ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

সমস্যা হয়নি তো! সাবধানে থেকো

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৫
সমস্যা হয়নি তো! সাবধানে থেকো

২০১১ সালের মে মাসে যোগদান করেছি বাংলানিউজে। এরপর কতো যে আবেগ, অনুভূতি ভালোলাগা-ভালোবাসা জড়িয়ে গেলো এর সঙ্গে।

কখনও মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। সংঘর্ষের রিপোর্ট করতে গিয়ে কয়েকবার কিল-ঘুষি, ঢিল, ককটেল খেয়েছি। শুধু গুলি খাওয়াটা বাকি। এই জিনিসটা মিষ্টি না-কি তেতো তা পরখ করা হলো না।
 
শুধু কি ভালোলাগা-ভালোবাসা। কত রকম শিক্ষা তার ইয়ত্তা নেই। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জিনিস শিখছি। এই তো সেদিন, সাপ্তাহিক মিটিংয়ে এক রিপোর্টার বললেন, পল্টনে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলি চলছে। সঙ্গে সঙ্গে এডিটর ইন চিফ (আলমগীর হোসেন)বলে ‌উঠলেন, গোলা-গুলি নয়। রাইফেলের ‘গোলা’ হয় না। কামানের কার্তুজকে ‘গোলা’ বলা হয়। এখানে নিশ্চয়ই কামান ব্যবহার হচ্ছে না। ’
 
এর আগে আমি নিজেও জানতাম গোলাগুলি। অনেক জাতীয় পত্রিকায় শিরোনাম দেখি পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময়। আর তখনই মনে পড়ে সেই শিক্ষার কথা। এ রকম কত শিক্ষা গ্রহণ করেছি।
 
ডিউটি করছিলাম হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে। সারাদিনে কমপক্ষে আট দশবার ফোন দিয়ে খবর নিয়েছেন স্বয়ং এডিটর ইন চিফ। বলেছেন সাবধানে নিরাপদে থেকো সিরাজ। সন্ধ্যায় যখন প্রথম দফায় পুলিশি অভিযান শুরু হয়, তখন মুহুর্মূহু গুলি আর সা‌উন্ড গ্রেনেডের শব্দে বুক কেঁপে উঠছিলো। তখন কতক্ষণ পরপর ফোন দিতেন। মতিঝিলে তখন হেফাজতের তাণ্ডব চলছিল।
 
এডিটর ইন চিফ ফোন দিয়ে উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন, সিরাজ পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। সমস্যা মনে করলে শাপলা চত্বর থেকে নিরাপদ দূরত্বে যাও। তার এই ভালোবাসা দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে দিয়েছিলো। এ রকম অনেক ঘটনা স্মৃতির পাতায় জ্বল জ্বল করছে।
 
স্পট থেকে রিপোর্ট দিচ্ছি সংঘর্ষের। মুহূর্তেই এডিটর ইন চিফের ফোন। তোমার কোন সমস্যা হয়নি তো! নিরাপদে সাবধানে থেকো। অনেক সময় মধ্যরাতে ভয়ে ভয়ে এসএমএস দিয়েছি সঙ্গে সঙ্গে কলব্যাক করে পরামর্শ দিয়েছেন। এ রকম অনেক সুখানুভূতি রয়েছে বাংলানিউজে কাজ করার।
 
আমার ১৪ বছরের রিপোর্টিংয়ে সাভার-আশুলিয়ায় ভয়ঙ্কর রূপ দেখেছি। এই দু’টি এলাকায় একেবারেই ভিন্ন চরিত্র। এখানে সাংবাদিক দেখলেই তার উপর হামলে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। শ্রমিকদের ধারণা, সাংবাদিকরা নিউজ লেখে। আর তা দেখে শাস্তি দেয় গার্মেন্টস মালিকরা।
 
সেখানে পুলিশের শেল্টারে থেকে রিপোর্টিং করতে হয়। আমি প্রথমবার যখন গেছি কোন ধারণা ছিল না। শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলতে বলতে যেই নোটবুক বের করেছি, আর যায় কোথায়! এমন অনেকবার বেকায়দায় পড়ে কিলঘুষি সহ্য করতে হয়েছে। ককটেলে আহত হয়েছি অনেকবার।  
 
নিউজ মেইল দিয়েছি এডিটর ইন চিফকে। কয়েক মুহূর্ত পরেই হয়তো রিপ্লাই দিয়েছেন। গুড রিপোর্টিং। আবার কখনও ঢাকার বাইরে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে দেখলাম বাংলানিউজ প্রতিনিধিকে ফোন দিয়ে হোটেল বুকিং দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর কতশত সুখানুভূতি। তা-কি একপৃষ্ঠায় লেখা যায়!
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৫
এসআই/জেডএম

** সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পরিবেশনে বাংলানিউজ অনন্য

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।