ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

হরতালে রিজভীর সঙ্গে ৮ জন, বিএনপির দৈন্যদশার বর্ণনায় শামীম ওসমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২৩
হরতালে রিজভীর সঙ্গে ৮ জন, বিএনপির দৈন্যদশার বর্ণনায় শামীম ওসমান সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বুধবার বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে আওয়ামী লীগের এক সভায় বক্তব্য রাখেন। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির ‘দৈন্যদশা’ তুলে ধরে বলেছেন, দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব (রুহুল কবির রিজভী) আসেন হরতাল করতে, সঙ্গে আটজন। পাগলও যদি দাঁড়িয়ে কথা বলে, সেটা শুনতে ১০ জনের বেশি লোক হবে।

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ উপলক্ষে বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভায় শামীম ওসমান এ কথা বলেন।  

তিনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রিজভী আহমেদ নারায়ণগঞ্জে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি কোথায় আছেন আমি জানি। উনি মাসদাইরে আছেন। শুরু থেকেই আমি জানি। শুধু দেখতে চেয়েছি ওদের সাংগঠনিক ক্ষমতা কতটুকু। আমি লজ্জিত হলাম, এদের সঙ্গে খেলবো কীভাবে? ছাত্রলীগ তো খেলবে না। মহিলা লীগও তো বলবে না।

শামীম ওসমান আরও বলেন, রিজভী সাহেব কেন্দ্রীয় নেতা, আট-নয়জন লোক নিয়ে টায়ারে আগুন লাগিয়ে হরতালের উদ্বোধন ঘোষণা করলেন। অবরোধের দিনও আমরা জানি উনি কোথা দিয়ে বের হবেন। সেদিন বুঝেছিলেন তাদের অবস্থা খারাপ, তাই শিবিরের ক্যাডার নিয়ে আমাদের ইয়াসিন ভাইয়ের পেট্রোল পাম্পের পাশের গলিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর প্ল্যান ছিল। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ অত্যন্ত যোগ্যতা ও ধৈর্য্যের সঙ্গে এগুলো লক্ষ্য রাখছে। সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাও আছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুর ভয় করেন না এবং তিনি শুধু আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখেন উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ষড়যন্ত্র আরেকটু হবে। আমি বলেছি ওরা নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসবে। কেউ ওদের ডেকে নিয়ে আসবে না। ওদের চরিত্র মানুষের কাছে প্রকাশ হয়ে গেছে। পশ্চিমাদের সুর নরম, এখন বলে শর্ত ছাড়া আলোচনায় বসো।

আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, আমরা একটানা ১৪ বছর ক্ষমতায়। আমরা চ্যালেঞ্জ করতে পারি, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সালে ওরা যা নির্যাতন করেছে—সিদ্ধিরগঞ্জের এক এমপি ছিল পল্টিবাজ, আমাদের ১৭ জন লোককে হত্যা করেছিল। তৈমূর সাহেবের ভাই সাব্বিরকেও মেরেছিল। ওদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মতিন চৌধুরীর গাড়িতে হামলা করেছিল। আমাদের কী অবস্থা ছিল বুঝুন। আমাদের নেতা-কর্মীরা দেশে থাকতে পারেনি। আমার বাড়ি হীরামহলের দরজা ভেঙে মূত্রত্যাগ করা হয়েছিল। হীরামহল ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। আমার ভাইয়ের খামারে হাঁসের গলা কেটে ছেড়ে দিয়েছিল। রাইফেল ক্লাব ভাঙচুর করা হয়েছিল। সেদিন এই কায়সারের বাবা প্রথম হুংকার দিয়েছিলেন, আমরা মরিনি। এ ছিল সেসময়ের পরিস্থিতি।  

বিএনপির আন্দোলনে মানুষ হত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ওরা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। আমি এক-দেড় বছর আগেই বলেছিলাম এমন হবে। ঢাকায় একটা মিটিং হলো। একটা আমাদের, একটা ওদের। আমাদেরটা ওদের চেয়ে বড় ছিল। সারা দেশের নেতা-কর্মী নিয়েও ওদের মিটিং আমাদের চেয়ে ছোট ছিল। সরকারি দল হিসেবে আমাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবেই। আমরা হামলা করিনি। ওরা গিয়ে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করলো। পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেললো। ওদের ছাত্রদলের এক নেতা মৃত মানুষটাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে। সরকারি পুলিশকে এভাবে কুপিয়েছে। তার পকেট থেকে মোবাইল মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে।  

অবরোধের প্রথম দিনে আড়াইহাজারে বিএনপির তাণ্ডবের কথা তুলে ধরে শামীম ওসমান বলেন, আড়াইহাজারে পুলিশকে কোপানো হলো। কিছু মানুষ তাকে ভ্যানগাড়িতে তুলে দেয়। তারপরও তাকে মারা হলো। আমি প্রশাসনকে ধন্যবাদ দেই, আপনারা ধৈর্য্য ধরেছেন। ওরা ক্ষমতার ৫২ লাখ কিলোমিটারেও নেই। এখনই মৃত পুলিশকে চাপাতি দিয়ে কোপায়, আর ক্ষমতায় আসলে কী করবে? সাংবাদিকদের মাটিতে ফেলে নির্দয়ভাবে পেটানো হচ্ছে।  

তিনি বলেন, আমরা ধৈর্য্য ধরেছি। আমরা দেখাতে চাই ওরা গণতান্ত্রিক শক্তি নয়। জামায়াত-বিএনপি মিলে এ কাজ করেছে। ওরা ভয় দেখায় কাকে, শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা যেদিন ভয় পাবেন সেদিন দুনিয়া থাকবে না। কালকে সংবাদ সম্মেলনে জবাব পেয়েছেন তো?

শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির এক প্রেসিডেন্ট আছেন; খবর নিয়ে একটু দেখবেন তিনি অন্য কোনো দলে যাচ্ছেন কি না। তৃণমূলে তো যেতে পারবেন না, তৈমূর আলম খন্দকার লাথি দিয়ে বের করে দেবেন। বিএনপির বাচ্চা ছেলেদের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওদের যাবজ্জীবনও হতে পারে। এদের দায় দায়িত্ব কে নেবে?

সভায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মোহাম্মদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২৩
এমআরপি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।