ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৪
ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান দাবি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নিউইয়র্ক: মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত শাস্তির বিধান রেখে সংসদে আইন পাসের দাবি জানিয়েছে ‍যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে অবিলম্বে ইতিহাস বিকৃতিকারীদের বিচার দাবি করেছে সংগঠনটি।

পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃতির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির সামনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে হাজির করে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করে সরাসরি টেলিভিশন ও রেডিওতে সম্প্রচারের দাবি জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে (মিট দ্য প্রেস) এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী। প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হাওয়া ভবনের রাজাখ্যাত দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমান লন্ডনে বসে একের পর এর ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র করে চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়ে চলেছেন। তার মা খালেদা জিয়া একই সুরে কোরাস গাইছেন।

মেজর জিয়াউর রহমানকে সাসপেন্ড করে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানী তাকে নজরদারিতে রেখেছিলেন এবং মেজর জিয়া কোনো সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেননি- মর্মে সেক্টর কমান্ডার মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম’র ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’ বইয়ের বক্তব্য উদ্ধৃত করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে বাংলাদেশের সচেতন জনগোষ্ঠীর সামনে ও মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কোটি জীবিত বাঙালির সামনে নির্লজ্জ মিথ্যাচার শুরু করেছে। এমনকি খালেদা জিয়া নিজের পাঁচ পাঁচটি জন্মদিন (৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬-শিক্ষাবোর্ড রেকর্ড, ১৯ আগস্ট ১৯৪৪-বিয়ের কাবিননামা, ১৯ আগস্ট ১৯৪৭-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ অনুষ্ঠানে, ৪ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭-পারিবারিক তথ্য এবং ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সাল-শিক্ষাগত যোগ্যতা) দেখিয়ে মিথ্যাচার অব্যাহত রেখেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, মেজর জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করে কার্যত নিজেকে মূর্খ ও অর্বাচীন হিসেবেই উপস্থাপন করলেন খালেদা জিয়অ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনও নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি না করলেও রাজনীতিতে আবির্ভূত জিয়াপত্নী খালেদা রাতারাতি তাকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে প্রচার করতে শুরু করেছেন। দেশের কোটি তরুণ মুক্তিযুদ্ধের সমৃদ্ধ ও গৌরবোজ্জল ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে একাত্তরের মত ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে আবারও উজ্জীবিত হওয়ায় স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির-হেফাজত ও তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক খালেদা জিয়া এবং দেশের অর্থপাচার ও ফৌজদারী মামলার আসামি তারেক রহমানের মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ায় তারা পাগলের প্রলাপ শুরু করেছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান প্রখ্যাত সাংবাদিক লরেন্স লিফৎশুলজ ও আর্নল্ড জাইটলীনের বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সাম্রাজ্যবাদের দোসর মীরজাফর ও স্বাধীনতাযুদ্ধের পরাজিত শক্তি জামায়াত, নেজামে ইসলাম, মুসলীম লীগ ও তথাকথিত চীনাপন্থি প্রগতিশীল নামধারী একশ্রেণীর বামদের ষড়যন্ত্রে এবং তৎকালীন সেনাবাহিনীর উপপ্রধানের দ্বায়িত্বে থাকা ‘কুচক্রি’ মেজর জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ মদদেই বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়।

আ.লীগ নেতারা বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর, ৭ নভেম্বর, একের পর এক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে খুনি মোশতাক আহমদকে পুতুল হিসেবে বঙ্গভবনে বসিয়ে ক্যান্টনমেন্ট থেকে দাবার গুটি চালাতে থাকেন মূল ষড়যন্ত্রকারী খলনায়ক মেজর জিয়া। তিনি একাধারে স্বঘোষিত সেনাপ্রধান ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে আবির্ভূত হন এবং খুনি মোশতাককে সরিয়ে নিজেকে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত করে সংবিধান স্থগিত করে রাষ্ট্রের ঘাড়ে চেপে বসেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি শুরু করেন। ধ্বংস করেন মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত দলিল পত্র। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তার সরকারের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে বসান। গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে এনে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেন এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে এনে বাঙালির শৌর্য-বীর্যেরে গৌরবোজ্জল মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি শুরু করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নজমুল ইসলাম, আবুল কাশেম, সামছুদ্দিন আজাদ, আব্দুস সামাদ আজাদ, চন্দন দত্ত, অ্যাডভোকেট শাহ বকতিয়ার আলী, আশরাফুজজামান, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মুজাহিদুল ইসলাম, শিরিন আক্তার দীবা, মিসেস শাহানারা রহমান, মিসেস শেফু রহমান, জহিরুল ইসলাম, হোসেন সোহেল রানা, সাইফুল ইসলাম, তারিকুল হায়দার চৌধুরী, কাজী আজিজুল হক খোকন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ