ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

জমজমাট লড়াইয়ের ম্যাচ জিতে সেরা দুইয়ে থাকা নিশ্চিত রংপুরের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪
জমজমাট লড়াইয়ের ম্যাচ জিতে সেরা দুইয়ে থাকা নিশ্চিত রংপুরের

দারুণ শুরুর পর ফরচুন বরিশালের ব্যাটিংয়ে ধ্বস নামালেন আবু হায়দার রনি। তিন ওভারের ভেতরেই তিনি নিলেন পাঁচ উইকেট।

বরিশালের রান হলো না খুব বেশি। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুর পর ছন্দপতন হয় রংপুর রাইডার্সেরও। তবে বরিশালের ক্যাচ মিসের সুযোগে ভালো অবস্থানে চলে যায় রংপুর। কিন্তু এরপর আবার উইকেট নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলে বরিশাল। জমজমাট লড়াইয়ের পর জিতে রংপুরই।  

সোমবার বিপিএলের ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ১ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স। শুরুতে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান করে বরিশাল। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৩ বল আগে জয় পায় রংপুর। এ নিয়ে টানা আট ও সবমিলিয়ে ৯ জয় নিয়ে সেরা দুইয়ে থেকে কোয়ালিফায়ার খেলা নিশ্চিত করলো ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ১১ ম্যাচের   পাঁচটিতে হারলেও এখনও তিনে আছে বরিশাল।  

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় বরিশাল। ৩ ওভারে তারা তোলে ৩৮ রান। চতুর্থ ওভার করতে আসেন সাকিব আল হাসান। এই অলরাউন্ডার এসে প্রথম বলেই আউট করেন তামিম ইকবালকে। তার টার্ন করা বল মারতে গিয়ে বোলারের কাছেই ক্যাচ দিচ্ছিলেন তামিম। তবে এক্সট্রা কাভার থেকে এসে ক্যাচ ধরেন মুমিনুল। ২০ বলে ৩৩ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তামিমকে।  

এরপরও বরিশালের ইনিংস এগিয়ে যাচ্ছিল ভালোভাবেই। ৪৫ বলে ৭২ রানের জুটি গড়েন কাইল মেয়ার্স ও টম বেন্টন। ১২তম ওভারের চতুর্থ বলে এসে বেন্টনকে আউট করেন নিশাম। ২৬ বলে ২৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ইংলিশ ক্রিকেটার।  

পরের ওভারে এসে বরিশালের ব্যাটিং রীতিমতো ধ্বসিয়ে দেন আবু হায়দার রনি। এক স্পেলেই পাঁচ উইকেট নেন তিনি। এবারের বিপিএলে এর আগে কেবল এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন রনি, করেছিলেন এক ওভার। সেই বোলারই বরিশালের জন্য হয়ে গেলেন বিধ্বংসী।  

তার শুরুটা হয় মুশফিকুর রহিমকে দিয়ে। তার অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রনি। ৩ বলে তার রান তখন পাঁচ। এক বল পর সৌম্য সরকারকে বোল্ড করেন রনি। ওই ওভারেই তুলে নেন রংপুরের বিপদের কারণ হওয়া মেয়ার্সের উইকেট। তার ক্যাচ নিজেই ধরেন রান,  ৪ চার ও ৩ ছক্কায় তখন ২৭ বলে ৪৬ রান মেয়ার্সের।

প্রথম ওভারেই তিন উইকেট পাওয়া রনি দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে আউট করেন। ৯ বলে ৯ রান করা এই ব্যাটার ক্যাচ দেন শামীম হোসেন। টানা তৃতীয় ওভারে এসে উইকেট নেন রনি। নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে এই পেসার আউট করেন মেহেদী হাসান মিরাজকে। ৮ বলে তখন ৩ রান করেছেন তিনি। মিরাজকে ফিরিয়ে তৃতীয় বোলার হিসেবে ফাইফার পান রনি।  

রনির এমন দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর দারুণ শুরুর পরও থমকে যায় বরিশালের ইনিংস। যদিও অলআউট হয়নি তারা। ৪ ওভারে স্রেফ ১২ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন আবু হায়দার রনি। ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে দুই উইকেট পান হাসান মাহমুদ। একটি করে উইকেট নেন সাকিব ও নিশাম।  

রান তাড়ায় নেমে ২১ রান এসে প্রথম উইকেট হারায় রংপুর। আসরের মাঝপথে এসে দলে নেওয়া মুমিনুল হককে এদিন একাদশেও সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু ২ বলে শূন্য রানে কাইল মেয়ার্সের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুমিনুল। এরপর ২৩ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন সাকিব ও ব্রেন্ডন কিং।  

পুরো আসরজুড়ে সেভাবে পারফর্ম করতে পারা কিং এদিন ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ২২ বলে ৪৫ রান করে আউট হন মিরাজের বলে স্টাম্পিং হয়ে। কিংকে হারানোর পর কিছুটা বিপদেই পড়ে যায় রংপুর। ১৩ রানের ব্যবধানে তারা হারায় চার উইকেট।  

৪ চার ও ১ ছক্কায় ১৫ বলে ১৯ রান করা সাকিব আল হাসানও ছিলেন এর মধ্যে। ৮৭ রানে রংপুরের পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ম্যাচটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারতো বরিশালের। কিন্তু মিরাজের বলে লং অনে নিশামের ক্যাচ ফেলে দেন প্রিতম কুমার।  

১৬তম ওভারে গিয়ে আউট হওয়ার আগে নিশাম ১৭ বলে ২৮ রান করে ওভেড ম্যাককোয়ের শিকার হন তিনি। যদিও পরে ম্যাচ জমে উঠে। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে গিয়ে ৫ বলে কোনো রান না করতে পারা আবু হায়দার রনিকে আউট করেন মেয়ার্স।  

ম্যাচ তখন পুরো জমে উঠে। কারণ নবম উইকেট চলে গিয়েছিল রংপুরের। শেষ ৯ বলে তখন রংপুরের দরকার দুই রান। আর বরিশালের এক উইকেট। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে এক রান নেন শামীম। স্ট্রাইকে এসে তৃতীয় বলে চার হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন হাসান মাহমুদ।  

বাংলাদেশ সময়: ২২১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪
এমএইচবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।