ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

আল্লাহর গুণ অর্জন করা যায় রমজানে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৬ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
আল্লাহর গুণ অর্জন করা যায় রমজানে আল্লাহর গুণ অর্জন করা যায় রমজানে

আল্লাহর রঙে রঙিন হওয়ার মাস রমজান। তোমরা আল্লাহর রঙে রঙিন হও! আল্লাহর রঙ অপেক্ষা চমৎকার আর কোনো রঙ হতে পারে? (সুরা বাকারা-১৩৮) নবীজী (সা.) বলেছেন, তোমরা আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হও। সিয়াম ও কিয়ামের মাসের প্রথম দশকের সপ্তমদিন পেরিয়ে আমরা আজ অষ্টম দিবসে পড়েছি। আজ রহমতের অষ্টমদিন।

হে আল্লাহর রঙ-পিয়াসী বান্দা! নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখুন আপনি কতটা আল্লাহর রঙ ধারণ করতে পেরেছেন! কতটা অর্জন করতে পেরেছেন আল্লাহর গুণ? আল্লাহর রঙ বা গুণ কী? আল্লাহর রঙ বা গুণ হল আল্লাহতায়ালার ৯৯টি গুণবাচক নাম।

এ প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে এসেছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহতায়ালার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, যারা এগুলো আত্মস্থ করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।

(মুসলিম ও তিরমিজি)। মহান আল্লাহর পবিত্র গুণবাচক নামগুলো আত্মস্থ করার বা ধারণ করার অর্থ হল সেগুলোর ভাব ও গুণ অর্জন করা এবং সেসব গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য নিজের কাজে-কর্মে, আচরণে প্রকাশ করা, তথা নিজেকে সেসব গুণের আধার বা অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা।

রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন যেহেতু রহমতের বা দয়ার, সুতরাং এই  দিনগুলোতে আমাদের করণীয় হবে আল্লাহপাকের দয়ামায়া সংক্রান্ত নামসমূহের জ্ঞান হৃদয়ঙ্গম করে এর ভাব-প্রভাব ও বৈশিষ্ট্য অর্জন করার চেষ্টা করা। আজীবন আল্লাহর রঙের ধারক-বাহক হয়ে তা অন্যের জন্য বিতরণ করার দৃপ্তশপথ নেওয়া। আল্লাহর গুণাবলী বা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়াই তো রমজানের আহ্বান। আল্লাহতায়ালার রহমতের নামগুলো হলো- আর রহমানু-অসীম দয়ালু, আর রহিমু-পরম করুণাময়, আল ওয়াদূদু-প্রেমময়, আর রঊফু-স্নেহশীল, আল আজিজু-মমতাময়, আল কারিমু-অনুগ্রহকারী, আস সালামু-শান্তিদাতা, আল মুমিনু-নিরাপত্তাদাতা, আল মুহাইমিনু-রক্ষাকর্তা, আল বাসিতু-করুণা বিস্তারকারী, আল মুইজজু-সম্মানদাতা, আল লাতিফু-করুণাকারী, আল মুজিবু-প্রার্থনা কবুলকারী, আর রাজ্জাকু-রিজিকদানকারী, আল ওয়াসিউ-দয়া প্রসারকারী, আল ওয়ালিয়্যু-পরম বন্ধু, আন নাফিউ-কল্যাণকারী, আল হাদিউ-পথের দিশারী, আন নাসিরু-সাহায্যকারী, আল হান্নানু-করুণাশীল, আল মান্নানু-দয়ার্দ্র ইত্যাদি।

অতএব, আমাদের উচিত হবে রহমতের এই মাসে মাওলার এই বিশেষ গুণাবলী অর্জনে সচেষ্ট হওয়া এবং জীবন চলার প্রতিটি পদক্ষেপে তার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটানো। হাদিস শরিফে রয়েছে, তুমি পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া কর, তবে আল্লাহ তোমার প্রতি দয়া করবেন। (বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি)।

আপনি দয়া বা রহমত লাভ করেছেন তা তখনই বুঝা যাবে যখন আপনার আচার-আচরণে দয়া ও করুণা প্রকাশ পাবে। সমস্যায় জর্জরিত আজকের পৃথিবীতে দয়া ও করুণার বড়ই অভাব। অশান্ত পৃথিবীর এই বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিকে শান্ত করতে পারে পারস্পরিক দয়া অনুগ্রহ ও করুণা।

রহমতের এই মোবারক দিনগুলোতে আমরা যদি দয়া ও অনুগ্রহের চর্চা করতে পারি, আমরা যদি রঙিন হতে পারি আল্লাহর রঙে তা হলে নিঃসন্দেহে সেই দিন খুব কাছেই যে দিন পৃথিবী পরিণত হবে সুখময় জান্নাতের টুকরায়। এবারের সিয়াম সাধনায় সূচনা হোক নতুন দিনের। পৃথিবী ভরে উঠুক আল্লাহর রঙের মানুষে।

লেখক: বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।