যশোর: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শুধু পূর্ণ বয়স্করা যুদ্ধ করেনি। সবাই মিলে যুদ্ধ করেছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে যশোর শহরের চাঁচড়া চেকপোস্ট মোড়ে পথসভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
জামায়াতের আমিরের যশোরে আগমণকে ঘিরে যশোর বিমানবন্দর থেকে চাঁচড়া চেকপোস্ট পর্যন্ত ঢল নামে নেতাকর্মীদের। প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখার জন্যই এ ঢল নামে। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি মিষ্টি শীতের শুভেচ্ছা জানিয়ে মাঠে ময়দানে দেখা হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ঢাকা থেকে বিমানযোগে আসা আমিরে জামায়াতকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন যশোর জেলার আমির অধ্যাপক গোলম রসুলের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী।
বিমান থেকে নেমে জামায়াতে ইসলামীর আমির গাড়িতে উঠেন। তিনি বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে নেতাকর্মীদের অভিবাদন জানাতে জানাতে শহরের দিকে রওনা হন। রাস্তায় তিনি প্রথম পথ সভায় বক্তব্য রাখেন স্বৈরাচার হাসিনার পতনের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু যশোর, খুলনা সাতক্ষীরা ও ঝিনাইদহ এ চারটি জেলার সংযোগস্থল চাঁচড়া চেকপোস্ট মোড়ে। এ মোড়ে নতুন মুক্ত বাংলাদেশে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলের মধ্যে কোনো দলীয় প্রধান হিসেবে জামায়াতের আমিরের এটাই প্রথম আগমন।
জামায়াতের আমীর ড. শফিকুর রহমান বলেন,পতিত সরকারের আমলে সবচেয়ে মজলুম দল ছিল জামায়াতে ইসলামী। বিপ্লবের পরেও আমরা উল্লাসে ফেটে পড়েনি। সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলাম। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী নিদেশনা মেনে চলেছেন। দেশের কোনো প্রান্তের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসেনি।
জামায়াতের আমির ড. শফিকুর রহমান বলেন, যারা আমাদের ওপর যারা ফ্যাসিবাদের থাবা বিস্তার করেছিলেন। এক নাগাড়ে সাড়ে ১৫ বছর তাণ্ডব চালিয়েছিলেন। যারা মানুষকে খুন, গুম লুণ্ঠন করেছিলেন, যারা মানুষের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছেন, যারা বাংলাদেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশের মাঠিতে প্রাসাদ তৈরি করেছেন; তাদের আমরা ক্ষমা করবো না। তাদের প্রত্যেকের অপরাধের বিচার করতে হবে। তবে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী সবচেয়ে মজলুম দল। এ দলের শীর্ষ নেতাদের বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল। পরে জামায়াত ও ইসলামী ছাত্র শিবিরকে দেশে থেকে নির্মুল করতে চেয়েছিল। যারা আমাদের নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলো; সৃষ্টিকর্তা কার্যত এ জমিনে তাদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এতে আমাদের কোনো কৃতিত্ব নেই। সমস্ত কৃতিত্ব সৃষ্টিকর্তার। এ জন্য এ বিপ্লব, এ বিজয়ের পর আমরা কোনো উল্লাস করেনি। আমরা দেশবাসী, সহকর্মীকে বিশেষভাবে অনুরাধ করেছিলাম, আপনারা সৃষ্টিকর্তার জন্য সেজদাতে পড়ুন, চোখের পানি দিয়ে আল্লাহকে শুকরিয়া করুন। এ কারণে দেশের কোনো প্রান্তে কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠেনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, সংগঠনের নেতা গোলাম কুদ্দুস, বেলাল হোসাইন, শাহাবুদ্দিন, শামসুজ্জামান ও রেজাউল করিম।
বক্তব্য শেষে সম্প্রতি যশোর শহরের খোলাডাঙ্গা বাজারে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত জামায়াত কর্মী আমিনুর সজলের সন্তানকে বুকে টেনে নেন ডা. শফিকুর রহমান। এরপর দ্বিতীয় পথসভা করেন যশোর বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা বাজার এলাকায়। সবশেষে তিনি পথসভায় বক্তব্য রাখেন শার্শা উপজেলার নাবারণ মোড়ে। সভা শেষে রাতেই তিনি রওনা দেন সাতক্ষীরার উদ্দেশে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২৪
ইউজি/জেএইচ