ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

স্কাউটরা সোস্যাল পুলিশ হিসেবে কাজ করতে পারে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৪
স্কাউটরা সোস্যাল পুলিশ হিসেবে কাজ করতে পারে

ঢাকা: বিদ্যুৎ সাশ্রয় নিশ্চিত করতে স্কাউটরা ‘সোস্যাল পুলিশ’ হিসেবে কাজ করতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রোববার রাজধানীর বিদ্যুৎভবনে স্কাউটদের জন্য আয়োজিত টিওটি’র (ট্রেনিং অব ট্রেইনার্স) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ মত দেন।



প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে সন্ধ্যায় বিদ্যুতের ব্যবহার বেশি হয়। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশে দিনের বেলা চাহিদা বেশি। এ থেকে বুঝতে হবে, আমাদের আবাসিক খাতে বিদ্যুতের ব্যবহার বেশি। সে কারণে আবাসিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো। আর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হতে চাই। আর এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে একে আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।

এই আন্দোলনকে স্কাউটরাই সফল করতে পারেন বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

বিদ্যুৎ সপ্তাহ উপলক্ষে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্কাউটরা দেশব্যাপী ছয় শতাধিক ক্যাম্প পরিচালনা করবে। এতে ৪০ হাজার স্কাউট সদস্য অংশ নেবে। আর যারা এদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করবেন, তাদের প্রশিক্ষণ (ট্রেনিং) দেওয়া হয় বিদ্যুৎভবনে। শনি ও রোববার দুটি ব্যাচে ৩৬০ জন প্রশিক্ষক অংশ নেন।

এদিকে, প্রশিক্ষকরা মাঠ পর্যায়ে উপদল নেতাদের প্রশিক্ষণ দেবেন। তারা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পেইন পরিচালনা করবেন।

প্রশিক্ষকদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আপনারা যে ক্যাম্পিং করছেন, সেখান থেকে কী ফলাফল হচ্ছে, সে বিষয়টিও মূল্যায়ন করতে হবে। সেরা দলনেতা ও সেরা দলকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, সৌর বিদ্যুতে আমাদের গ্রামের লোকজনের অনীহা দেখা যায়। এ জন্য তাদের সচেতন করতে পারেন। এ ছাড়া সৌরবিদ্যুতে ব্যবহৃত ব্যাটারি রি-সাইক্লিং করার বিষয়ে জনগণকে উদ্বৃদ্ধ করতে হবে।
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ৩৩ লাখ সোলার হোম সিস্টেম রয়েছে। তার অর্থ হচ্ছে, ৩৩ লাখ ব্যাটারি রয়েছে। অনেকে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেলে পানিতে ফেলে দিচ্ছেন। এতে পরিবেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সে কারণে ব্যাটারি রি-সাইক্লিং করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, স্কাউটরা তথ্য সংগ্রহে ভূমিকা রাখতে পারে। বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মাঠ পর্যায়ে সেবার তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। স্কাউটরা গ্রামে গিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে তথ্য নেবে। তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন কিনা বা সেবার মান নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা, তাদের এই সব তথ্য সরাসরি বিদ্যুৎ বিভাগে চলে আসবে। আর বিদ্যুৎ বিভাগ মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

এতে জবাবদিহিতা বাড়বে বলে মনে করেন নসরুল হামিদ।

স্কাউটদের বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন, দেশের খনিজ সম্পদ ও তার ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব আবুল কালাম আজাদ।

তিনি বলেন, বিগত বছরে যে সব স্কাউট সদস্য এই ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছিলেন, এবার তাদের না নিয়ে অন্যদের নিতে হবে; যাতে করে এই কর্মসূচিতে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারে।

তিনি বলেন, বয়স্ক লোকের মাধ্যমে প্রচারণার চেয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি কর্মসূচিতে বেশি সুফল পাওয়া যায়। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা যেন স্কুলের অ্যাসেম্বিলিতে বক্তৃতা দেয়। সন্তানরা বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বললে তা অনেক বেশি কার্যকর হয়।

তিনি বলেন, দেশে ১৪ লাখ স্কাউট রয়েছে। তাদের ব্যবহার করায় এই কর্মসূচি অনেক সফল হবে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম, বাংলাদেশ স্কাউটের নির্বাহী পরিচালক মুজিবুর রহমান মান্নান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।