ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা জনগণ সহজে নেবে না: তারেক রহমান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৪
সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা জনগণ সহজে নেবে না: তারেক রহমান

ঢাকা: জনগণ যা চায় তা অন্তর্বর্তী সরকার এডড্রেস করলে ‘ওত পেতে থাকা স্বৈরাচার’ এর কোনো ষড়যন্ত্রই’ সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।  

তিনি বলেন, স্বৈরাচার পালানোর পর একটি বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

মাফিয়া সরকারের তৈরি করা জঞ্জাল তিন মাসে দূর করা সম্ভব নয়। আবার তিন মাস পরে সরকারের সফলতা/ব্যর্থতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক বা অন্যায্যও নয়। তবে সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা দেখতে পেলে জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে এক টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের এক অনুষ্ঠানে দেশের একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এ মন্তব্য করেন।  

রমনায় জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (জেটেব) এর তৃতীয় জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান হয়। সকালে এ অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। এ কাউন্সিলে কাউন্সিলারদের ভোটে ফখরুল আলমকে সভাপতি ও রুহুল আমিন আকন্দকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, সরকারকে একেবারে ব্যর্থ করে দিতে যে পলাতক স্বৈরাচার ছিল, তার এবং তার দোসরা বসে নেই সেটা দেশের ভেতরেই হোক বা দেশের বাইরে হোক, প্রশাসনের ভেতরে হোক বা দেশের বাইরে হোক এরা কিন্তু ওত পেতে আছে যে, কীভাবে এ অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়া যায়। আমরা মনে করি, সরকারের সঙ্গে জনগণের আস্থা নিবিড় থাকলে তাদের (পলাতক স্বৈরাচার) ষড়যন্ত্রের ডাল-পালা বিস্তারের সুযোগ পাবে না। জনগণ যা চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার যদি সেগুলোকে এডড্রেস করে তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা কোনো সুযোগটা পাবে না, তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।

তিনি বলেন, জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায় নিশ্চিত করা যদি না যায় তাহলে গণতন্ত্র, উন্নয়ন কিংবা সমস্যা আমরা যাই বলছি না কেন কোনোটাই টেকসই হবে না। একজন নাগরিকের রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রথম হাতিয়ার হচ্ছে ভোট প্রয়োগের অধিকার। আজকে আপনারা (টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা) কিন্তু ভোট প্রয়োগ করে নেতা নির্বাচন করেছেন। একইভাবে জনগণ ভোট প্রয়োগের সুযোগ যদি না পায় তাহলে রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকদের যে সম্পর্ক-অংশীদারিত্ব সেই সম্পর্ক-অংশীদারিত্ব কিন্তু সৃষ্টি হয় না। আমরা দেখেছি অন্তর্বতী সরকার নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। জনগণ আশা করছে যে, ইনশাল্লাহ তারা স্বচ্ছ পরিবেশে নির্ভয়ে ভোট দিতে সক্ষম হবে, জনগণ নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে তাদের প্রতিনিধিদের। বিশ্বাসযোগ্য এবং সুনির্দিষ্ট আস্থা পেলে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে জনগণের আস্থার বন্ধন আরও দৃঢ় হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সরকারের অগ্রাধিকার তালিকা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহতরা হাসপাতাল থেকে রাজপথে বেরিয়ে এসেছে., এটি সমগ্র দেশের গণতন্ত্র প্রিয় মানুষের জন্য, সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কেন অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার লিস্টে নেই বা কত নাম্বারে ছিল। এরপরও দেখেন, বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার যে পদক্ষেপটি যে কারণে সমাজের প্রতিটা মানুষ যেকোনো পর্যায় যেকোনো মানুষ, প্রত্যেকটি পরিবার যে কষ্টের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, এ বিষয়টাও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায়োরিটি লিস্টের মধ্যে কত নম্বারে আছে? আমি সব সময় বলেছি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য যে, অন্তর্বর্তী সরকারের সব কাজ হয়ত সবার কাছে সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে না। তবে এ অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা কিন্তু আমাদের সবার ব্যর্থতা গণতন্ত্রকামী স্বাধীনতা প্রিয় মানুষের ব্যর্থতা।  

তিনি বলেন, এমন একটা পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত তারা জনআকাঙ্ক্ষা সেটার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করতে বোধহয় চাইছে না। বরং তারা যেটা ভালো মনে করছে সেটাই হয়ত চাপিয়ে দিতে চাইছে। এ অপ্রাপ্তি থাকার পরেও জনগণ কিন্তু এখনো এ সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে চায়, তারা আস্থা হারাতে চাইছে না। তবে একটা প্রশ্ন উঠছে সরকার কি উল্টো জনগণের সঙ্গে আস্থা রাখতে চায়? 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তার দলের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সেটি হচ্ছে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের, গণতান্ত্রিক সমাজের সেটি বাস্তবায়িত করতে আমাদের যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলো দূর করতে হবে। নির্বাচন কেন্দ্রিক যে সমস্যাগুলো আছে এগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। আমি আশা করবো আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা, আমাদের নির্বাচন কেন্দ্রিক প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা এগুলো সংস্কার করেই আমাদের অতিদ্রুত নির্বাচনে যাওয়াটাই হবে এদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে কল্যাণের।

জেটেবের সভাপতি ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারসহ টেক্সটাইল প্রকৌশলী নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৪
টিএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।