ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন সাড়ে ৭% বৃদ্ধির দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২
জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন সাড়ে ৭% বৃদ্ধির দাবি ছবি: শাকিল আহমেদ 

ঢাকা: জ্বালানি তেলের বিক্রয় কমিশন সাড়ে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা না হলে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের সব ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলনে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কর্তৃপক্ষ একক সিদ্ধান্তে বিবেচনাহীনভাবে জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন নির্ধারণ করেছে, যা লিটার প্রতি মাত্র ২০ পয়সা বৃদ্ধি করে। যেখানে আমরা জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির অনেক আগে থেকেই বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি, সর্বোপরি ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিতে জ্বালানি তেল বিক্রয়ের ওপর কমিশন ১.৬০ টাকা বৃদ্ধি করার জন্য দাবি করে আসছি।

তারা বলে, এই দাবি চলাকালে সরকার ২০২১ সালে ৪ নভেম্বর ডিজেলের মূল্য এযাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করলেও জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের জন্য কোনো ধরনের কমিশন বৃদ্ধি করেননি।  

সংবাদ সমম্মেলনে বলা হয়, চলতি বছর ৬ জানুয়ারি বিপিসির ডাকা মিটিংয়ে আমাদের একটি সম্মানজনক কমিশনের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বিপিসি ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের প্রতি চরম উদাসীনতা দেখিয়েছে। জ্বালানি তেল বিক্রয়ে তাদের লােকসান ঠেকাতে লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে। অথচ যাদের মাধ্যমে এই পুরাে তেল বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তাদের ব্যবসার প্রতি বিন্দুমাত্র সুবিচার করা হয়নি। ফলে সকল জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেন।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পই প্রতিদিন গড়ে ২০০০ লিটারের নিচে ডিজেল বিক্রি করে থাকে। ফলে ২০ পয়সা দিয়ে গড়ে তাদের মাসিক ১২ হাজার টাকা আয় বৃদ্ধি পায়। যা দিয়ে অতিরিক্ত মূলধন বিনিয়োগ এবং সব বৃদ্ধি পাওয়া খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি সব বিভাগীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় তেল উত্তোলন, বিপণন ও পরিবহন বন্ধের মতো কর্মসূচি ঘোষণা রেখে কঠোর কর্মবিরতি পালনের করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।  

সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল বলেন, বর্তমান কোভিডের কারণে আমরাও ব্যবসায়িক দিক দিয়ে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। ইদানিং ফিলিং স্টেশনের ওপর আরোপিত বিভিন্ন সংস্থার অমীমাংসিত লাইসেন্স গ্রহণের ব্যাপারে হয়রানি শুরু হয়েছে। সঙ্গে বিপুল অঙ্কের টাকা (অফিস খরচ হিসেবে) তারা দাবি করছে, যা আমাদের কমিশনের সীমিত আয় দিয়ে প্রদান করা সম্ভব না।

এ সময় বেশ কিছু দাবি-দাওয়া পেশ করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে, জ্বালানি তেল বিক্রয়ের প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ করা; জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী কমিশন অ্যাজেন্টের বিষয়গুলো গেজেট আকারে প্রকাশ করা; সড়ক ও জানপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশ দ্বারের ভূমির জনা ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল করা; ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতীত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা; মালিক কর্তৃক প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে টাংক-লরী শ্রমিকদের পাঁচ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বিমা প্রথা চালু করার জন্য বিমা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা এবং  প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সব জ্বালানি ডিপো সংলগ্ন ট্যাংক-লরী শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নিশ্চিত করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম ডিস্ট্রিবিউটরস অ্যাজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রতন, সিনিয়র সহসভাপতি এম এ মোমিন, সহসভাপতি আব্দুল আওয়াল জ্যোতি, মাহবুবুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব শেখ ফরহাদসহ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২
এইচএমএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।