ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

লোডশেডিংয়ে বিপাকে বোরো চাষীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৩
লোডশেডিংয়ে বিপাকে বোরো চাষীরা

ঢাকা: গ্রীষ্মের শুরুতেই লোডশেডিংয়ের কবলে দিশেহারা দেশবাসী। খোদ রাজধানীতেই চলছে দফায় দফায় লোডশেডিং।

দেশের অনেক স্থানে ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে।

শুক্রবার ছুটির দিনেও থেমে নেই লোডশেডিং। স্বাভাবিকভাবে ছুটির দিনগুলোতে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে, যে কারণে লোডশেডিং হয় তুলনামূলকভাবে কম।
 
কিন্তু রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকার বাসিন্দা নিয়ামুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবার ফজরের আজানের পরপরই শুরু হয় লোডশেডিং। এক ঘণ্টার ব্যবধানে বিদ্যুৎ এলেও আবার ৯টার দিকে চলে যায়। এরপর আবার ১১টার দিকে চলে যায়।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা বশির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ‘কয়েকদিন ধরেই মাঝ রাতেও লোডশেডিং হচ্ছে। আর দিনের বেলা লোডশেডিং হচ্ছে কয়েক দফায়।

এ ছাড়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মিরপুর ও কল্যাণপুর এলাকা থেকেও লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে।

লোডশেডিংয়ের কারণে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন বোরো চাষীরা। দিনের বেলা লোডশেডিং থাকায় রাত জেগে জমিতে পানি সেচ দিতে হচ্ছে তাদের। তবে অনেকে রাতের বেলা পানি সেচ শেষ করতে পারছেন না। সারা দিন বিদ্যুতের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে তাদের।

রংপুরের বোরো চাষী শাহানুর ইসলাম লেলিন বলেন,  “সরকারি হিসাব বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। ”

তিনি দাবি করেন, কৃষি বিভাগ থেকে বলা হয় রাতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা। কিন্তু শুধু রাতে পানি সেচ দিয়ে শেষ করা যায় না। তার এলাকায় একটি ৫ হর্সের সেচ পাম্প দিয়ে ১৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫ একর জমিতে সেচ দেওয়া যায়। প্রতি দুই দিন পর সেচ দিতে হয়।

সে হিসেবে একটি ৫ হর্সের সেচ পাম্প দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১১ একর জমিতে সেচ দেওয়া যায়। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলেও দাবি করেন এই বোরো চাষী।
 
কিন্তু সেচ পাম্প মালিকরা সাধারণত বেশি মুনাফার আশায় ১৫ থেকে ২০ একর জমি নেন স্কিমে। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন দরিদ্র বর্গা চাষীরা। তাদের বাধ্য হয়েই নির্ভর করতে হয় অন্য সেচ পাম্প মালিকদের ওপর।

 সেচ পাম্প মালিকরা প্রথমে তাদের নিজেদের জমিতে পানি সেচ দেন। এরপর অন্যদের জমিতে পানি দেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন বর্গাচাষীরা।

তিনি জানান, দিনে ৬ থেকে ৭ বার লোডশেডিং হচ্ছে।   এ অবস্থায় অনেক স্কিমে সমস্যা হচ্ছে।  

বাংলানিউজের দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দিনাজপুর শহরে দিনে ৩ থেকে ৪ বার লোডশেডিং হচ্ছে। একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে আসে সোয়া ঘণ্টা পর।

উত্তরাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত দিনাজপুর জেলার পল্লীগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। সেখানে দিনে ৭ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মূলত খরচ সাশ্রয় করতে তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র কম চালানো হচ্ছে। যে কারণে লোডশেডিং বেড়েছে। তবে সরকার চাইলে যে কোনো সময় লোডশেডিং বন্ধ করতে তারা সক্ষম।

বর্তমানে দেশে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। তবে বৃহস্পতিবার অফ পিক (রাত ১১ থেকে বিকেলে ৫টা) সর্বোচ্চ উৎপাদন করা হয়েছে ৪ হাজার ২২৮ মেগাওয়াট। আর পিক আওয়ারে (বিকেলে ৫টা থেকে রাত ১১টা) সর্বোচ্চ উৎপাদন করা হয়েছে ৫ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৩
ইএস/সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।