ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

হে খোদা, আমাদের বিনীত জীবন দান করুন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৮
হে খোদা, আমাদের বিনীত জীবন দান করুন হে খোদা, আমাদের বিনীত জীবন দান করুন

মানব সৃষ্টির মৌলিক উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর ইবাদত। আর ইবাদতের দাবি হচ্ছে মানুষ পৃথিবীতে আসার পর থেকে সকাল-সন্ধ্যা জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর ইবাদতে কাটাবে। কারণ আল্লাহতায়ালা বলেছেন, মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন এই শর্তে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত (সুরা তাওবা-১১১)। আল্লাহ মহান জান্নাতের বিনিময় আমাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন।

এই জীবন যেহেতু আমাদের নয়, আবার আমাদের সৃষ্টিও করেছেন আল্লাহ তার ইবাদতের জন্য। এ অবস্থায় আল্লাহ যদি বলতেন, তোমরা শুধু আমার ইবাদত-বন্দেগি ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতে পারবে না।

আয়-উপার্জন, পানাহার কিছুই করা যাবে না, তাহলে তো এটা খুবই যৌক্তিক ছিল। কিন্তু দয়াময় মাবুদ আমাদের জীবন ও সম্পদ কেনার পরও তা আবার আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।  

বলেছেন, নাও তোমার জীবন তুমিই ব্যবহার করো, তবে এটা ওটা করো, সেটা কোরো না বলে একটি নির্দেশ আরোপ করে দিয়েছেন।

আল্লাহও জানতেন যে, বান্দা যখন জীবন ও সম্পদের পেছনে ছুটবে তখন তার অন্তর পাপের কালো পর্দায় ঢেকে যাবে। সে ভুলে যাবে তার জীবনের উদ্দেশ্য, সে ভুলে বসবে এই জীবন যে তার নয় এটাও।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বান্দাকে তার জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্যে ফিরিয়ে নিতে দান করেছেন রমজান।  

সুফিদের মতে, বান্দা যদি রমজানে আল্লাহর রাসুলের একটি হাদিসের ওপর আমল করতে পারে তাহলে সে তার জীবনের মৌলিক উদ্দেশ্য সাধনে শতভাগ সফল হতে পারবে।

হাদিসটি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, চারটি গুণ এমন রয়েছে, যদি তা তোমাদের মধ্যে এসে যায় তাহলে তুমি দুনিয়ার কোনো নেয়ামত না পেলেও তোমার কোনো দুঃখ হওয়া উচিত নয়। এ চারটি গুণ হলো- এক. আমানত সংরক্ষণ করা দুই. সত্য কথা বলা তিন. সচ্চরিত্র অবলম্বন করা চার. পবিত্র খাবার গ্রহণ করা।  

কোরআন-হাদিসে বারবার আমানত সংরক্ষণের প্রতি বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোরআনের ভাষায়, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের আমানতগুলোকে তার প্রাপকের কাছে দিয়ে দিতে নির্দেশ করেছেন (সুরা নিসা)।  

হাদিসে পাকে আল্লাহ আমানতের খেয়ানতকে মুনাফিকের চরিত্র বলে আখ্যায়িত করেছেন। অর্থাৎ এটি এমন গুণ যা পালন না করলে প্রকৃত মুসলমান হওয়া যায় না। মিথ্যাবাদীর ওপর আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের অভিশাপ রয়েছে। একটি জাতির ধ্বংসের জন্য একজনের একটি মিথ্যা কথাই যথেষ্ট।  

সচ্চরিত্র হচ্ছে মুমিনের পোশাক। আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন, আমি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছি চারিত্রিক সৌন্দর্যের চূড়ান্ত বিকাশের জন্য।

হারাম খাদ্য বর্জন করতে হবে (বুখারি)। হাদিসে এসেছে, যে হারাম খায় তার কোনো ইবাদত কবুল হয় না। হাদিসটির প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সুন্দর ও সঠিক পথে পরিচালনা করার যাবতীয় উপকরণ রয়েছে এতে।  

রমজান মাস যেহেতু সাধনার মাস, সিয়াম সাধনার পাশাপাশি আমরা যদি এই চারটি গুণ সাধনা করে অর্জন করতে পারি তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিশ্চয় আমাদের সঠিক পথের সন্ধান দেবেন। আমাদের ক্ষমা আর মুক্তির সনদে সম্মানিত করবেন।

আসুন এবারের সিয়াম থেকেই সেই প্রতিজ্ঞা করি। জীবনভর আমরা হালাল উপার্জন করবো ও হারাম পথ বর্জন করবো। হে আল্লাহ আমাদের জীবন সহজ করে দিন।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৫ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৮

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।