ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

সাংবাদিক রোজিনার মুক্তির দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবাদ সমাবেশ

তোফাজ্জল লিটন, নিউ ইয়র্ক থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২১
সাংবাদিক রোজিনার মুক্তির দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবাদ সমাবেশ

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ওপর হামলা, হেনস্তা ও মামলার প্রতিবাদে এবং তার মুত্তির দাবিতে যুক্তরাষ্টে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। নিউইয়র্ক নগরীর জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

সমাবেশে নিউইয়র্কসহ আশেপাশের নগরী থেকে লেখক, সাংবাদিক এবং জনসমাজের প্রতিনিধিরা যোগ দেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাংবাদিক রোজিনাকে হয়রানির ঘটনায় বাংলাদেশে সাংবাদিকতার কণ্ঠ চেপে ধরার প্রয়াসের নগ্ন বাস্তবতা উঠে এসেছে। এ ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছে। রোজিনা ইসলামকে যারা হেনস্তা করেছে, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে ও বিচার করতে হবে। অনতিবিলম্বে রোজিনা ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।  

ডাইভারসিটি প্লাজার সমাবেশে বাংলা ও ইংরেজিতে হাতে লেখা পোস্টার নিয়ে চল্লিশ জনের অধিক মানুষ সমবেত হন। অন্যান্য দেশের সচেতন নাগরিকদেরও সংহতি জানাতে দেখা যায়।  

প্রতিবাদ সমাবেশের শুরুতেই বক্তব্য দেন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক, লেখক-সাংবাদিক ইব্রাহীম চৌধুরী। দেশের একজন সাংবাদিকের ওপর নিপীড়নের প্রতিবাদে দেশে ও  প্রবাসী জনসমাজের প্রতিক্রিয়া এবং প্রতিবাদে নেমে আসার জন্য তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

প্রবীণ সাংবাদিক, সাপ্তাহিক পরিচয় পত্রিকার সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেন, ওয়াশিংটন পোস্টসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে রোজিনা ইসলামকে গ্রেফতার ও হেনস্তা করা নিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা দেশের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করেছে। এ নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে এবং রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও হয়রানি করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।  

আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহম্মদ সাঈদ বলেন, গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ বাকস্বাধীনতা। আজকে আমদের টুঁটি চেপে ধরা হচ্ছে। প্রবাসী সাংবাদিকদের মতো দেশের সাংবাদিকরা যদি এখনই সংঘবদ্ধ না হন, তাহলে এমন ঘটনা বারবার ঘটবে।  

বাংলদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী শেখ আখতারুজ্জামান বলেন, রোজিনা ইসলামের নামে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তার সারমর্ম দেখলেই ধারনা পাওয়া যায় এ মামলা বিদ্বেষপ্রসূত। এ মামলার কোনো ভিত্তি নেই।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কলামিস্ট সুব্রত বিশ্বাস বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে একের এক এমন ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে আজ সত্য জানার এবং জানানোর সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

চলচ্চিত্র নির্মাতা রওশন আরা নিপা বলেন, রাষ্ট্রের একজন কর্মচারী যেভাবে একজন সাংবাদিকের ওপর শারীরিক নির্যাতন করেছেন তা ন্যক্কারজনক। সরকার তাদের শক্ত হাতে দমন করতে না পারলে দেশের গণতন্ত্রের সর্বনাশ হবে।  

সাংবাদিক মনিজা রহমান রহমান বলেন, রোজিনা আমাদের সহকর্মীই শুধু নয়, আজ সারা বাংলাদেশের সব সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম হয়ে উঠেছে। তার ওপর হামলা মানে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ওপর হামলা ।

লেখক রওশন হক বলেন, রোজিনা ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের চিহ্নিত লুটেরাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ডাইভার্সিটি প্লাজার সমাবেশে কিছুক্ষণ পরপর রোজিনা ইসলামে মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়। অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে লেখক সাংবাদিক ও জনসমাজের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।  

প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন লেখক সাংবাদিক শামিম আল আমীন , সাপ্তাহিক বর্ণমালা সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, এফ এফ এম মিসবাউজ্জামান, নিহার সিদ্দিকী, শহীদুল ইসলাম, শাখাওয়াত হোসেন সেলিম, এম বি তুষার, এইচ বি রিতা, গোপাল স্যান্যাল,  বিশ্বজিত সাহা, রোকেয়া দীপা,  মনজুরুল হক, শিরিল হাসান, জাকির হোসেন বাচ্চু, শামীম আহমেদ, আব্দুশ শহীদ , ইমাম কাজী কাইয়্যুম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২১
নিউজ ডেস্ক 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।