ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সালতামামি

ফরিদপুর ২০১৩: হেফাজত তাণ্ডবে শুরু, কাদের দাফনে শেষ

রেজাউল করিম বিপুল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৪
ফরিদপুর ২০১৩: হেফাজত তাণ্ডবে শুরু, কাদের দাফনে শেষ ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফরিদপুর: শাহ ফরিদ, হাজী শরিয়াতুল্লাহ, তিতুমীর, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানসহ বিখ্যাত মনীষী ও পদ্মানদী বিধৌত সোনার বাংলার এক শান্ত নগরীর নাম ফরিদপুর।

এই শান্ত ফরিদপুরকে ২০১৩ সালে ৬ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা তাণ্ডব চালিয়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে।



সেদিন ফরিদপুরের ভাঙ্গা বিশ্বরোড় এলাকায় ঢাকায় লংমার্চে যাওয়ার পথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় হেফাজত নেতাকর্মীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নওশের খানকে পিটিয়ে হত্যা করে।

ওই ঘটনার পর থেকে ফরিদপুরে দেশের চলমান রাজনীতির সঙ্গে উত্তাপ ছড়ায়।  

বাংলাদেশের প্রথম কোনো সাংবাদিক হত্যার বিচার কার্য সম্পন্ন হয় ফরিদপুরে কর্মরত থাকা দৈনিক সমকালের সাংবাদিক গৌতম দাস হত্যা মামলার।

গত ২৭ জুন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক শাহেদ নুরউদ্দিন গৌতম হত্যা মামলার নয় আসামির সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।  

গৌতমের স্বজন ও সহকর্মীরা এ রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও দেশে সাংবাদিক হত্যা মামলার কোনো প্রথম রায় হিসেবে এটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

গত ২৭ অক্টোবর ১৮ দলের হরতাল কর্মসূচি চলাকালে ফরিদপুরের নগরকান্দায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী ও স্থানীয় আখের রস বিক্রেতা মারুফ শেখ। ওই দিন সকালে বিএনপি নগরকান্দা বাজারে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করলে পুলিশ বাধা দেয়।

এ সময় সংঘর্ষ শুরু হলে একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে মারা যান মারুফ। পরে বিক্ষুব্ধ হরতাল সমর্থকের সঙ্গে দিনভর পুলিশের সংঘর্ষ চলে। রাস্তার পাশের গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করেন। সংর্ঘষে বহু মানুষ আহত হন।

গত ৩০ নভেম্বর ফরিদপুর শহরতলীর চরআদমপুর এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বসে ককটেল বানানোর সময় নিজের হাতের মধ্যে বিষ্ফোরিত হলে নিহত হন জিল্লুর নামে এক যুবক।

তার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায়। ধারণা করা হয়, নাশকতার জন্য সেখানে ককটেল তৈরি করা হচ্ছিল।

গত ১ ডিসেম্বর রাতে ফরিদপুর শহরের হরিসভা এলাকায় ট্রাক নিয়ে শহরতলীর বাইতুল আমান এলাকায় বাড়ি ফেরার পথে অবরোধ সমর্থকদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হন চালক মেহেদী হাসান।

গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ ডিসেম্বর সকালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি।

সর্বশেষ, গত ১৩ ডিসেম্বর ভোর রাতে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আমীরাবাদ গ্রামের নিজ বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হয় মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির রায় কার্যকর করা জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার।

ঢাকায় ১২ ডিসেম্বর রাত ১০ টা ১ মিনিটে ফাঁসির রায় কার্যকরের পর রাত ৩টা ১০ মিনিটে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তার মরদেহ ফরিদপুরে আনা হয়। পরে ভোররাতে জানাজা শেষে আব্দুল কাদের মোল্লার নিজ বাড়ির আঙিনায় তার দাফন সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৪
সম্পাদনা: আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।