ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

ফের পর্যটকে মুখরিত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৭
ফের পর্যটকে মুখরিত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত-ছবি-বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড আবারও পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হতে শুরু করেছে। পাথারিয়া পাহাড় থেকে উৎসরিত এবং মালিমাতনগর চা বাগান ঘেঁষে প্রবাহিত জলপ্রপাতটি যেন এক নতুন রূপ ধারণ করেছে। ঈদের ছুটিতে মাধবকুণ্ডের অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখতে ভিড় করেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটক। 

মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে অবস্থিত এটি। সেখানে প্রায় ২ শ’ ফুট উচ্চতা থেকে প্রতি সেকেন্ড ৫ শত কিউসেক পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত এলাকায় ২০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে প্রবেশ করতে হবে।  

কুলাউড়া হয়ে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত যেতে হলে মিনিবাস ও দূরপাল্লার বাসে করে যাওয়া যাবে। ভেঙে ভেঙে যেতে চাইলে কুলাউড়া থেকে মিনিবাসে কাঁঠালতলী গিয়ে সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাতে করে যাওয়া যাবে।  

জলপ্রপাতে প্রবেশের যে জায়গাটুকু দেবে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ ছিল সেটা সার‍াতে বন বিভাগ দুই মাসের উপরে সময় নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন মাধবকুণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা অভিযোগ করেন, যেখানে এক সপ্তাহে মেরামত করা যেত সেখানে অধিক সময় নিয়ে জনগণকে বিনোদন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।  

পর্যটকে মুখরিত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত-ছবি-বাংলানিউজকাঁঠালতলী থেকে যে ৮ কিলোমিটার রাস্তা মরণফাঁদ ছিল সেটিও মেরামত করা হয়েছে। যেখানে ১ ঘণ্টা সময় লাগতো এখন সেখানে ১৫ মিনিট সময় লাগছে। মাধবকুণ্ড এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী সাহিদ আহমদ ও সাজু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে ৩০ টাকা করে ভাড়া নিলেও পর্যটকদের কাছ থেকে ৪০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

মাধবকুণ্ড-কাঁঠালতলী লাইনের সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের সভাপতি আব্দুল জব্বার বাংলানিউজকে বলেন, আগে রাস্তা খারাপ থাকায় বেশি ভাড়া নেওয়া হতো তবে এখন ৩০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। বাইরের লোকের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা অস্বীকার করেন তিনি।

মাধবকুণ্ডে বেড়াতে আসা কক্সবাজারের কৃষ্ণ ধর এক খণ্ড পাথর নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ জানতে চাইলে বলেন, মাধবকুণ্ড তাদের ধর্মীয় স্থান। এজন্য এটা সংগ্রহ করেছেন।

পরিবার নিয়ে জলপ্রপাত দেখতে এসেছেন টুম্পা ধর। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, জলপ্রপাতটি খুবই মনোরম। এখানে বেড়াতে এসে অন্তর জুড়িয়ে গেছে।

পর্যটকে মুখরিত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত-ছবি-বাংলানিউজছড়ার পাশের বিনোদন এলাকার দায়িত্বে থাকা শামিম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, তারা এ এলাকাটা সাব লিজ নিয়ে টিকেটের মাধ্যমে লোকজন প্রবেশ করান। এখানে পূর্ণ বয়স্কদের কাছ থেকে ১০ টাকা এবং শিক্ষার্থীদের কার্ড দেখানো সাপেক্ষে ৫ টাকা রসিদের মাধ্যমে নেওয়া হয়।

ইজারাদারদের পক্ষে মূল ফটকের দায়িত্বে থাকা সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন অনেক পর্যটক এসেছে। মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতটি খুলে দেওয়া হয়েছে এ খবর এখনও অনেকে জানেন না। ৩ মাস বন্ধ থাকাতে অনেক লোকসান হয়েছে।

পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পর্যটন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ভানু লাল রায় ও এএসআই মুক্তার আলী বাংলানিউজকে জানান, তারা পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। ঝর্নার পানি বেশি থাকাতে পর্যটকদের নজরদারিতে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মাধবকুণ্ড মন্দির ও পর্যটন এলাকার উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনুকূল দেব বাংলানিউজকে বলেন, ৩ মাসের মতো এটি বন্ধ ছিল। তাই তীর্থ স্থানটিও দর্শন করতে পারেনি অনেকে।

বনবিভাগের বড়লেখা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জার শেখর রঞ্জন দাস বাংলানিউজকে বলেন, মেরামতের টাকা বনবিভাগ দিয়েছে। কিন্তু কাজ করেছে এলজিইডি ডিপার্টমেন্ট। দেবে যাওয়া জায়গাটি প্রথম দফায় কাজ করালে আবারও দেবে যায়। দ্বিতীয়বার এটা মেরামত করাতে একটু দেরি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩,২০১৭
আরআর


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।