো‌নের লে‌ন্সে কিছুটা কে‌ড়ে আনা হয়েছে। ত‌বে থে‌মে থেমে সু‌স্থির, শান্ত ম‌নে নিং‌বোকে দেখ‌তে চী‌নে আসতে হ‌বে আবারও।  

‌নিং‌বো শুধু সুন্দ‌রের শহর নয়। বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রান্স-ওশেনিক ব্রিজ র‌য়েছে এখানে। সাগরের অলঙ্ঘনীয় বাঁধাকে ডিঙিয়ে চীনের দু’টি প্রদেশকে সংযুক্ত করেছে এই ব্রিজ। দীর্ঘ দশ বছরে চীনা একটি কোম্পানি এর ‌নির্মাণ কাজ শেষ ক‌রে।  

বাংলাদে‌শের পদ্মাসেতুর ম‌তো নিংবো ট্রান্স-ওশেনিক ব্রিজ নির্মা‌ণে বেশ চ্যা‌লেঞ্জ নি‌তে হ‌য়ে‌ছি‌লো চীন‌কে। কারণ এখানের স্রোত এতো ভয়াবহ ছিলো যে ঢেউ প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতা ছাড়িয়ে যেতো। ২০০৮ সালে সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এটি নির্মাণে প্রথমবারের মতো স্টিলের পিলার ব্যবহার করা হয়।  

নিং‌বো এখন প্রযু‌ক্তিভি‌ত্তিক বি‌ভিন্ন পণ্য উৎপাদন ক‌রে চীনের বা‌ণি‌জ্যিক গুরুত্ব বাড়ি‌য়ে তুলে‌ছে। অ‌নেক প্রযু‌ক্তি প্র‌তিষ্ঠা‌নের বড় বড় অ‌ফিস নিং‌বো‌তে। আর পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর নগরী এ নিং‌বো। নিংবোর এখন বড় প‌রিচয় এ‌টি পৃথিবীর সব কার্গো বন্দরের মধ্যে সব‌চে‌য়ে বে‌শি পণ্য প‌রিবহনকারী।  

অদেখা থাকলো সাংহাইয়ের আলো আর গ‌তির রহস্য
চীনাদের অর্ধসেদ্ধ খাবারের স্বাদ
কনফু‌সিয়া‌সের ছু ফু শহরে 
শত ব্যস্ততায় আতিথেয়তায় অনন্য চীনারা
ঢাকার বিমানবন্দ‌র ছা‌ড়ি‌য়ে চী‌নের রেল স্টেশন!
সুজিয়ানায় সাইবেরীয় শীতে তুষারখেলা  
বুলেট ট্রেনে ভেসে সাংহাই ছাড়িয়ে

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
এসএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।