ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

আলোর নিচে অন্ধকার মগবান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
আলোর নিচে অন্ধকার মগবান মগবানের ওপর দিয়ে যাওয়া এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা হয় কাপ্তাই ও রাঙামাটি সদর উপজেলায়। ছবি-বাংলানিউজ

রাঙামাটি: রাঙামাটি সদর গঠিত হয়েছে ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে। এ ছয় ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটির বাসিন্দা অনেক আগে থেকে বিদ্যুতের সুবিধা পেলেও মগবান ইউনিয়নের বাসিন্দারা এখনও রয়েছে অন্ধকারে। 

ইউনিয়নটির সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে অনেক আগেই। সড়ক পথে এ ইউনিয়নের সঙ্গে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী উপজেলা কাপ্তাইয়ের দূরত্ব মাত্র ১১ কিলোমিটারের মতো।

অথচ এ এলাকার বাসিন্দারা এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ সুবিধা পায়নি।

বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার মতো সব সুবিধা রয়েছে এ ইউনিয়নে। স্থানীয়রাও অর্থনৈতিকভাবে বেশ স্বাবলম্বী। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে  এখনও বিদ্যুৎ আসেনি এখানে।  

কাপ্তাই হ্রদের চারপাশ ঘিরে মগবান ইউনিয়নটি গড়ে উঠেছে। এখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। ইউনিয়নটির পথ মারিয়ে কাপ্তাই উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরে যাতায়াত করা যায় খুব সহজে।

এ ইউনিয়নটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার মূল কারণ হলো- এখানে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে কয়েকটি খাবার হোটেল ও কটেজ। এর মধ্যে বড়াদম, বেড়াইন্ন্যা রেস্টুরেন্ট অন্যতম। একদিকে কাপ্তাই হ্রদ, অন্যদিকে পাহাড়, সব কিছু মিলে অসাধারণ। তাই প্রতিদিন এ এলাকায় হাজার খানেক পর্যটকের সমাগম  ঘটছে। অথচ বিদ্যুৎ না থাকায় বিশাল এ জনবসতির জীবন-যাপন থমকে যাচ্ছে। এখানে বিদ্যুৎ না থাকাটা পর্যটকদের কাছেও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ইউনিয়নে পর্যটন সম্ভবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। বিদ্যুৎ এলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। আর তাতে পর্যটন ভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হয়ে উঠবে মগবান।

স্থানীয় বাসিন্দা সবিতা চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা রাঙামাটি সদরের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও স্বাধীনতার এতোদিন পরও বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।  

ওই ইউনিয়নের বড়াদম এলাকার বাসিন্দা মিন্টু চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের আক্ষেপের শেষ নেই। বিলাইছড়ি উপজেলার মতো দুর্গম উপজেলায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে অথচ আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। বিষয়টি দুঃখজনক। মগবানের একটি পর্যটন স্পট।  ছবি-বাংলানিউজ

আরেক বাসিন্দা শষী চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে আমাদের এলাকাটি পর্যটন এলাকা হিসেবে সারাদেশে আলাদা ভাবে সুখ্যাতি পেয়েছে। একদিকে, পাহাড়ি পথ, অন্যদিকে কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ নীল জলধারা। মগবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ওপর ভিত্তি করে স্থানীয় অনেকে পাহাড়ি ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে রেস্টুরেন্ট গড়ে তুলেছে। গড়ে উঠেছে ব্যক্তি উদ্যোগের কটেজও। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই সরকারের কাছে আবেদন, বিদ্যুৎ দিয়ে আমাদের অন্ধকার এলাকা আলোকিত করুক।

এ বিষয়ে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ওই এলাকার বাসিন্দা অরুন কান্তি চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল- মগবান ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান। বিদ্যুতের দাবিতে অনেক আন্দোলন করেছি। বিদ্যুৎ না থাকার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, কৃষিকাজ, পর্যটন শিল্প বিকাশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, আমাদের এলাকাকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে। আশাকরি, আমাদের দীর্ঘ বছরের আন্দোলন এবার সফল হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।