ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে: এ্যানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২৪
অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে: এ্যানি

লক্ষ্মীপুর: বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, তারেক জিয়া জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি এনে দিয়েছেন। এ পরিস্থিতি বজায় রাখতে হলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।

সেই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে দেশে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।

শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা শহরের ঝুমুরের ইলিশ চত্বরে গণমিছিল শেষে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন এ্যানি।

এর আগে বিকেলে জেলা বিএনপির আয়োজনে লক্ষ্মীপুরে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। র‌্যালিটি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পুরাতন গোহাটার বাসভবন থেকে শুরু হয়ে চকবাজার-উত্তর তেমুহনী হয়ে ঝুমুর ইলিশ চত্বরে গিয়ে মিলিত হয়। এতে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেয়।  

শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি করেন এ্যানি বলেন, বিগত ১৬-১৭ বছর শেখ হাসিনার যে দুঃশাসন দেখেছেন। স্বাধীনতার পর ৭২ সালে তার পিতার নেতৃত্বে এ দুঃশাসন ছিল, দুর্নীতি ছিল, অত্যাচার ছিল, নির্যাতন ছিল, খুনখারাবি ছিল, গুম-খুন ছিল। বাপ-আর বেটির মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। বাবাও পালিয়েছে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেশে ছিলেন না। আর ৫ আগস্ট পালিয়েছেন হাসিনা। পালিয়ে গেলেও, ষড়যন্ত্র পালায়নি। তারা যে টাকা লুটপাট করেছে, বিদেশে পাচার করেছে। বাহিরে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।  

সবাই মিলে জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকার গঠন করার কথা জানিয়ে এ্যানি বলেন, ৫ আগস্ট আমরা রাস্তায় নেমে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, এখনও আমাদেরকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সজাগ ও সতর্কতার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী ও মজবুত করতে হবে। তারেক রহমান শুধু এককভাবে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে আন্দোলন করেননি। দেশ রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছে। জনগণকে রক্ষার আন্দোলন করেছে।  

জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি বলা হয় জানিয়ে বিএনপি নেতা এ্যানি বলেন, আমরা জিয়াউর রহমানের রাজনীতি করি। তার আদর্শ ধারণ করি। বাংলাদেশে আধুনিক রাজনীতির জন্য জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি বলা হয়। জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভীতকে মজবুত করেছেন, শক্তিশালী করেছেন।  

তিনি বলেন, জনগণের চেতনা এবং অনুভূতিকে ধারণ করতে হবে। জনগণ মনে করছে এখনই দেশে নির্বাচন প্রয়োজন। খুব অল্প ও যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র আমাদের ওপর আবার আঘাত করতে পারে। এটি দেশের মানুষের জন্য কঠিন বিপদ হতে পারে। অপশক্তি যদি ছোবল মারে, তাহলে গণতন্ত্রের ভিত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন সংস্কারে নভেম্বর-ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এ তিন মাসের বেশি লাগার কথা নয়। সংস্কার শেষে অবিলম্বে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের প্রত্যাশা ও গণতন্ত্রের ভিত মজবুত হবে। আমরা যদি এ মুহূর্তে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা না করতে পারি, তাহলে পাশের দেশে বসে এখনও হাসিনা ফ্যাসিস্টরা যে ষড়যন্ত্র করছে তাতে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে।

এ্যানি আরও বলেন, ১৭ বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। দেশকে গড়ার জন্য যদি আরও ২-৩ বছর অপেক্ষা করতে হয়, দেশের ভিতকে শক্তিশালী করার জন্য, গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করার জন্য। সেই ত্যাগ স্বীকার করতেও আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। টেন্ডারবাজি আমাদের চাওয়া পাওয়া নয়। সন্ত্রাস আমাদের চাওয়া পাওয়া নয়। লুটপাট আমাদের চাওয়া পাওয়া হতে পারে না।  

আওয়ামী লীগ যে পথে হাঁটছে, বিএনপি সেই পথে হাঁটতে পারে না। কারণ আমরা জনগণের প্রত্যাশাকে, জনগণের চেতনাকে ধারণ করি।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান, সদ্য নিজাম উদ্দিন ভুঁইয়া, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, বিএনপি নেতা শাহ মোহাম্মদ এমরান, কামরুজ্জামান সোহেল, রায়পুর পৌরসভার সাবেক মেয়র এবিএম জিলানী, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সাবেরা আনোয়ারসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।