ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সোনারগাঁওয়ে নলকূপে গ্যাস: সম্ভাবনা দেখছে বাপেক্স

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১২
সোনারগাঁওয়ে নলকূপে গ্যাস: সম্ভাবনা দেখছে বাপেক্স

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত প্রত্যন্ত চরাঞ্চল মধ্যচরহোগলা গ্রামে নলকূপ থেকে গ্যাস নির্গমনের ঘটনায় সম্ভাবনার আলো দেখছে বাপেক্স (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড)।

সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন, ‘এখানে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ ১ মাস ধরে যেভাবে গ্যাস বের হচ্ছে, তাতে সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে সবকিছুই বলা যাবে পরীক্ষাগারের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পর’।

এদিকে অন্য দিনের মত সোমবারও ঘটনাস্থলে এলাকার শত শত কৌতূহলী মানুষ ভিড় করে।

সোমবার বাপেক্সের ব্যবস্থাপক (জিওলজি) রেজাউল হালিম ও একই বিভাগের ডেপুটি ব্যবস্থাপক নাতিফুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত ২ সদস্যের টিম সোনারগাঁও উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের মধ্যচরহোগলা গ্রামের রব ইসলামের বাড়িতে পাওয়া গ্যাসের নলকূপটি পরিদর্শন করেন।

এসময় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সরকার দলীয় এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১২টা হতে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন।

বাপেক্সের দলটি নলকূপ থেকে ২ বোতল গ্যাস সংগ্রহ করে। এছাড়া তারা ঘটনাস্থলের বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখেন ও আলামত সংগ্রহ করেন। এছাড়া তারা বাড়ির মালিক রব ইসলামের সঙ্গেও কথা বলেন।

পরে বাপেক্সের এ দুই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, সংগ্রহকৃত ২ বোতল গ্যাস পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। সেখানে চূড়ান্ত পরীক্ষার পর বলা যাবে প্রকৃত বিষয়। এটা প্রাকৃতিক গ্যাস কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে পুরো বিষয়টিকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

তারা জানান, মাটির নিচে এমনিতে গ্যাস জমা থাকলে সচরাচর তা কিছুদিন পর শেষ হয় যায়। কিন্তু যেহেতু ১ মাস ধরে অবিরত গ্যাস বের হচ্ছে, তাই এখানে গ্যাস পাওয়ার বিষয়টিকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

তারা আরও জানান, পরীক্ষাগারে যদি প্রমাণিত হয়, এটা প্রাকৃতিক গ্যাস তখন ভূ তাত্ত্বিক জরিপের পর ড্রিল করা হবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এছাড়া নিরাপত্তার জন্য যে নলকূপটি হতে গ্যাস নির্গমন হচ্ছে, তার চারদিকে সিমেন্টের পাকা দেয়াল নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসময় গ্যাস নির্গমনের মাথায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে গ্যাসের চাপ বেড়ে গেলে তা বুঝা যাবে। তাছাড়া যদি অল্প গ্যাস জমা থাকে তাহলে আগুন ধরানো থাকলে তা শেষ হয়ে যাবে।

বাপেক্সের এ দুই কর্মকর্তা আরও জানান, নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলেও এ ধরনের গ্যাস পাওয়া গেছে। সেখানে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ড্রিল করা হবে।

শম্ভুপুরা ইউনিয়নের মধ্যচরহোগলা গ্রামের রব ইসলাম জানান, বছর খানেক আগে তার বাড়িতে একটি নলকূপ স্থাপন করেন। নলকূপটি স্থাপনের পর থেকে পানিতে সব সময় বুদ বুদের শব্দ হয়ে আসছিল। এ বিষয়ে রব ইসলাম তার বাড়িতে নলকূপ স্থাপনকারী কারিগরদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

তারা তাকে নতুন নলকূপ স্থাপন করলে প্রথম প্রথম এমনটা হয় বলে জানায়। ২০-২২ দিন আগে তার নলকূপ থেকে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেলে তা মেরামত করার সময় নলকূপ থেকে গ্যাস নির্গমনের বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তিনি গ্যাসের চুলার মাধ্যমে নির্গত গ্যাস বাড়ির রান্নার কাজে ব্যবহার করতে থাকেন।

প্রতিদিনের মতো গত শনিবার রাতে পরিবারটি ওই গ্যাসে রান্না করার সময় হঠাৎ আগুনের শিখা অনেক উপরে উঠে যায়। এসময় তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১২
সম্পাদনা: রোকনুল ইসলাম কাফী, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।