ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

আমি পরিচালক-নির্ভর অভিনয়শিল্পী : তিশা

জান্নাতুল মাওয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৬
আমি পরিচালক-নির্ভর অভিনয়শিল্পী : তিশা নুসরাত ইমরোজ তিশা-ছবি: নূর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বড়পর্দার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছোটপর্দায়ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশার সমান বিচরণ। কয়েক বছর ধরে বিশেষ দিনগুলোতে তার নাটকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো।

আসন্ন ঈদুল আজহায়ও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

সম্প্রতি মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় বলিউড অভিনেতা ইরফান খানের সঙ্গে ‘ডুব’ ছবিতে অভিনয় করেছেন তিশা। দৃশ্যধারণ শেষে এখন এর ডাবিংয়ের কাজ চলছে। ছবিটি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় গেলো রোজার ঈদে খুব বেশি কাজ করা হয়নি তার। তবে এবার সংখ্যাটা বেড়েছে।

এর মধ্যে ক’দিন আগে ইমেল হক পরিচালিত ‘অনলাইন ফাইট’ নামের একটি নাটকের শুটিংয়ে অংশ নেন তিশা। উত্তরার আশ্রয় বাড়িতে বাংলানিউজের সঙ্গে আড্ডা দিলেন তিনি। পুরো শরীরে উল্কি আঁকা, কালো রঙের থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট, সাদা-কালো টি-শার্টে অন্যরকম এক তিশা।

অবসরে তিশা কার্টুন দেখেন আর গল্প করেন। মোবাইলে খেলেন গেমস। অন্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় থাকলেও তিনি আছেন উল্টোস্রোতে। ‘অনলাইন ফাইট’ নাটকটিও এসব মাধ্যমকে ঘিরে। তাই এ প্রসঙ্গ ধরেই শুরু হলো সাক্ষাৎকার।

বাংলানিউজ: এখন তো ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার বাড়ানোর প্রতিযোগিতা চলছে। অথচ আপনি কোথাও নেই!
তিশা:
আমার অভিনয় ভালো হলে এমনিতেই ভক্ত বাড়বে। আর আমার দুনিয়া হলো পরিবার। নিজেকে ও পরিবারকে নিয়েই ভাবতে চাই।  কেউ যদি বলে আমি প্রযুক্তিবান্ধব নই, তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। ফেসবুক ব্যবহার করলে কে কি করছে, না চাইলেও আমাকে দেখতে হবে। এসব কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমএড়িয়ে চলি। আমি কারও সব খোঁজখবর রাখতে চাই না। আমার পরিবার আর অভিনয় নিয়েই বেশ ভালো আছি।

বাংলানিউজ: বুঝলাম। ‘অনলাইন ফাইট’-এর জন্য উল্কি আঁকিয়েছেন। প্রতিটি নাটকের জন্য কি এরকম বিশেষ প্রস্তুতি নেন?
তিশা:
হ্যাঁ। যতোটা সম্ভব পূর্ব প্রস্তুতি নিতে চাই। গল্পগুলো জেনে চরিত্রগুলো বোঝার চেষ্টা করি। রোজার ঈদে খুব কম কাজ করেছি। তবে এবারের ঈদে অনেক কাজ করতে চেয়েছি। ভালো কিছু গল্পও পেয়েছি। গত এক মাস ধরে সেগুলোর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত আছি।

বাংলানিউজ: নাটক নির্বাচনের বেলায় কোন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেন?
তিশা:
প্রথমত, গল্পকে গুরুত্ব দেই। দ্বিতীয়ত, কার পরিচালনায় থাকবো তা যাচাই করি। কারণ পরিচালনা ভালো হলেই কেবল কোনো একটা গল্প চমৎকারভাবে ফুটে ওঠে। তাছাড়া কোন পরিচালক আমাকে দিয়ে ভালোভাবে কাজটি করিয়ে নিতে পারবেন সেটিও দেখি। আসলে অভিনয়শিল্পীদের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে কাজ আদায়ের গুণাবলিও থাকতে হয় পরিচালকদের।

বাংলানিউজ: কোরবানির ঈদে কয়টি নাটকে দেখা যেতে পারে আপনাকে?
তিশা:
এবারের ঈদ উপলক্ষে বেশকিছু কাজ করেছি। এর মধ্যে মাসুদ সেজানের ‘তালগাছের গল্প’ (রিয়াজ), ইমেল হকের ‘অনলাইন ফাইট’ (জন কবির), আবু রায়হানের ‘দুই পাখি’ ও ‘বিউটি বোট’ (জাহিদ হাসান), অনন্য ইমনের ‘কামব্যাক তমিশ্রা’ (আফরান নিশো) অন্যতম। এ ছাড়া ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর খায়রুল পাপনের ‘জিম্মি’ (নাঈম) নাটকে অভিনয় করবো।

বাংলানিউজ: এখন তরুণ নির্মাতাদের নাটকেই বেশি কাজ করছেন...
তিশা:
নবীন-প্রবীণ সব পরিচালকের সঙ্গেই কমবেশি কাজ করছি। ওই যে বললাম আমাকে দিয়ে যারা কাজটি করিয়ে নিতে পারে, তাদের নাটক-টেলিছবিই হাতে নিই। তবে নতুনদের মধ্যে বেশ উদ্দীপনা দেখি। তারা নতুন নতুন গল্প বলার চেষ্টা করছে। অনেকে অল্প সময়ে সুনাম কুড়িয়েছে।

বাংলানিউজ: এবার ছবি প্রসঙ্গে আসি। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ডুব’ ছবির জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।
তিশা:
অবশ্যই। ঘুম থেকে উঠে রাত পর্যন্ত চরিত্রের মধ্যে ডুবে থাকতাম। ‘ডুব’ ছবির জন্য ডুবেই ছিলাম বলতে পারেন। শুটিংয়ের আগে থেকেই অনেকবার মহড়া করেছি।

বাংলানিউজ: চলচ্চিত্র তারকারা নাটকে নিয়মিত মুখ দেখালে দর্শকচাহিদা তৈরি হয় না বলে একটা কথা চল আছে।  
তিশা:
দেখুন, আমার শেকড় হলো ছোটপর্দা। আমি সেটি সবসময় আঁকড়ে ধরে থাকতে চাই। নাটকে অভিনয়ে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করি। চলচ্চিত্রে কাজ করলে যে নাটকে কাজ করা যাবে না, এটা আমি মনে করি না। অভিনয় তো অভিনয়ই। আমি আসলে ভালো কিছু গল্পে কাজ করতে চাই। কয়টা নাটক করছি সেটা আমার কাছে ব্যাপার নয়, কিন্তু কতো ভালো গল্পে কাজ করছি সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলানিউজ: ‘ডুব’ ছবিতে ইরফান খানের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। এ অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো?
তিশা:
তিনি অনেক বড় অভিনেতা সন্দেহ নেই। কিন্তু শুটিংয়ের প্রথম দিনেই আমার ভয় কাটিয়ে দিলেন তিনি। তার মুখ থেকে শুনলাম, ‘মনে মনে তুমি যেটা করবে ভাববে, তা-ই করে দেখাবে। ’ খুবই আনন্দ নিয়ে শুটিং করেছি তার সঙ্গে। বাংলা ভাষা রপ্ত করার ব্যাপারেও তিনি ছিলেন দারুণ মনোযোগী। এ ছবিতে বাংলায় সংলাপ বলতে হয়েছে তাকে।   তিনি নিজেও সংলাপ বানিয়ে বলার চেষ্টা করতেন। যখন পারতেন না হিন্দিতে বলতেন। তখন পুরো ইউনিট হাসতো। তার সঙ্গে অনেক মজা করেছি, হেসেছি, খেলেছি। প্রায়ই ব্যাডমিন্টন খেলতাম আমরা।

বাংলানিউজ: আপনি তো সামনে ‘তোর নামে লিখেছি হৃদয়’ নামের একটি ছবিতে কাজ করবেন। এর গল্পভাবনাও আপনার। কাজ শুরু করবেন কবে?
তিশা:
অনন্য মামুনের পরিচালনায় এ ছবির শুটিং শুরু হবে ঈদের পরপরই। এতে আমার সহশিল্পী হিসেবে থাকছেন ওপার বাংলার অভিনেতা সোহম। শুটিং শুরু হলেই ছবিটি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে সব জানানো হবে।

বাংলানিউজ: শেষ প্রশ্ন করি আপনার জনপ্রিয়তা নিয়ে। অনেকটা সময় সুঅভিনেত্রীর সুনাম ধরে রেখেছেন। কীভাবে সম্ভব হচ্ছে?
তিশা:
সত্যি বলতে আমি অলস প্রকৃতির মানুষ। কিছুটা অলসতা কাজ করে আমার ভেতর। বলা যায় আমি ডিরেক্টর-নির্ভর আর্টিস্ট। পরিচালকের কাছে নাটক কিংবা ছবির গল্প শুনে চরিত্র নিয়ে ভাবি। পরিচালকরা পর্দায় যেভাবে চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে বলেন, আমি শুধু সেভাবেই চেষ্টা করে যাই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৬
জেএমএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ