ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

ইফতার ও তারাবিতে বিদ্যুৎ থাকছে না রাজশাহীতে! 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২২
ইফতার ও তারাবিতে বিদ্যুৎ থাকছে না রাজশাহীতে! 

রাজশাহী: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের রমজান মাসে ইফতার, তারাবি নামাজ ও সাহরির সময় লোডশেডিং না দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও রাজশাহীতে রমজানের প্রথম দিন থেকে লোডশেডিং বেড়েছে। বিশেষ করে ইফতারের আগে অথবা পরপরই প্রতিটি এলাকায় এক থেকে দুই বার লোডশেডিং হচ্ছে।

 

ঘন ঘন লোডশেডিং ও দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ মানুষকে দুঃসহ গরমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আর ইফতার ও তারাবিতে বিদ্যুৎ না পেয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।

উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) দাবি, গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহীতে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে। রাজশাহী জেলায় চাহিদার বিপরীতে এখন বিদ্যুতের ঘাটতি প্রায় ৩৬ শতাংশ। আর রাজশাহী বিভাগে এই ঘাটতি পরিমাণ ১৫ শতাংশ। বিদ্যুত ঘাটতি সামাল দিতে নেসকো কর্তৃপক্ষকে এলাকা ভেদে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
 
মহানগরের পদ্মা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও ব্যাংক কর্মকর্তা লাভলু চৌধুরী বলেন, গত তিন দিন থেকে হঠাৎ করেই লোডশেডিং বেড়েছে। রমজান মাসে এমন অবস্থায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একদিকে লোডশেডিং অন্যদিকে তীব্র গরম। দীর্ঘক্ষণ মসজিদের তারাবির নামাজ আদায় করা মুসল্লিদের এতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।  

অটোরিকশাচালক শাহাবুদ্দীন আহমদ বলেন, সারাদিন রিকশা চালিয়ে ইফতারের আগে বাড়িতে ফিরে দেখি বিদ্যুৎ নেই। কয়েকদিন থেকে প্রতিদিন ইফতারের পর প্রায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এই গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় সাহরি ও ইফতার আরামে খেতে পারছি না। সেসঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিং ও গরমে রাতে ঠিকভাবে ঘুমাতেও সমস্যা হচ্ছে।  

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান বলেন, গ্রাহক টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ কিনে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাবে না সেটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। শহর থেকে গ্রাম সবক্ষেত্রে মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রত্যাশা করছে সবাই। এখন রমজান মাস তার ওপর তীব্র গরম, এ সময় বিদ্যুৎ না থাকাটা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।

এদিকে রাজশাহী থাকা নেসকোর কর্মকর্তারা বলছেন, গরমের জন্য বাড়িতে বাড়িতে এসি চলছে। এছাড়াও সন্ধ্যায় পর নামাজের জন্য মসজিদগুলোতেও চালানো হয় এসি। আবার খরা মৌসুম হওয়ায় সেচ কাজেও বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। আর সন্ধ্যার পর হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চার্জে বসানো হয়। এসব কারণে এখন বিদ্যুতে ঘাটতি বেড়েছে।

নেসকোর বিতরণ অঞ্চল রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ৯৮ মেগাওয়াট। এই চাহিদার বিপরীতে নেসকো বিদ্যুতের সরবরাহ পাচ্ছে মাত্র ৬৩ মেগাওয়াট। আবার মহানগরীতে বিদ্যুতের চাহিদা রমজানে সবচেয়ে বেশি।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় মোট ৪৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলেছে ৩৯০ মেগাওয়াট।

চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে সরবরাহের তুলনায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ায় বাধ্য হয়েই রাজশাহীতে লোড ম্যানেজমেন্ট করতে হচ্ছে বলে জানান ওই শীর্ষ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২২
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।