ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

চীনের টিভি কোরিয়ার বলে চালাচ্ছে রহিম আফরোজ

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৩
চীনের টিভি কোরিয়ার বলে চালাচ্ছে রহিম আফরোজ

ঢাকা: চীন থেকে নিম্ন মানের টিভি এনে কোরিয়ার বলে চালানোর অভিযোগ উঠেছে রহিম আফরোজ ইলেকট্রনিক্সের বিরুদ্ধে। এসব নিম্নমানের টিভি এখন গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রাহকদের।



রহিম আফরোজের গ্রাহক হয়রানির খবর বাংলানিউজে প্রকাশের পর কোম্পানিটির একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন।

রহিম আফরোজ কোরিয়ার DAEWOO কোম্পানির বলে যে টিভি বাজারজাত করছে, সেই DAEWOO ইলেকট্রনিক্স ২০১০ সালে ৫২ কোটি ৯০ লাখ ইউএস ডলারে বিক্রি হয়ে যায় ইরানি কোম্পানি ইন্তেখাবের কাছে। ইন্তেখাবের কাছ থেকে চলতি বছরে ২৭ কোটি ডলারের সমুদয় শেয়ার কিনে নিয়েছে কোরিয়ান কোম্পানি ডংবু।

রহিম আফরোজের ওই কর্মী দাবি করেছে, মূলত চীন থেকে টিভি এনে DAEWOO বলে চালানো হচ্ছে। তারাও বিষয়টি আগে থেকেই অবগত। কিন্তু তাদের করার কিছুই নেই। কোম্পানির টপ টু বটম পর্যন্ত এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। অতি মুনাফালোভী মানসিকতার কারণেই তারা এমনটি করছে।

রহিম আফরোজের এক প্রবীণ কর্মী জানান, রহিম আফরোজের প্রতিষ্ঠাতা আবদুর রহিম ১৯৮২ সালে মারা গেলে নীতি-নৈতিকতারও অপমৃত্যু হয়। ছেলেরা ব্যবসায় নেমেই রাতারাতি টাকার পাহাড় গড়তে চাচ্ছেন। আর এ কারণে তরতরিয়ে তাদের ব্যবসা বাড়লেও এরই মধ্যে সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে ব্যাপক মাত্রায়।

অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, টিভি আমদানি করার সময় কাস্টমস বিভাগে ৩২ ইঞ্চিকে ২৮ ইঞ্চি দেখিয়ে ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে। একইভাবে অন্যান্য মাপের টিভির ক্ষেত্রেও পরিমাপ কম দেখানোর অভিযোগ রয়েছে।

কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশেই এই জালিয়াতি করা হয়েছে। রহিম আফরোজের আমদানি ও বিক্রয় রেজিস্ট্রার মেলালেই এই রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে বলেও দাবি করেছেন এক বিক্রয় কর্মী।

এদিকে, দেশের প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটি বিরুদ্ধে আরও নানা রকম জালিয়াতির অভিযোগ উঠছে। তাদের অন্যতম ব্যবসা ব্যাটারি খাতে জালিয়াতির খবর পাওয়া গেছে। কাস্টমস বিভাগ থেকে নিলামে ব্যাটারি কিনে নিজেদের লোগো লাগিয়ে বাজারে ছাড়ছে কোম্পানিটি।

যে কারণে রহিম আফরোজের লুকাস ব্যাটারি বিক্রি করতে গিয়ে বিপণন কর্মকর্তা ও ডিলাররা হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিনিয়ত আসছে নানা রকম অভিযোগ। এসব অভিযোগের নিষ্পত্তি না করার জন্য বিধি-নিষেধ আরোপ রয়েছে। যে কারণে বেশ কিছু বিপণন কর্মকর্তা রহিম আফরোজের চাকরি ছেড়ে দিয়েছে।

লুকাস ব্যাটারির শতাধিক ডিলার হ্যামকোর ডিলারশিপের জন্য আবেদন করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

রহিম আফরোজের ব্যাটারি নিয়ে নানা রকম অভিযোগ আসার কথা শিকার করেন কাকরাইল এলাকার ডিলার হাসিনা মোটরস। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইপিএস ও ব্যাটারি সরবরাহের সময় নিম্ন মানের ব্যাটারি সরবরাহ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৫৪ সালে আব্দুর রহিমের হাত ধরে চট্টগ্রামে রহিম আফরোজ গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৮০ সালে যুক্ত হয় ব্যাটারি ব্যবসা। ১৯৮২ সালে আবদুর রহিম মারা গেলে ব্যবসার হাল ধরেন তিন সন্তান আফরোজ রহিম, ফিরোজ রহিম ও নিয়াজ রহিম। বর্তমানে রহিম আফরোজ গ্রুপের বহরে রয়েছে ৯টি প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৩
ইএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।