ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সঠিক ইতিহাস জানলে মানুষ বিএনপির মিছিলে যেত না: আমু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
সঠিক ইতিহাস জানলে মানুষ বিএনপির মিছিলে যেত না: আমু

ঢাকা: দীর্ঘ ৩১ বছর বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি। সঠিক ইতিহাস জানলে মানুষ বিএনপি-জামায়াতের মিছিলে যেত না, জনসমাগম হতো না।

সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি বলেই নতুন প্রজন্মের একাংশ আজ পথভ্রষ্ট, বিপথগামী। এসব কথা বলেছেন বলেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে নগর ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বলেছিলেন,  রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমি অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে না পারি। অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার জন্য যখন তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই তাকে হত্যা করা হলো।  

তিনি বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হলো না। যদি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানত, তাহলে বিএনপির মিছিলে লোক যেত না। ছাত্রদল কেউ করত না। যুবদল করার প্রশ্নই আসত না। জামায়াতে ইসলামের আয়োজনে জনসমাগম হতো না। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলবে, এমন আয়োজনে জনসমাগম হওয়ার কথা নয়।  

তিনি আরও বলেন, ২১ আর ১০, মোট ৩১ বছর পাকিস্তানের ২৩ বছরে ইতিহাস পড়ানো হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি, বুঝতে দেওয়া হয়নি। কীভাবে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করলো, তা জানতে দেওয়া হয়নি। তাই আমাদের দেশে নতুন প্রজন্মের একাংশ পথভ্রষ্ট, বিপথগামী।

আমু বলেন, স্বাধীনতাকে যারা সহ্য করতে পারেনি, সেই স্বাধীনতার যারা পরাজিত শক্তি, তারা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে একটি প্রতিবিপ্লব সংগঠিত করল। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার অপরাধে সেদিন জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্বংশ করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত পূর্ণতা পেয়েছিল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন। তার সন্তান তারেক রহমান আমার প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। আল্লাহর রহমতে পারেননি।

তিনি বলেন, কমিশনের মাধ্যমে খুনি জিয়াউর রহমান, খুনি মোস্তাকসহ নেপথ্যে যারা জড়িত তাদের সবার মুখোশ উন্মোচন করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদের বিচারের আওতায় আনতে এবং যারা ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের মরণোত্তার বিচার করতে হবে।  

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, জিয়াউর রহমানের সব কর্মকাণ্ডই ছিল প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির পক্ষে। তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী। তিনি রাজাকার, আল বদর, আল শামসদের পুনর্বাসন করেছেন। তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের রক্ত রঞ্জিত পতাকা উঠিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন, মন্ত্রী বানিয়েছেন, তিনি হত্যাকারী, খুনিদের পুনর্বাসন করেছেন। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের পদোন্নতি দিয়েছেন, পদায়ন করেছেন, নিরাপত্তা দিয়েছেন।  

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সংবিধান ভূলুণ্ঠিত করেছেন। সংবিধান কাটা-ছেঁড়া করেছেন। পঞ্চম সংশোধনী করে হত্যাকারীদের বিচারের আওতার বাইরে রেখেছেন। এভাবে তিনি আইনের শাসন ভূলুণ্ঠিত করেছেন। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, হত্যা করেছেন। তার সব কর্মকাণ্ড ৪৮ বছর ধরে বিশ্লেষণ করলে এটিই প্রতীয়মান হয় যে, খুনি জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের নেপথ্যের প্রধান কুশীলব, নেপথ্যের প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারী।

তাপস বলেন, আমরা জানি, জিয়াউর রহমান মার্শাল ল আদালতে নিরীহ-নিষ্পাপ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছেন, বহু মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদের হত্যা করেছেন। নিরীহ সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করেছেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের মার্শাল লয়ের আওতায় আনেননি, বরং খুনীদের বিভিন্নভাবে পুরষ্কৃত করা হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, সংসদ সদস্যদের মধ্যে ঢাকা-৫ এর কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, সংরক্ষিত আসনের জিন্নাতুল বাকিয়া ও করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
এইচএমএস/আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।