ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

বাজেটে পুঁজিবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু নেই

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১৭
বাজেটে পুঁজিবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু নেই শাকিল রিজভী

ঢাকা: ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু নেই বরং পরোক্ষভাবে বাজারকে গতিশীল করতে বেশ কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি ও পরিচালক শাকিল রিজভী ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সহ-সভাপতি খুজিস্তা নূর-ই নাহরীন মুন্নী।

শাকিল রিজভী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্টক এক্সচেঞ্জ ও মার্চেন্ট ব্যাংকস অ্যাসোসিয়েশনসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারকে গতিশীল রাখ‍ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় যেসব প্রস্তাবনা দিয়েছিলো তার কোনোটাই রাখা হয়নি।

তবে পরোক্ষভাবে পোশাক খাতের ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে, ব্যাংকে ডিপোজিট হিসেবে অলস পড়ে থাকা হাজার হাজার কোটি টাকা যাতে সচল হয়। সেই লক্ষ্যে আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানো হচ্ছে। পরোক্ষভাবে এগুলো পুঁজিবাজারে জন্য ইতিবাচক।

খুজিস্তা নূর ই নাহরীন মুন্নী বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল কতে বাজেটে আমাদের প্রস্ত‍াবগুলো ছিলো। আমাদের প্রস্তাবনার কোনো কিছু রাখা হয়নি। এটা হতাশাজনক। তবে নত‍ুন করে এমন কিছু আরোপ হয়নি যাতে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বরং পরোক্ষভাবে বেশকিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুর রহমান মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে যে ধরনের কৌশলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো তার কোনো বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার (১ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার’ স্লোগানে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।

বাজট বক্তৃতায় তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে স্টার্ট-আপ ও নতুন কোম্পানির মূলধনের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুল ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের লেনদেনের স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে আধুনিক সার্ভেল্যান্স সিস্টেমও ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পুঁজি গঠনে সহায়তার লক্ষ্যে একটি স্মল ক্যাপ (স্বল্প মূলধনী) প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন রুল ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে।

‘পাশাপাশি নতুন প্রোডাক্ট ‘এক্সচেঞ্জ ট্রেড ফান্ড (ইটিএফ)’ চালুর লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইটিএফ) রুল ২০১৬’- বলেন মুহিত।

মন্ত্রী জানান, পুঁজিবাজার উন্নয়নে গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী কর্ম-পরিকল্পনার অংশ হিসেবে লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য আলাদা ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়াও স্টক এক্সচেঞ্জের কারিগরি ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনের আওতায় কৌশলগত বিনিয়োগকারী সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

বাজেটের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বিএসইসিকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ (ডিএসই ও সিএসই), মার্চেন্ট ব্যাংক‍ার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ সব কয়টি প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠনগুলো বিনিয়োগকারী এবং বাজারকে গতিশীল রাখতে একগুচ্ছ প্রস্তাব দেওয়া হয়।

প্রস্তাবনা গুলো হচ্ছে- আগামী তিন বছর স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া, করমুক্ত লভ্যাংশ আয় ২৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকায় উন্নীত করা এবং কোম্পানির কর্পোরেট করহারের ব্যবধান কমপক্ষে আরও ১০ শতাংশে বৃদ্ধিসহ বিশেষ প্রণোদনা রাখা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৭
এমএফআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।